ক্রিকেট ছিল তাঁর প্রাণ। বিকেল হলেই ব্যাট নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন। পছন্দের ক্রিকেটার বিরাট কোহলি। ১৮ বছর অপেক্ষার পর রয়াল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর আইপিএল জয়ের আনন্দে কোহলির মতো তিনিও কেঁদেছিলেন। অনেকের মতো ২১ বছরের ভূমিক লক্ষ্মণও আরসিবির জয়োৎসবে সামিল হয়েছিলেন। আনন্দ করতে করতেই গিয়েছিলেন চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে। কিন্তু জীবিত অবস্থায় বাড়ি ফিরে আসা হয়নি তাঁর। পদদলিত হয়ে মৃত্যু হয় ওই যুবকের। গ্রামেই তাঁর কবর দেওয়ার ব্যবস্থা হয়। সেই কবর আঁকড়ে ধরে শুধুই কাঁদছেন এক মধ্যবয়সি ব্যক্তি। কেউ তাঁকে সরাতে এলে বলছেন, ‘‘আমায় ছেড়ে দাও। আমি এখানেই থাকতে চাই!’’ ওই ব্যক্তি ভূমিকের বাবা। পুত্রের অকালমৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না বিটি লক্ষ্মণ।
কর্নাটকের হাসান লোকসভা কেন্দ্রের একটি গ্রামেই থাকে লক্ষ্মণ পরিবার। তাদের একমাত্র পুত্র ভূমিক। স্থানীয় সূত্রে খবর, ছোট থেকেই ক্রিকেটের প্রতি তাঁর অগাধ ভালবাসা। তবে পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল না-হওয়ায় তাঁকে কখনও ক্রিকেট কোচিংয়ে দিতে পারেননি ভূমিকের বাবা। তবে পুত্রকে তিনি ভালবাসতেন। তাঁর মৃত্যুর খবর যখন গ্রামে পৌঁছোয়, প্রথমে তা বিশ্বাসই করেননি বিটি লক্ষ্মণ। তার পরে অনেক কিছু ঘটে যায়। পুত্রের নিথর দেহ গ্রামে আসে। তাঁকে কবর দেওয়া হয় গ্রামেরই মধ্যে। সেই কবর রাখতে ভূমিকের বাবা চাইছেন, তাঁর পুত্রের সঙ্গে যা হয়েছে তা যেন আর কারও সঙ্গে না হয়। কোনও বাবার কোল যেন এ ভাবে খালি না হয়। পুত্রের জন্য একটি জমিও কিনেছিলেন তিনি। সেই জমিতেই পুত্রের স্মৃতিস্তম্ভ বানাতে চান।
আরও পড়ুন:
গত বুধবার আরসিবির বিজয়োৎসবে পদপিষ্টের ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয়েছেন অনেকে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে কর্নাটক সরকার। সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার-সহ আরও কয়েক জন উচ্চপদস্থ আধিকারিককে। তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি। প্রথমে মৃতের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছিল সিদ্দারামাইয়া সরকার। শনিবার সেই সাহায্যের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিল কর্নাটক সরকার। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া জানান, মৃতের পরিবারপিছু ২৫ লক্ষ টাকা করে দেবে তাঁর সরকার।