Advertisement
E-Paper

তসলিমার প্রতি অশ্লীল মন্তব্যের জেরে জোম্যাটো-কাণ্ডের অমিতকে তীব্র আক্রমণ স্বস্তিকার

সেই পোস্টে অমিতের নিশানা তসলিমা নাসরিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সাহিত্যিককে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করেছেন তিনি। লেখিকার দেহের বিশেষ অঙ্গের প্রশংসা করে অমিতের মন্তব্য, তিনি মনে করেন, তাঁর প্রশংসা ভাল লাগবে লেখিকার। অমিতের সেই পোস্টের স্ক্রিন শট শেয়ার করেই এই আক্রমণ শানিয়েছেন স্বস্তিকা।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৯ ১৭:০৮
অশালীন মন্তব্যের জেরে অমিত শুক্লকে তীব্র আক্রমণ স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের। ফাইল চিত্র

অশালীন মন্তব্যের জেরে অমিত শুক্লকে তীব্র আক্রমণ স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের। ফাইল চিত্র

তা হলে এই মেরুদণ্ডহীন অমিত শুক্ল নমো সরকার নারীদেহের একটি বিশেষ অঙ্গ নিয়ে অবসেসড? তখন আর হিন্দু নারী বা মুসলিম নারীতে কিছু এসে যায় না তাঁর? চাঁছাছোলা ভাষাতেই জোম্যাটো-কাণ্ডে অমিত শুক্লকে বিঁধলেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়।

দেশ জুড়ে বিতর্কিত ও চরম আলোচিত ইস্যুটিতে এই প্রথম মুখ খুললেন তিনি। তবে ফাঁকা প্রতিবাদী বুলি নয়। স্বস্তিকার তুরুপের তাস খোদ অমিত শুক্লর করা একটি পুরনো অশালীন পোস্ট। ২০১৩-র এপ্রিলে করা সেই পোস্টে অমিতের নিশানা তসলিমা নাসরিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সাহিত্যিককে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করেছেন তিনি। লেখিকার দেহের বিশেষ অঙ্গের প্রশংসা করে অমিতের মন্তব্য, তিনি মনে করেন, তাঁর প্রশংসা ভাল লাগবে লেখিকার। অমিতের সেই পোস্টের স্ক্রিন শট শেয়ার করেই এই আক্রমণ শানিয়েছেন স্বস্তিকা।

৩১ জুলাই রাতে জোম্যাটোতে খাবার অর্ডার করেছিলেন মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরের বাসিন্দা অমিত শুক্ল। তিনি অ্যাপে দেখেন, তাঁর খাবার আনছেন জনৈক ফৈয়াজ। অমিত জোম্যাটোকে অনুরোধ করেন ডেলিভারি বয় পাল্টে দেওয়ার জন্য। অনুরোধ রাখা হয়নি। উত্তরে জোম্যাটো টুইট করে, ‘খাবারের কোনও ধর্ম হয় না। খাবারই ধর্ম’।

অমিত শুক্লর মন্তব্য ও স্বস্তিকার পাল্টা মন্তব্য। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া

ডেলিভারি বয় না পাল্টানোয় জোম্যাটোর অর্ডার বাতিল করে দেন অমিত। ‘@নমো_সরকার’ টুইটার হ্যান্ডল থেকে তিনি লেখেন, জোম্যাটো টাকা ফেরত না-দেওয়া সত্ত্বেও অর্ডার বাতিল করে দিয়েছেন তিনি। অ্যাপটিকেও উড়িয়ে দিয়েছেন। যদিও তাতে কান না-দিয়ে জোম্যাটোর প্রতিষ্ঠাতা দীপিন্দ্র গয়াল পরের দিন টুইট করেন, ‘ভারতের বৈচিত্রের আদর্শে আমরা গর্বিত। আমাদের মূল্যবোধের পরিপন্থী কিছু করার বদলে ব্যবসায়িক ক্ষতি হলেও দুঃখ নেই।’

ঘটনার জেরে নেট দুনিয়া দ্বিধাবিভক্ত। প্রথমে জোম্যাটোর সিদ্ধান্ত ও টুইটের ভূয়সী প্রশংসা করে অমিতকে কার্যত তুলোধনা করেন নেটিজেনরা। ঘটনার জেরে তাঁর থেকে মুচলেকা চায় জবলপুর পুলিশ। তিনি আর ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়াবেন না— এই মর্মে মুচলেকা দিতে হবে তাঁকে। পুলিশ সুপার অমিত সিংহ বলেন, ‘‘আমরা শুক্লের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করেছি। তাঁকে নজরে রাখা হচ্ছে।’’

তবে ধীরে ধীরে ইন্টারেনেটে তাঁর পক্ষেও এসেছে পাল্টা সমর্থন। অনেকে বলতে থাকেন, খাবারের কোনও ধর্ম নেই বলে যদি জোম্যাটো সত্যিই বিশ্বাস করে, তবে কেন হালাল করা মাংস না-পাঠানোর জন্য এক উপভোক্তার কাছে ক্ষমা চেয়েছিল সংস্থাটি? আর কেনই বা যে সমস্ত রেস্তরাঁয় হালাল মাংস পাওয়া যায়, সেগুলিকে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে তাদের মোবাইল অ্যাপে?

আরও পড়ুন: সন্ত্রাসবিরোধী ইউএপিএ সংশোধনী বিল পাশ হয়ে গেল রাজ্যসভাতেও

এর পর হালাল-বিতর্কে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে একটি খোলা চিঠি দেয় জোম্যাটো। বলেছে, ‘হ্যাঁ, খাবারের ধর্ম নেই। মানুষ নিজে ঠিক করেন, তাঁরা কী খাবেন বা রান্না করবেন। সে তিনি ধার্মিক হোন বা না-হোন। আমরা সব ধর্মকে সম্মান করি। তাই সম্ভাব্য সব রকম তথ্য দিই এটাই নিশ্চিত করার জন্য, যাতে আপনি আপনার পছন্দের খাবারটি পান। যেমন, জৈন খাবার, ভেগান খাবার বা নবরাত্রি থালির জন্যও ‘ট্যাগ’ (রেস্তরাঁ চিহ্নিত করা) রয়েছে আমাদের।’

আরও পড়ুন: এই বাড়িটা চেনেন? ছিল প্রাসাদ, তারপর মার্কিন দূতাবাস, এখন এক ভারতীয় ধনকুবেরের দখলে

তবে এ সব টুইট ও পাল্টা টুইটের মধ্যে যাননি স্বস্তিকা। তিনি তুলে এনেছেন অমিত শুক্লর অন্য একটি অশ্লীল পোস্ট। দেখিয়ে দিয়েছেন, অমিতের তথাকথিত রক্ষণশীলতার মধ্যে আসলে লুকিয়ে আছে বিকৃতমনস্কতাও। দুটো প্রসঙ্গকে এক বিন্দুতে মিলিয়ে অভিনেত্রীর প্রশ্ন: ‘নারীদেহের ওই বিশেষ অঙ্গের প্রশংসার সময় অমিত শুক্লর জাতপাতের কথা মাথায় থাকে না। শুধু খাবারের বেলায় তাঁর হিন্দু ডেলিভারি বয়ের প্রয়োজন হয়?’ নেটিজেনদের কাছে স্বস্তিকার জিজ্ঞাসা, ‘এই ধরনের মেরুদণ্ডহীন প্রাণীদের সমাজের সব স্তর থেকে নিষিদ্ধ করা উচিত নয় কি?’

Swastika Mukherjee Taslima Nasrin Amit Shukla
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy