E-Paper

জল শোধনে নয়া প্রযুক্তি বাঙালির

জল পরিশোধনে মূলত যে প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে তাকে বলা হয় ‘পিজ়ো-ফটোক্যাটালিসিস’ অর্থাৎ যেখানে কোনও যান্ত্রিক শক্তি বা গতিশক্তি এবং সৌরশক্তি একসঙ্গে কাজ করে। এ ক্ষেত্রে এই কাজের জন্য অভীরুরা একটি রাসায়নিক উপাদান তৈরি করেছেন যা এই পদ্ধতিতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে।

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৫ ০৭:৪৭

—প্রতীকী চিত্র।

তরল বর্জ্য থেকে জলের দূষণ নিয়ে বারবারই কথা হয়। সেই দূষণ ঠেকানোর নানা পদ্ধতিও চালু আছে। এ বার দূষিত জল শোধনে নতুন প্রযুক্তির দিশা দেখিয়েছেন কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান-প্রযুক্তি দফতরের অধীনস্থ মোহালির ইনস্টিটিউট অব ন্যানোসায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির একদল বিজ্ঞানী। তাঁদের আবিষ্কৃত প্রযুক্তিতে রসায়নের পাশাপাশি সূর্যের আলোর ব্যবহার যেমন আছে, তেমনই প্রয়োগ করা হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তারও। এই গবেষকদলের নেতৃত্বে ছিলেন বাঙালি বিজ্ঞানী অভীরু বসু। এই গবেষণা সংক্রান্ত প্রবন্ধ ‘ন্যানো সায়েন্স’ বিজ্ঞান পত্রিকায় প্রকাশিতও হয়েছে। বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি দফতর জানিয়েছে, বর্তমানে যে সব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় তার থেকে এই নয়া প্রযুক্তি অনেক বেশি কার্যকর। প্রযুক্তিটি পরিবেশবান্ধব। এবং ব্যয়বহুল নয়।

জল পরিশোধনে মূলত যে প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে তাকে বলা হয় ‘পিজ়ো-ফটোক্যাটালিসিস’ অর্থাৎ যেখানে কোনও যান্ত্রিক শক্তি বা গতিশক্তি এবং সৌরশক্তি একসঙ্গে কাজ করে। এ ক্ষেত্রে এই কাজের জন্য অভীরুরা একটি রাসায়নিক উপাদান তৈরি করেছেন যা এই পদ্ধতিতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে। কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি দফতর জানিয়েছে, জৈব উপায়ে নষ্ট হতে পারে (বায়োডিগ্রেডেবল) এমন পলিল্যাকটিক অ্যাসিড থেকে একটি বিশেষ যৌগ উপাদান তৈরি করা হয়েছে এবং সেই উপাদানের উপরে বিসমাথ ফেরাইট নামে একটি রাসায়নিক আস্তরণ দেওয়া হয়েছে। সূর্যের আলো এবং জলের তরঙ্গের উপস্থিতি পেলেই এই অনুঘটক সক্রিয় হয়ে রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু করবে।

বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি দফতর জানিয়েছে, বস্ত্র, ফার্মাসিউটিক্যাল ইত্যাদি শিল্প কারখানা থেকে যে বর্জ্য নিষ্কাশিত হয় তার মধ্যে ‘মিথিলিন ব্লু’ এবং ‘কঙ্গো রেড’, এই দু’টি মারাত্মক ক্ষতিকর রাসায়নিক থাকে। অভীরুদের আবিষ্কৃত পদ্ধতি এই দূষিত রাসায়নিকগুলিকে বিনষ্ট করতে সক্ষম।

কী ভাবে, কখন এই প্রযুক্তি স্বয়ংক্রিয় ভাবে কত নিবিড় ভাবে কাজ করবে তা স্থির করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং যন্ত্রবুদ্ধির (মেশিন লার্নিং) প্রয়োগ করেছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি দফতরের দাবি, ‘পিজ়ো-ফটোক্যাটালিসিস’ পদ্ধতি থাকায় মেঘলা দিনে সূর্যালোকের অনুপস্থিতিতেও এই প্রযুক্তি কাজ করতে সক্ষম হবে। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অভীরুদের প্রযুক্তি দূষিত জল থেকে প্রায় ৯৯ শতাংশ কঙ্গো রেড এবং প্রায় ৭৪ শতাংশ মিথিলিন ব্লু দূর করতে সক্ষম।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Water Filter Station Scientific Research Science Water pollution

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy