অসমে নাশকতার পাশাপাশি এ রাজ্যে ভেঙে পড়া জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর সংগঠনকে ফের সক্রিয় করাই ছিল আনসারুল্লা বাংলা টিম (এবিটি)-এর লক্ষ্য। অসম এবং এ রাজ্য থেকে গ্রেফতার হওয়া আট এবিটি জঙ্গির বিরুদ্ধে আদালতে জমা দেওয়া চার্জশিটে এমন দাবি করেছে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। বৃহস্পতিবার বহরমপুর কোর্টে ২০ পাতার চার্জশিটে এসটিএফ দাবি করেছে, এবিটি-র মাথা জসিমুদ্দিন রহমানির নির্দেশে এই কাজে নেমেছিল ধৃতেরা। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে পালাবদলের পর সে দেশের জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে রহমানি।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, শাব রাডি ওরফে শাব শেখ, সাজিবুল ইসলাম, মুস্তাকিম মণ্ডল, মিনারুল শেখ, তারিকুল শেখ ওরফে সাদিক, বিপ্লব বিশ্বাস ওরফে আবদুল্লাহ, নুর ইসলাম মণ্ডল এবং আব্বাস আলি—এই আট জনের নামে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। তারিকুল এবং শাব রাডি বাংলাদেশি। বাকিদের মধ্যে নুর ইসলাম অসমের বাসিন্দা এবং সে রাজ্যে এবিটি-র চাঁই। এ রাজ্যে মনিরুলের নেতৃত্বে সংগঠনকে নতুন করে তৈরি করার কাজ চলছিল। প্রাক্তন জেএমবি জঙ্গিদের সাহায্য তারা নিয়েছিল।
ডিসেম্বর মাসে এসটিএফের সাহায্য নিয়ে অসম পুলিশ আটজন এবিটি জঙ্গিকে গ্রেফতার করে। যার মধ্যে ছিল এ রাজ্যের মিনারুল এবং আব্বাস। মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। জানা যায়, বাংলাদেশি শাবের নাম এ রাজ্যের দু’টি বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার তালিকায় রয়েছে। ভুুয়ো নথি দিয়ে এ রাজ্য থেকে ভারতীয় পাসপোর্টও তৈরি করেছিল শাব। সেই সূত্রে মুর্শিদাবাদ থেকে গ্রেফতার হয় শাবের পিসতুতো ভাই সাজিবুল এবং তার সঙ্গী মুস্তাকিম। পরে গ্রেফতার করা হয় আবদুল্লাহকে। খাগড়াগড় বিস্ফোরণে যুক্ত তারিকুল বহরমপুর জেলে বন্দি ছিল। তাকে ফের গ্রেফতার করা হয়। গোয়েন্দাদের দাবি, তারিকুলের সঙ্গে আব্বাসের যোগ রয়য়েছে।
গোয়েন্দাদের দাবি, অসমে নাশকতার জন্য নুরের নেতৃত্বে বিস্ফোরক এবং অস্ত্র সংগ্রহ করেছিল জঙ্গিরা। পাশাপাশি মিনারুল খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পর পুলিশি ধরপাকড়ের ঠেলায় নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া জেএমবির জঙ্গিদের সক্রিয় করে তোলার কাজ শুরু করে। মুর্শিদাবাদের কয়েক জন যুবককেও সংগঠন বিস্তারের কাজে লাগায়। জমা দেওয়া চার্জশিটে তাঁদের বয়ান আছে বলে সূত্রের দাবি। এমনকি, সংগঠন বিস্তারের লক্ষ্যে জসিমুদ্দিন রহমানির এক অনুচর এ রাজ্যে এসে মিনারুলদের সঙ্গে বৈঠকও করেছিল বলে চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)