বিজেপিকে হারাতে প্রাথমিক লক্ষ্য হল বিরোধী জোটকে মসৃণ করা। মমতা বা মায়াবতীকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রশ্নে তাই কংগ্রেসের আপত্তি নেই বলে গত কালই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন রাহুল গাঁধী। আর আজ তৃণমূল সূত্র জানিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আদৌ প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য লালায়িত নন। তাঁর প্রধান লক্ষ্য হল পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা দেশে বিজেপিকে হারানো।
গোটা দেশে নরেন্দ্র মোদীর দলকে হারাতে যে রাজ্যে যে দল শক্তিশালী সেখানে বিজেপির বিরুদ্ধে একের বিরুদ্ধে এক সমীকরণ মেনে এগোনোর সূত্র দিয়েছিলেন মমতা। তৃণমূলের লক্ষ্য হল আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে বোঝাপড়া বাড়ানো। তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌগত রায় কিংবা সুখেন্দুশেখর রায়ের মতো নেতারা মনে করছেন, ‘স্বচ্ছ ভাবমূর্তির অধিকারী’ মমতার ট্র্যাক রেকর্ড অন্য যে কোনও নেতার চেয়ে উজ্জ্বল। কিন্তু আপাতত বিজেপিকে হারানোটাই পাখির চোখ। প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, তা নির্বাচনের পরে ভাবা যাবে।
সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী পদের শ্রেষ্ঠ দাবিদার মমতাই।’’
মমতা নিয়ে দলের সভাপতির আপত্তি না থাকলেও তৃণমূল নেত্রী প্রশ্নে বেসুরে বেজেছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি সাফ জানিয়েছেন, দলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে রাহুল গাঁধীকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী বেছে নেওয়া হয়েছে। কংগ্রেসের কর্মীরাও তাই চান। অথচ, রাহুল গাঁধী মমতাকে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান বলে আজগুবি গল্প ছড়ানো হচ্ছে। আজ এ নিয়ে কংগ্রেসের মুখপাত্র রাজীব গৌড়ার কাছে জানতে চাওয়া হয় যে, অধীর চৌধুরী মমতাকে ‘ডেভিল’ বলে ব্যাখ্যা করে পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসকে শেষ করার পিছনে তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলেছেন। অথচ গত কালই কংগ্রেসের একটি শীর্ষ সূত্র মায়াবতী বা মমতাকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মেনে নিতে আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন। ওই মতপার্থক্য কেন? জবাবে গৌড়া বলেন, ‘‘যে সূত্র আপনাদের মায়া-মমতার কথা বলেছেন, তাঁর কাছেই উত্তরটি জেনে নিন।’’
রাহুলই প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী— দল সেই অবস্থানে অনড়। তবে কংগ্রেসের সভাপতির মায়া-মমতা নিয়ে মন্তব্যের প্রসঙ্গে দলীয় সূত্রের ব্যাখ্যা, রাহুল গত কাল ওই কথা বলে থাকতে পারেন। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, সঙ্ঘের লোক নন এমন যে কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা নির্বাচনে প্রাপ্ত আসনের ভিত্তিতে পরে ঠিক করা হবে। কিন্তু তার আগে প্রয়োজন বিজেপিকে হারাতে রাজ্যে রাজ্যে বিরোধী জোটকে মসৃণ করা। কংগ্রেসের একাংশের মতে, রাহুল নমনীয়তার বার্তা দেওয়ায় উল্টে এখন মায়াবতী-মমতার মধ্যে প্রতিযোগিতা বেড়ে গেল। তাতে আখেরে লাভ হবে রাহুলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy