Advertisement
২১ মে ২০২৪
আতঙ্কিত দিল্লি

ধর্ষণ চার বছরের শিশুকে, দুষ্কৃতী অধরাই

নির্ভয়ার তুলনায় সে খুবই ছোট। কিন্তু সে যে ভয়াবহ আঘাত পেয়েছে, তা মনে করাচ্ছে ২০১২-র ডিসেম্বরের স্মৃতিই। রাজধানীর পথে ধর্ষণের শিকার মাত্র চার বছরের শিশুটির উপরে যে অকথ্য নির্যাতন চালানো হয়েছে, তাতে নির্ভয়ার মতোই তার অন্ত্র, গোপনাঙ্গ ভয়ঙ্কর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৫ ০৪:১৭
Share: Save:

নির্ভয়ার তুলনায় সে খুবই ছোট। কিন্তু সে যে ভয়াবহ আঘাত পেয়েছে, তা মনে করাচ্ছে ২০১২-র ডিসেম্বরের স্মৃতিই।

রাজধানীর পথে ধর্ষণের শিকার মাত্র চার বছরের শিশুটির উপরে যে অকথ্য নির্যাতন চালানো হয়েছে, তাতে নির্ভয়ার মতোই তার অন্ত্র, গোপনাঙ্গ ভয়ঙ্কর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা দেখে শিউরে উঠেছেন চিকিৎসকেরা। দিল্লির মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন মেয়েটিকে সফদরজঙ্গ হাসপাতালে দেখে এসে টুইট করে জানিয়েছেন, ‘‘ওর অবস্থা বর্ণনা করার নয়। ভয়ঙ্কর। ওর বাবা-মা খুব গরিব। এই ধরনের নৃশংস অপরাধ কবে বন্ধ হবে দিল্লিতে?’’

পুলিশ জানিয়েছে, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কেশবপুরম এলাকায় রেললাইনে ঝোপের ধারে ঘটনাটি ঘটেছে। তার পর দু’দিন পার হয়ে গেলেও কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। পুলিশের দাবি, একশোরও বেশি লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু এখনও বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে মেয়েটির পরিবারের দাবি, পুলিশের কাছে রাহুল নামে এক ব্যক্তির কথা জানানো হয়েছে যে টাকা আর খাবারের লোভ দেখিয়ে তাকে ঝোপের ধারে নিয়ে গিয়েছিল।

ওই মেয়েটিকে আরও কেউ ওই ঝোপের ধারে নিয়ে গিয়েছিল কিনা, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। রাহুল নামে ওই ছেলেটি তাঁর মেয়েকে মাঝে মাঝেই লজেন্স দিত বলে জানিয়েছেন বাবা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘শুক্রবার দু’জন পরিকল্পনা করেই এসেছিল। রাহুল মেয়েকে নুডল দেয়। সঙ্গে দশ টাকার একটা নোটও। তার পর মেয়েকে কোলে তুলে নিয়ে অন্য লোকটির হাতে দিয়ে দেয়। তার পর থেকে রাহুলকে আর দেখা যায়নি। রাহুলকে ধরলেই সব স্পষ্ট হবে।’’

শুক্রবার সন্ধে সাতটা নাগাদ কেশবপুরম এলাকায় রেললাইনের ঝোপের পাশে রক্তস্রোতে মেয়েটিকে পড়ে থাকতে দেখেন এক পথচারী। কান্না শুনে ওই ব্যক্তির চোখ পড়ে তার উপরে। কেশবপুরমের জেজে বস্তির বাসিন্দা ওই পরিবারটি মেয়েকে সন্ধেবেলা খুঁজে না পেয়ে পুলিশে জানায়। তাদের দাবি, ওই ঝোপের দিকে কেউ আসছে বুঝে মেয়েটিকে রক্তের মধ্যে ফেলে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতী। না হলে হয়তো মেরেই ফেলা হত তাকে। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, অভিযুক্ত সম্পর্কে মেয়েটি এখনও তাদের তেমন কোনও তথ্য দিতে পারেনি যাতে কাউকে গ্রেফতার করা যায়। সিসিটিভি ফুটেজ এবং ঘটনার পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ থেকে তদন্ত এগোচ্ছে।

তবে মেয়েটির শারীরিক অবস্থা দেখে কপালে ভাঁজ পড়েছে সফদরজঙ্গ হাসপাতালের চিকিৎসকদের। ছোট্ট শরীরের অভ্যন্তরীণ ক্ষত মেরামত করতে দীর্ঘ অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে। এখনও মারাত্মক যন্ত্রণা সহ্য করতে হচ্ছে তাকে। তবে এখন মেয়েটির জ্ঞান ফিরেছে। অবস্থাও অনেকটা স্থিতিশীল।

নিজের মেয়ের সঙ্গে যা হয়েছে, কোনও দিনই ভুলতে পারবেন না নির্ভয়ার মা। কিন্তু মাত্র চার বছরের একটি শিশুকে এমন নির্যাতন সহ্য করতে হচ্ছে শুনে সেই আশা দেবী বলেছেন, ‘‘টিভি চ্যানেল সব দেখায়। কাগজে খবরও বেরোয়। তার পরেই সব শেষ। সরকার বা বিচার ব্যবস্থা— কোথাও কিছু হয় না। ভুগতে হয় পরিবারকে। সরকার-পুলিশ ও বিচার ব্যবস্থা সজাগ না হলে এমন অপরাধ চলতেই থাকবে।’’ একই সুর দিল্লির মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের গলাতেও। তিনি বলেন, ‘‘২০১৪ সালে মহিলাদের উপরে নিগ্রহের ঘটনায় মাত্র ন’জন অভিযুক্ত দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। ভাবা যায়! এই জন্যই দিল্লিতে কেউ ভয় পায় না। প্রতিদিন এক জন নির্ভয়া খুঁজে পায় দিল্লি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Delhi Girl doctor rape
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE