Advertisement
E-Paper

সাবালক হলে একত্রবাসে বাধা নেই: হাইকোর্ট

পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের বিচারপতি অলকা সারিনের গত ২৩ ডিসেম্বরের এই রায় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে চর্চায় রয়েছে।

সংবাদ সংস্থা 

শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:২০
ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

সাবালক অথচ বিয়ের বয়ঃপ্রাপ্ত নন, এমন কোনও যুবক যদি তাঁর সাবালিকা বান্ধবীর সঙ্গে একত্রে থাকেন, তাতে বাধা দেওয়ার কিছু নেই। সম্প্রতি পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট এই রায় দিয়েছে। হাইকোর্টের বক্তব্য, ওই যুগল যদি অন্য কোনও ভাবে আইনভঙ্গ না করেন, তা হলে শুধুমাত্র একত্রবাসের কারণে তাঁদের দণ্ডিত করা যায় না।

পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের বিচারপতি অলকা সারিনের গত ২৩ ডিসেম্বরের এই রায় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে চর্চায় রয়েছে। নানা দিক থেকেই এই রায়কে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। সপ্তাহের গোড়ায় ইলাহাবাদ হাইকোর্ট বলেছিল, স্বামীর সঙ্গে থাকার ব্যাপারে কোনও সাবালিকাকে বাধা দেওয়া যায় না। বিচারপতি অলকা সারিনের রায় বলে দিল, সাবালক-সাবালিকা হয়ে গেলে নিজের জীবনযাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার, সঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যায় না। সেটা সংবিধানের মৌলিক অধিকারের বিরোধী। সাবালক যদি বিয়ের বয়ঃপ্রাপ্ত না-ও হয়ে থাকেন, তা হলেও তিনি কার সঙ্গে থাকবেন, সেটা সমাজ ঠিক করে দিতে পারে না। একই ভাবে সাবালিকা নিজেই ঠিক করবেন, তাঁর জন্য কী ভাল কী মন্দ। এখানে অন্যের হস্তক্ষেপ চলতে পারে না।

লক্ষণীয় ভাবে, সঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার যে সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদে বর্ণিত জীবনের অধিকারের মধ্যেই পড়ে, সে কথা মনে করিয়ে দিতে গিয়ে হাইকোর্ট বহুচর্চিত হাদিয়া মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কথা উল্লেখ করেছে। ‘লাভ জেহাদে’র ধুয়ো তুলে ভিন ধর্মের বিয়েতে হস্তক্ষেপের সেই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট সাবালিকার ব্যক্তিগত স্বাধীনতার পক্ষেই রায় দিয়েছিল। সম্প্রতি একাধিক রাজ্যে ভিন ধর্মে বিয়েতে ধর্মান্তরণ রুখতে আইন আসার পরিপ্রেক্ষিতে সেই বিতর্ক নতুন করে মাথা চাড়া দিয়েছে। যদিও ইলাহাবাদ হাইকোর্টের দু’দু’টি মামলা, বম্বে হাইকোর্ট, কলকাতা হাইকোর্ট— সর্বত্রই ব্যক্তিস্বাধীনতার অধিকারের পক্ষে রায় গিয়েছে।

পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের মামলায় অবশ্য ভিনধর্মের প্রশ্ন জড়িত ছিল না। সেখানে মেয়েটির বয়স ২১, ছেলেটির ১৯। মেয়েটির পরিবার এই সম্পর্কের কথা জানতে পেরে মেয়েটিকে মারধর করে আটকে রেখেছিল। মেয়েটি কোনও মতে পালিয়ে গিয়ে ছেলেটির সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। তাঁরা পুলিশি নিরাপত্তার আবেদন করেছিলেন, কিন্তু পুলিশ সাহায্য করেনি বলে অভিযোগ।

আদালত তার রায় শুনিয়ে পুলিশকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলেছে। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, মেয়েটির নিজের জীবনের ভালমন্দ ঠিক করার অধিকার আছে। ‘‘প্রাপ্তবয়স্ক সন্তান কী ভাবে তাঁর জীবন কাটাবেন, সেটা পরিবার নির্ধারণ করতে পারে না। জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার জীবনের অধিকারেরই অঙ্গ।’’ এ কথা বলার মধ্য দিয়ে লিভ-ইন সম্পর্কে সমাজের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধেও আদালত তার অবস্থান জানাল বলে মনে করা হচ্ছে। বিচারপতি বলেছেন, লিভ-ইন সম্পর্কের আইনগত চরিত্র নিয়ে এখানে কিছু বলা হচ্ছে না। কিন্তু কে কার সঙ্গে থাকবেন, সে ব্যাপারে প্রাপ্তবয়স্কের পূর্ণ স্বাধীনতা যে আছে, সেটা অস্বীকার করা যায় না।

Punjab and Haryana High Court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy