Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Indian Economy

কোষাগারে টান, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রির উদ্যোগ

অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে অন্তত তিন থেকে ছয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক, সরকারি বিমা সংস্থা, পেট্রোলিয়াম সংস্থা বিপিসিএল এবং নবরত্ন সংস্থা কনকরের বিলগ্নিকরণের চেষ্টা হবে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২০ ০৪:১৯
Share: Save:

আয় কমছে। ব্যবসায় ভাটার টান। ফলে কর আদায় কমছে সরকারেরও। এই অবস্থায় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণ করে কোষাগারে টাকা তুলতে চাইছে কেন্দ্র। সরকারি সূত্রের খবর, কোন কোন সংস্থার বেসরকারিকরণ হবে, মন্ত্রিসভায় আলোচনার পর জুলাইয়েই তার রূপরেখা ঘোষণা করে দেওয়া হতে পারে। মোদী সরকারের মতে, ঢাকঢোল পিটিয়ে নতুন বিলগ্নিকরণ নীতি ঘোষণা করা গেলে আর্থিক সংস্কারের বার্তা দেওয়া যাবে।

অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে অন্তত তিন থেকে ছয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক, সরকারি বিমা সংস্থা, পেট্রোলিয়াম সংস্থা বিপিসিএল এবং নবরত্ন সংস্থা কনকরের বিলগ্নিকরণের চেষ্টা হবে। চলতি অর্থ বছরে বিলগ্নিকরণ থেকে ২.১ লক্ষ কোটি টাকা ঘরে তোলার লক্ষ্য নিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। বিপিসিএল, কনকর এবং কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অধিকাংশ শেয়ার বেচে তার প্রায় সবটাই উঠে আসবে বলে অর্থ মন্ত্রকের আশা।

লকডাউনের ধাক্কা কাটাতে ‘আত্মনির্ভর প্যাকেজ’ ঘোষণার সময়ই কেন্দ্র জানিয়েছিল, শুধু ‘স্ট্র্যাটেজিক’ ক্ষেত্রে সর্বাধিক চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা থাকবে। বাকি সব রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ধাপে ধাপে বেসরকারিকরণ করা হবে। কিন্তু অর্থনীতির ঝিমুনির মধ্যে বিলগ্নিকরণের মরিয়া চেষ্টা কতটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে, তা নিয়ে অর্থনীতিবিদেরা প্রশ্ন তুলছেন। তাঁদের যুক্তি, প্রথমত, এখন শেয়ার বাজারে তেমন লগ্নির খিদে নেই। ফলে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শেয়ার বেচতে গিয়ে ঠিক দাম মিলবে কি না সন্দেহ। দ্বিতীয়ত, বেসরকারি সংস্থার হাতে নতুন লগ্নির জন্য বিশেষ টাকা নেই। সরকারের উচিত, বেসরকারি সংস্থার হাতে যেটুকু অর্থ রয়েছে, তা সরকারি সংস্থার শেয়ার কেনার বদলে নতুন লগ্নিতে টেনে আনা। তৃতীয়ত, বিলগ্নিকরণ থেকে সরকারের যে আয় হবে, তা মূলত বেতন-পেনশন, পুরনো ঋণে সুদ মেটাতেই খরচ হবে। সরকার সেই টাকা লগ্নি করবে না। তা হলে অর্থনীতির কী লাভ?

আরও পড়ুন: নিশ্চিন্ত থাকা যাবে না কোভিড সেরে গেলেও

কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘প্রথমে লাভজনক সরকারি সংস্থাকে দুর্বল করা হবে। প্রতিযোগিতায় থাকা বেসরকারি সংস্থার ফায়দার জন্য নীতি নেওয়া হবে। সরকারি সংস্থার লোকসান হবে। স্বল্প দামে তা বন্ধু শিল্পপতিদের বেচে দেওয়া হবে। তার পর বলবেন, ৬০ বছরে কী করেছেন!’’

অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, নতুন বিলগ্নিকরণ নীতিতে প্রথম ধাপে পঞ্জাব ও সিন্ধ ব্যাঙ্ক, ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অব মহারাষ্ট্রের অধিকাংশ মালিকানা বিক্রির চেষ্টা হবে। তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থার বিলগ্নিকরণ নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে। অর্থ মন্ত্রকের ধারণা, কোভিডের পরেও অ্যারামকো, পেট্রোনাস-এর মতো বহুজাতিক সংস্থা ভারত পেট্রোলিয়াম বা বিপিসিএল কিনতে আগ্রহ দেখাবে। মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘মোট ১৬টি ক্ষেত্রকে স্ট্র্যাটেজিক হিসেবে ঘোষণা করা হতে পারে। এর মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা রেখে দেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Economy COVID-19 Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE