বিধায়ক পদ খারিজ নিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন হিমাচল প্রদেশের বিদ্রোহী ছয় কংগ্রেস নেতা! ওই ছ’জনের বিধায়ক পদ খারিজ করেন বিধানসভার স্পিকার কুলদীপ সিংহ পঠানিয়া। স্পিকারের দফতরের তরফে জানানো হয়েছিল, দলীয় হুইপ অমান্য করে বুধবার রাজ্য বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখুর সরকারের বাজেট প্রস্তাব সংক্রান্ত অর্থবিলের পক্ষে ভোট না-দেওয়ার কারণেই ‘দলত্যাগ বিরোধী আইনে’ এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। তা নিয়েই বিদ্রোহীরা বৃহস্পতিবার হিমাচলপ্রদেশ হাই কোর্টর দ্বারস্থ হয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
পদ খারিজ হওয়া বিধায়কেরা হলেন, রবি ঠাকুর (লাহুল-স্পিতি), রাজেন্দ্র রানা (সুজনপুর), সুধীর শর্মা (ধরমশালা), ইন্দ্রদত্ত লক্ষণপাল (বারসার), চৈতন্য শর্মা (গগরেট), দেবেন্দ্র ভুট্টো (কুটলেহা)। মঙ্গলবার হিমাচলের একটি রাজ্যসভা আসনের জন্য ভোটাভুটির সময় বিজেপির প্রার্থী হর্ষ মহাজনের সমর্থনে ‘ক্রস ভোটিং’ করেছিলেন তাঁরা। বুধবার দলীয় হুইপ অমান্য করে বাজেট প্রস্তাব সংক্রান্ত অর্থবিলের ভোটাভুটি থেকে বিরত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
মঙ্গলবার রাজ্যসভা নির্বাচনে ৬৮ সদস্যের বিধানসভায় দু’পক্ষই ৩৪টি করে ভোট পাওয়ায় লটারির মাধ্যমে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়। ৬৮ আসনের হিমাচল বিধানসভায় কংগ্রেসের আসন সংখ্যা ৪০। পাশাপাশি তিন নির্দল বিধায়কের সমর্থনও ছিল সুখু সরকারের দিকে। কিন্তু ওই তিন নির্দলও রাজ্যসভা ভোটে হর্ষকে সমর্থন করেন। পরিষদীয় নিয়ম অনুসারে, রাজ্যসভা ভোটের জন্য হুইপ জারি করা যায় না। তা অমান্য করার অপরাধে কোনও বিধায়কের বিরুদ্ধে ‘দলত্যাগ বিরোধী আইনে’ পদক্ষেপ করাও সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে স্পিকার হাতিয়ার করেছেন বুধবারের বাজেট প্রস্তাব সংক্রান্ত অর্থবিল নিয়ে ভোটাভুটিকে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজনীয় সংখ্যা নিয়ে সংশয় থাকায় বিরোধী দলনেতা জয়রাম ঠাকুর-সহ ১৫ বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করে ওই প্রস্তাব পাশ করিয়ে নেয় সুখু সরকার।
ইতিমধ্যেই হিমাচলের কংগ্রেসের সরকার ফেলতে মরিয়া বিজেপি আস্থাভোটের দাবি জানিয়ে রাজ্যপাল শিবপ্রতাপ শুক্লের দ্বারস্থ হয়েছে। ‘বিক্ষুদ্ধ’ নেতা বিক্রমাদিত্য সিংহ মন্ত্রিপদে ইস্তফা প্রত্যাহারের নতুন শর্ত দিয়ে বৃহস্পতিবার চাপ বাড়িয়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্বের উপর। এই পরিস্থিতিতে সরকার বাঁচাতে রাহুল গান্ধী-মল্লিকার্জুন খড়্গের দল এই কৌশল নিয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মত।
আরও পড়ুন:
৬৮ সদস্যের হিমাচল বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার ‘জাদুসংখ্যা’ ৩৫। ছ’জন বিধায়কের পদ খারিজের ফলে এখন রইলেন ৬২ জন। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠতার অঙ্ক নামল ৩৩-এ। এই মুহূর্তে কংগ্রেসের রইলেন ৩৪ বিধায়ক। বিজেপির ২৫। অর্থাৎ তিন নির্দলকে পাশে পেলেও কংগ্রেসকে ছুঁতে পারবে না তারা। যদিও এর ফলে ‘বিদ্রোহী’ শিবিরের সঙ্গে সমঝোতার সম্ভাবনা আরও ক্ষীণ হল বলে মনে করছেন তাঁরা।