তিন বছর পূর্ণ হতে বাকি এখনও মাসখানেক। কিন্তু তার আগেই একটা কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছে খুদে ছেলেটি। নিজের মাথার চুল পুরোপুরি কামিয়ে ফেলানোর কথা ভেবে ফেলেছে সে।
এমনটা তো অনেক মা-বাবাই করেন! নিজের সন্তানের মাথার চুল কাটিয়ে দেন। তবে নয়াদিল্লির মীর দেব এমনটা করেছে তাঁর প্রয়াত ঠাকুমার কথা ভেবে।
মীর দেবের এই সিদ্ধান্তের কারণটা জানিয়েছে তার পরিবার। ক্যানসার কেড়ে নিয়েছিল মীরের ঠাকুমাকে। ঠাকুমার মতো অজস্র ক্যানসার রোগীর কথা ভেবেই স্বাধীনতা দিবসের এক দিন আগে, গত ১৪ অগস্ট নিজের চুল দান করেছে সে। কারণ, ক্যানসার চিকিৎসায় কেমোথেরাপি শুরুর পর থেকেই সমস্ত চুল পড়ে যায় রোগীদের।
আরও পড়ুন
'আপনার স্বাধীনতা দিবস কবে?' টুইটারে খোঁচার সপাটে জবাব সানিয়া মির্জার
ক্যানসার রোগীর পরচুলা তৈরির কাজে লাগানো হবে মীরের দান করা চুল। দীর্ঘ দিন ধরেই এ বিষয়ে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে ‘হেয়ার ফর হোপ’ নামে এক সংস্থা। ইতিমধ্যেই মীরের চুল সংগ্রহ করেছে তারা। ওই সংস্থার দাবি, ক্যানসার রোগীদের জন্য নিজের চুল দান করা বিশ্বের সবচেয়ে কমবয়সি হল মীর।
আরও পড়ুন
দেশপ্রেমে মুগ্ধ দেশ, সেই হায়দর এখন নিজেই দেশহীন
শুধুমাত্র মীর নয়, ক্যানসার আক্রান্তদের পরচুলা তৈরির জন্য বহু মানুষই নিজের চুল কাটিয়ে ফেলছেন। এর মধ্যে বহু মহিলারাও রয়েছেন। চিরাচরিত ভাবে যাঁদের লম্বা চুলে দেখতেই অভ্যস্ত অনেকে। ২০১৩ সালে গড়া ওঠা ওই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা প্রেমী ম্যাথিউ বলেন, “কেশ দানের বিষয়টি এখন বেশ বড়সড় আন্দোলনের আকার নিয়েছে। ক্যানসার আক্রান্ত প্রিয়জনের জন্য বহু পুরুষ এমনটা করছেন। এমনকি সামাজিক বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে মহিলারাও ন্যাড়া হচ্ছেন। এর মধ্যেই কেমোথেরাপি চলছে এমন বহু ক্যানসার আক্রান্তকে পরচুলা দান করা হয়েছে।”
এখনও পর্যন্ত দেশ জুড়ে প্রায় ৬ হাজার মানুষ ক্যানসার আক্রান্তদের জন্য নিজের চুল দান করেছেন। মীর মতো নিজের চুল দান করেছে আট বছরের দিব্যা কপূরও। বছর দুয়েক ধরেই ক্যানসার রোগীদের সঙ্গে সময়ও কাটাতে শুরু করেছে দিব্যা। কেশ দানের বিষয়ে জানার পর তার মাকে সে জানিয়েছিল, নিজের থেকেও ক্যানসার আক্রান্ত কোনও শিশুর চুলের প্রয়োজন। প্রেমী বলেন, “প্রতিটি কেশ দানের পিছনেই এমন কোনও না কোনও কাহিনি রয়েছে।” তাঁর মতে, প্রিয়জনের হারানোর বেদনা ভুলতেই চুল দান করেন অনেকে।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)