Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
ফায়দা ভারতেরও: সিরাম
Covid-19

৩০ কোটি ডোজ় কি এ বছরেই!

গত কালই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজ়েনেকার ওই টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় দফার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের রিপোর্ট বেরিয়েছে ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল ‘দ্য ল্যানসেট’-এ। তাতে বলা হয়েছে, এই ভ্যাকসিন-ক্যান্ডিডেট নিরাপদ এবং কার্যকরী।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২০ ০৪:৪৪
Share: Save:

দেশি-ভ্যাকসিন কবে আসবে ঠিক নেই। কিন্তু চলতি বছরের মধ্যেই অক্সফোর্ডের সম্ভাব্য করোনা-ভ্যাকসিনের অন্তত ৩০ কোটি ডোজ় তাঁরা তৈরি করে ফেলবেন বলে আজ আশ্বাস দিলেন সিরাম ইনস্টিউট অব ইন্ডিয়ার সিইও আদর পুনাওয়ালা। সঙ্গে এ-ও জানালেন, অগস্টের গোড়াতেই যাতে ভারতে ওই প্রতিষেধকের (কোভিশিল্ড) ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করা যায়, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে তার অনুমতি চাইবে সিরাম ইনস্টিটিউট।

গত কালই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজ়েনেকার ওই টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় দফার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের রিপোর্ট বেরিয়েছে ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল ‘দ্য ল্যানসেট’-এ। তাতে বলা হয়েছে, এই ভ্যাকসিন-ক্যান্ডিডেট নিরাপদ এবং কার্যকরী। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজ়েনেকা আগেই ভারতের সবচেয়ে বড় ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থা সিরামকে ১০০ কোটি ডোজ় তৈরির বরাত দিয়েছিল। কাল অক্সফোর্ডের ফলপ্রকাশের পরে সিরাম-কর্তার এই আশ্বাস যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পুনাওয়ালা জানালেন, তাঁদের তৈরি ডোজ়ের অন্তত ৫০ শতাংশ পেতে পারেন দেশবাসী। কিন্তু সে জন্য তো চুক্তি প্রয়োজন! আজ সেই আশ্বাসও মিলল নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বিনোদ কুমার পলের বয়ানে। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বললেন, ‘‘দেশি সংস্থা ভ্যাকসিন তৈরি করলে প্রভূত লাভ হবে ভারতের। সে জন্য অবশ্যই চুক্তি প্রয়োজন। যথাসময়ে তা করা হবে।’’

সিরাম-কর্তা আজ জানান, প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, একটি বুস্টার ডোজ়-সহ প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ় লাগবে। প্রতি ডোজ়ের দাম পড়বে হাজার টাকা। তবে সরকার এই টিকাকরণ জাতীয় প্রয়োজন মনে করলে, তা পোলিয়ো টিকার মতো বিনামূল্যে দেওয়া হতে পারে বলেও জানান পুনাওয়ালা। তাঁর দাবি, প্রথম ধাপে স্বাস্থ্যকর্মী ও বয়স্কদের এই টিকা দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে। দেশের সার্বিক করোনা-টিকাকরণে অন্তত দু’বছর সময় লাগবে বলে মনে করছে সিরাম।

কিন্তু অক্সফোর্ডের গবেষণালব্ধ এই ভ্যাকসিন তো এখনও ফুল-প্রুফ নয়! সবে প্রথম ও দ্বিতীয় দফার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফল বেরিয়েছে। টিকা প্রয়োগের পরে কত দিন তা কার্যকরী থাকছে, ল্যানসেটের রিপোর্টে তা-ও স্পষ্ট নয়। মানুষের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে কোনও রকম তাড়াহুড়ো করতে নারাজ সিরাম। নিজেদের স্বাধীন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের উপর ভরসা রাখার পাশাপাশি তাঁদের সংস্থা অক্সফোর্ডের উপর নজর রাখছে বলেও জানান পুনাওয়ালা।

তবে অক্সফোর্ডের প্রথম ধাপের রিপোর্ট যথেষ্টই স্বস্তিদায়ক বলে মনে করছেন দেশের চিকিৎসক এবং প্রতিষেধক বিশেষজ্ঞ মহলের একটা বড় অংশ। অনেকেই বলছেন, বিশ্ব জুড়ে যে ১৫০টি ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট নিয়ে কাজ চলছে, সেগুলির মধ্যে অক্সফোর্ডের ‘এজ়েডডি-১২২২’ বা ‘চ্যাডক্স-১’ ভ্যাকসিনের রিপোর্টই সবচেয়ে আশাপ্রদ এবং স্বচ্ছ। কাল ল্যানসেটে তাদের যে পরীক্ষা-রিপোর্ট বেরিয়েছে, তাতে ১৮ থেকে ৫৫ বছর বয়সিদের উপর টিকা প্রয়োগ করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে অক্সফোর্ড। এই রেঞ্জটাও যথেষ্ট বিজ্ঞানসম্মত বলে মনে করছেন ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা। অক্সফোর্ডের ট্রায়ালের প্রশংসা করেই ড. লাল প্যাথোলজিক্যাল ল্যাবের এগ‌্জিকিউটিভ ডিরেক্টর অরবিন্দ লাল বলেন, ‘‘সিরামও যে একই সঙ্গে ওই ভ্যাকসিন তৈরি করবে, দেশের পক্ষে তা ভাল খবর। শুধু স্বাস্থ্য খাতে নয়, অর্থনৈতিক ভাবেও।’’ তবে ভ্যাকসিন এলেও, করোনা-মোকাবিলায় সাধারণ স্বাস্থ্য ও দূরত্ববিধি যে মানতেই হবে, তা নিয়েও সতর্ক করলেন চিকিৎসকেরা।

আরও পড়ুন: কোষাগারে টান, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রির উদ্যোগ

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Covid-19 coronavirus Vaccine
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE