Advertisement
E-Paper

রায়ের পরে দক্ষিণে নয়া জোট-জল্পনা

এই জল্পনার মধ্যেই উঠে এসেছে ডিএমকে-র অন্দরের পরিস্থিতি। উত্তরসূরি হিসেবে ছোট ছেলে স্ট্যালিনকেই দলের দায়িত্ব দিয়েছেন করুণানিধি। এ নিয়ে বড় ছেলে আলাগিরির ক্ষোভকেও পাত্তা দেননি তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:০১
স্বস্তি: টু-জি কেলেঙ্কারি থেকে মুক্তি মিলেছে মেয়ে কানিমোঝির। রায় শোনার পরে ছেলে এম কে স্ট্যালিনের সঙ্গে ডিএমকে প্রধান করুণানিধি। বৃহস্পতিবার চেন্নাইয়ে। ছবি: পিটিআই।

স্বস্তি: টু-জি কেলেঙ্কারি থেকে মুক্তি মিলেছে মেয়ে কানিমোঝির। রায় শোনার পরে ছেলে এম কে স্ট্যালিনের সঙ্গে ডিএমকে প্রধান করুণানিধি। বৃহস্পতিবার চেন্নাইয়ে। ছবি: পিটিআই।

প্রবীণ মানুষটির পাশে বসে অনেক ক্ষণ ধরে তাঁর হাতটি ধরে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ওঠার আগে বলে এসেছিলেন, ‘‘দিল্লিতে আসুন। প্রধানমন্ত্রী নিবাসে রেখেই চিকিৎসা করাব।’’

রাজনীতিতে সৌজন্যের মধ্যেও বার্তা লুকিয়ে থাকে। সদ্য গত মাসেই অসুস্থ করুণানিধিকে দেখতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদীর এমন বেনজির সৌজন্যের পর থেকেই জল্পনা ছড়ায় চেন্নাই থেকে দিল্লি। অন্তর্কলহে মগ্ন এডিএমকে-কে ছেড়ে এ বারে কি ডিএমকে-সঙ্গী হবে বিজেপি? আর আজ প্রয়াত জয়ললিতার আসনে উপনির্বাচনের সকালে টু-জি মামলায় করুণা-কন্যা কানিমোঝি এবং এ রাজার ক্লিনচিটের পর সে জল্পনা আরও মাথাচাড়া দিয়ে উঠল— দূরত্ব কি তা হলে ঘুচল? এখনই না হোক, অন্তত ২০১৯ সালের আগে কি কংগ্রেসকে ছেড়ে বিজেপির দিকেই ঝুঁকতে পারে ডিএমকে?

বিজেপির নেতারা হোন বা স্বয়ং কানিমোঝি— দিনভর এই জল্পনায় জলই ঢাললেন। ডিএমকে সাফ জানাল, তাদের দল কংগ্রেসের সঙ্গে আছে, থাকবে। আর বিজেপির এখন শিরে সংক্রান্তি। মনমোহন সিংহ সরকারের ঘাড়ে ফের কী করে দুর্নীতির অভিযোগ চাপানো যায়, তা নিয়েই ব্যস্ত সকলে। দলের নেতারা জনে জনে বললেন, ডিএমকের সঙ্গে জোটের প্রশ্নই নেই। উচ্চ আদালতে ফের দুর্নীতি প্রমাণ হবে। অন্য দিকে জোট নিয়ে শঙ্কা তৈরি হতেই সক্রিয় রাহুল গাঁধী। ফোন করলেন কানিমোঝিকে। তাঁর বাড়িতে পাঠালেন গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মাকে।

কংগ্রেসের সক্রিয়তা দেখে বিজেপি বলছে, মনমোহন সিংহ নিজের দায় ঝেড়ে ডিএমকের ঘাড়েই দুর্নীতি চাপিয়ে দিয়েছিলেন। সংসদ চত্বরে দাঁড়িয়ে এক মোদী-মন্ত্রী বললেন, ‘‘আজ মনমোহন সিংহ দুর্নীতির দায় ঝেড়ে ফেলার কৃতিত্ব নিচ্ছেন। কিন্তু টু-জি কাণ্ডের সময় তিনিই বলেছিলেন, জোটের বাধ্যবাধকতায় অনেক কিছু হজম করতে হয়। ডিএমকে নিশ্চয়ই জানে, কার আমলে তাঁরা ফেঁসেছেন, জেলে গিয়েছেন, আর কখন তাঁরা কলুষমুক্ত হলেন!’’

এই জল্পনার মধ্যেই উঠে এসেছে ডিএমকে-র অন্দরের পরিস্থিতি। উত্তরসূরি হিসেবে ছোট ছেলে স্ট্যালিনকেই দলের দায়িত্ব দিয়েছেন করুণানিধি। এ নিয়ে বড় ছেলে আলাগিরির ক্ষোভকেও পাত্তা দেননি তিনি। স্ট্যালিনের সঙ্গে কানিমোঝির সম্পর্ক এমনিতে ভাল না। করুণানিধি যদি ছেলে-মেয়ের মধ্যে ঝামেলা মিটিয়ে দিতে পারেন, তা হলে সুবিধা বিজেপির। কিন্তু তা না হলে পারিবারিক কলহে দীর্ণ দলের সঙ্গে বোঝাপড়ায় তারা কতটা আগ্রহী হবে, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

আরও পড়ুন: ডাহা ফেল ইডি-সিবিআই, মুখ পুড়ল মোদী সরকারের

বিজেপি অবশ্য বলছে, এখন তাদের মূল লক্ষ্য রাজা-কানিম‌োঝিদের ফের দোষী সাব্যস্ত করা। না হলে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণের অস্ত্রটাই যে ভোঁতা হয়ে যাবে! তাই এখনই তারা ডিএমকে-র সঙ্গে যাবে, এমনটা নয়। তবে লোকসভা ভোট এগিয়ে এলে কী হবে, সেই প্রশ্নে সকলেই নীরব।

বিজেপির মতিগতি দেখে আম আদমি পার্টির সঞ্জয় সিংহ এ দিন প্রশ্নটি তুলে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘মোদী-করণানিধি বৈঠকের সঙ্গে আজকের রায়ের কোনও যোগ নেই তো? সিবিআই কি তোতাপাখিই রইল?’’ বিরোধীদের একাংশের বক্তব্য, কানিমোঝি বা রাজা তো শুধু নন, একাধিক কর্পোরেট সংস্থাও আদালত থেকে ছাড় পেল। দুর্নীতির বিরুদ্ধে মোদীর লড়াই মুখেই! এমনিতে মোদীর কড়া সমালোচক প্রশান্ত ভূষণও এ দিনের রায়ের কড়া সমালোচনা করেছেন। এবং বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। টু-জি ‘কেলেঙ্কারি’ নিয়ে দেশজোড়া হইচই, মামলার নেপথ্যে থাকা এই নেতা আজ আদালতের রায়ের পরে শুধু ফুঁসছেন। ক্ষুব্ধ সুব্রহ্মণ্যম এ দিন প্রধানমন্ত্রীকে বিঁধে বলেছেন, সিবিআইয়ের ভাল অফিসার দিয়ে এখনই সমস্ত তথ্যপ্রমাণ ঠিক মতো সাজিয়ে উচ্চ আদালতে লড়তে হবে। না হলে ২০১৯ সালে খেসারত এর দিতে হবে।

2G Scam A Raja টুজি M Kanimozhi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy