Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

হিমাচলে নিখোঁজ ডুয়ার্সের বাসিন্দা জওয়ান

তুষারঝড়ে গত ২০ ফেব্রুয়ারি হিমাচল প্রদেশের কিন্নর জেলাতে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন ৬ ভারতীয় সেনা জওয়ান।

গোবিন্দবাহাদুর ছেত্রী

গোবিন্দবাহাদুর ছেত্রী

সব্যসাচী ঘোষ
বিন্নাগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৯ ০৪:৪৪
Share: Save:

দু’সপ্তাহ হতে চলল, ঘরের ছেলের কোনও খোঁজ না পেয়ে উদ্বেগে রাতে ঘুম হচ্ছে না ডুয়ার্সের বিন্নাগুড়ির এক পরিবারের।

তুষারঝড়ে গত ২০ ফেব্রুয়ারি হিমাচল প্রদেশের কিন্নর জেলাতে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন ৬ ভারতীয় সেনা জওয়ান। সে দিনই এক জওয়ানের মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল। তার ১০ দিন পরে গত শনিবার রাকেশ ঋষি নামের আর এক সেনা জওয়ানের দেহও উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু অবশিষ্ট ৪ সেনা জওয়ানের আজ পর্যন্ত কোনও খোঁজ মেলেনি। এই নিখোঁজ জওয়ানদের মধ্যেই এক জন ডুয়ার্সের বিন্নাগুড়ির বাসিন্দা গোবিন্দবাহাদুর ছেত্রী। বছর তেত্রিশের গোবিন্দের পরিবারকে ২০ ফেব্রুয়ারিতেই হিমাচল থেকে সেনা অফিসারেরা খবর দেন যে তুষারঝড়ে তিনি নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন।

কিন্তু এরপর দু’সপ্তাহ কাটতে চললেও ঘরের ছেলের আর কোন খবর না আসায় শোকে মুহ্যমান হয়ে পরেছে ছেত্রী পরিবার। তাঁদের দাবি, গোবিন্দবাহাদুর দেশের সেনাবাহিনীর জওয়ান। কিন্তু তিনি নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পরে কোনও হেলদোল নেই প্রশাসনের। ডুয়ার্সের ভূমিপুত্রের এ ভাবে নিখোঁজের ঘটনা শুনেও কোনও নেতা মন্ত্রী সমবেদনা পর্যন্ত জানাতে আসেননি বলেও অভিযোগ পরিবারের।

বিন্নাগুড়ির জিএস কলোনির বাড়িতে বসে এমন ভাবেই ক্ষোভের কথা জানান নিখোঁজ সেনার কাকা গণেশ ছেত্রী। শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন নিখোঁজ সেনার স্ত্রী মেনকা ছেত্রী। ছয় এবং দেড় বছরের দুই ছেলে অক্ষ এবং বরদান ছেত্রী জানতে চাইছে, কেন বাবা ফোন করছে না?

নিখোঁজ সেনা জওয়ানের বাবা মীরবাহাদুর জানান, ১৪ বছর আগে তাঁর ছেলে সেনা হিসাবে কাজে যোগ দেয়। কিন্নরে দেড় বছর আগে পোস্টিং দেওয়া হয় তাঁকে। উল্লেখ্য কিন্নর জেলার পুউহ ব্লকের সিপকিলা পাসের ভারত চিন সীমান্তের দুর্গম এলাকাতে সেনা টহলের সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে যায়। বিরাট এলাকা জুড়ে হিমবাহর ধস নামে বলে তাঁরকা জানতে পেরেছেন। হিমাচলপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর পুরো ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সেনা জওয়ানদের সঙ্গে আইটিবিপি জওয়ানদের নিয়েও নিখোঁজ জওয়ানদের সন্ধান চালানো হচ্ছে বলেও সেনা সূত্রের খবর। কিন্তু এরপরেও সাফল্য না মেলায় যত দিন যাচ্ছে, ততই উদ্বেগ বাড়ছে বিন্নাগুড়িতে।

মালবাজার ব্লকের কুমলাই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি রাজা শর্মা নিখোঁজ সেনা জওয়ানের আত্মীয় হন। তিনি নিজেও পুরো ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে পরিবারটির পাশে সমবেত ভাবে সকলের দাঁড়ানো উচিত বলেও জানান।

এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, এই অঞ্চলের বহু মানুষই সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তাঁদের দেখভালের দায়িত্ব প্রশাসনেরই। প্রশাসন সেই দায়িত্ব পালন না করলে, উদ্বেগ ছড়িয়ে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE