Advertisement
E-Paper

বিতর্ক এড়িয়ে ৪০ ফুট মণ্ডপ

বিশ্বের উচ্চতম দুর্গা—গত বছর একই সঙ্গে তাক লাগিয়ে লোক টেনেছিল, পাশাপাশি বিতর্কে জড়িয়েছিল কলকাতার দেশপ্রিয় পার্ক। মানুষের আগ্রহ এমন স্তরে পৌঁছেছিল যে তার আঁচ লেগেছিল উত্তর-পূর্বেও। বরাক উপত্যকা থেকেও বেশ কিছু মানুষ বিমানে চড়ে কলকাতা পাড়ি দিয়েছিলেন। শেষপর্যন্ত দেখা আর হয়নি। ততক্ষণে পুলিশি ঘেরাটোপে ঢাকা পড়েছে দেশপ্রিয় পার্ক। এ বার বরাক সেই আক্ষেপ মেটাতে উদ্যোগী হয়েছে সৎসঙ্গ আশ্রম রোড দুর্গাপূজা কমিটি।

উত্তম সাহা

শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:২৩
শিলচরের আকর্ষণ সৎসঙ্গ আশ্রম রোডের এই পুজো। —নিজস্ব চিত্র।

শিলচরের আকর্ষণ সৎসঙ্গ আশ্রম রোডের এই পুজো। —নিজস্ব চিত্র।

বিশ্বের উচ্চতম দুর্গা—গত বছর একই সঙ্গে তাক লাগিয়ে লোক টেনেছিল, পাশাপাশি বিতর্কে জড়িয়েছিল কলকাতার দেশপ্রিয় পার্ক। মানুষের আগ্রহ এমন স্তরে পৌঁছেছিল যে তার আঁচ লেগেছিল উত্তর-পূর্বেও। বরাক উপত্যকা থেকেও বেশ কিছু মানুষ বিমানে চড়ে কলকাতা পাড়ি দিয়েছিলেন। শেষপর্যন্ত দেখা আর হয়নি। ততক্ষণে পুলিশি ঘেরাটোপে ঢাকা পড়েছে দেশপ্রিয় পার্ক। এ বার বরাক সেই আক্ষেপ মেটাতে উদ্যোগী হয়েছে সৎসঙ্গ আশ্রম রোড দুর্গাপূজা কমিটি।

মহিষাসুরমর্দিনী মণ্ডপ তৈরি করছেন শিল্পী বাচ্চু দাস। তবে কলকাতার মত ৭০ ফুট উঁচু নয়। এখানে উচ্চতা ৪০ ফুট। সিমেন্টের বদলে সৎসঙ্গ আশ্রম রোডে ব্যবহৃত হয়েছে প্লাস্টার অব প্যারিস। ওজনের কথা খেয়াল রেখে থার্মোকলের উপর কাঠের গুঁড়ো, তার উপরে লাগানো হয়েছে ‘ফার্নিচার প্রোটিন’। বাচ্চুবাবু বলেন, কলকাতার মণ্ডপটিতে প্রবেশপথটি বড়সড় করা হলেও বেরনোর রাস্তা ছিল অত্যন্ত সংকীর্ণ। গত বছরের সমস্যার এটিও একটি কারণ ছিল। তাই তিনি প্রবেশ-প্রস্থান দুটোই করেছেন সমান আকারের। পুজো কমিটির সভাপতি নীলকণ্ঠ ভট্টাচার্য ও সম্পাদক অভিজিৎ পাল জানিয়েছেন, এ বার তাঁদের পুজোর ২৫ বছর পূর্তি। এ উপলক্ষে বড়সড় আয়োজনের সিদ্ধান্ত গত বছরেই চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল।

সেই সূত্র ধরেই মণ্ডপ-প্রতিমার সঙ্গে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে আলোকসজ্জাতেও। আলোকশিল্পী দীপজয় রায় জানান, তাঁর কর্মীরা সবাই এখানকার হলেও সমস্ত সামগ্রী এনেছেন চন্দননগর থেকে। অভিনব কিছু দেখানোর চেষ্টা চলছে। বিশেষ করে, ইয়ারানা সিনেমায় ‘সারে জমানা, হাসিনো কা দিওয়ানা’ গানের সময় অমিতাভ বচ্চনের গায়ে যে ভাবে বিদ্যুতের চমক দেখা গিয়েছিল, তা শিলচরেও করে দেখানোর চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন দীপজয়। জানান, পরে আরেকটি হিন্দি সিনেমায়ও মিঠুন চক্রবর্তীর শরীরে দেখা গিয়েছে বিনা তারে আলো জ্বলতে। এ বার সৎসঙ্গ আশ্রম রোডের পুজোমণ্ডপেও দেখা যাবে, দুজনের দেহে আলো জ্বলছে। তাঁরা মণ্ডপের সামনে ঘুরে বেড়াবেন। চন্দ্রগ্রহণ, চাঁদমামা ইত্যাদিও থাকবে আলোর খেলায়।

অভিজিতবাবু বলেন, মণ্ডপটাই আসলে প্রতিমা। মহিষাসুরমর্দিনীকে সামনে থেকে দেখা যাবে। ভিতরে মণ্ডপের সঙ্গে তাল মিলিয়ে লক্ষ্মী-সরস্বতী-কার্তিক-গণেশ। তবে পুজোর জন্য পৃথক প্রতিমাও তৈরি হচ্ছে। সেই শাস্ত্রীয় প্রতিমার শিল্পী হোজাইয়ের সঞ্জয় পাল। আসছে কলকাতার ঢাকির দল। তিনদিন বাজাবেন তাঁরা। এত আয়োজন, লক্ষ্য একটাই। দর্শনার্থীরা যেন নিশ্চিন্তে উপভোগ করতে পারেন। প্রকাশিত হবে স্মরণিকাও।

বাইরের চমকের কথা আগে কখনও না ভাবলেও সৎসঙ্গ আশ্রম রোডের পুজো আয়োজকরা অবশ্য বহু আগেই সকলকে চমকে দিয়েছেন। এলাকার বাসিন্দারা মিলে পুজোর জন্য নিজস্ব জমি কিনে নির্মাণ করেছেন স্থায়ী মণ্ডপ। শুরু থেকে এই পুজোর সঙ্গে জড়িত নীলকণ্ঠবাবু জানিয়েছেন, ১৯৯১ সালে তাঁরা প্রথমবার দুর্গাপুজো করেন। এলাকার মহিলারাও চাইছিলেন, নিজেদের এলাকায় একটি পুজো হোক। তবে শুরুর দিকে পুজোর জন্য জায়গা পাওয়াটাই বড় সমস্যা ছিল। যেখানে ফাঁকা জায়গা পাওয়া যেত, সেখানেই পুজো হতো। এরপরেই জমি কেনার সিদ্ধান্ত হয়। বার্ষিক পুজোর খরচ বাঁচিয়ে স্থায়ী মণ্ডপ গড়ে তোলা হয়েছে।

Barak valley durga
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy