উমর, অনির্বাণের জামিনের খবরে উল্লসিত কানহাইয়া। শুক্রবার জেএনইউয়ের ক্যাম্পাসে। ছবি: পিটিআই।
কানহাইয়ার পরে এ বার জামিন পেলেন উমর খালিদ ও অনির্বাণ ভট্টাচার্যও। তাই আজ হোলির আগেই আবির খেলা শুরু হয়েছে জেএনইউয়ের ক্যাম্পাসে। কিন্তু সেই সুর কিছুটা কেটে দিলেন অনুপম খের। জেএনইউতে দাঁড়িয়েই নাম না করে কানহাইয়া-উমর-অনির্বাণদের দেশবিরোধী তকমা দিলেন তিনি।
আফজল গুরুর ফাঁসির বিরুদ্ধে বিতর্কিত অনুষ্ঠানের জেরে কানহাইয়ার মতো উমর ও অনির্বাণের বিরুদ্ধেও রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেছিল পুলিশ। প্রথমে কিছু দিন উধাও হয়ে যান ওই দু’জন। ২০ ফেব্রুয়ারি তাঁদের বিরুদ্ধে লুক-আউট নোটিস জারি হয়। তার দু’দিন পরে আচমকা ক্যাম্পাসে ফিরে আসেন ওই দু’জন। পরে গভীর রাতে আত্মসমর্পণ করেন।
৩ মার্চ জামিন পেয়েছেন কানহাইয়া। আজ দায়রা আদালতে কানহাইয়ার আর্জির কায়দাতেই উমর ও অনির্বাণের জামিনের জন্য আবেদন করেন অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীরা। তাঁরা জানান, গত ২০ দিন ধরে জেরা করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের কোনও প্রমাণ জোগাড় করতে পারেনি পুলিশ। সরকারি আইনজীবী পাল্টা যুক্তি দেন, অভিযুক্তেরা দেশবিরোধী স্লোগান দিয়েছিলেন। তা ছাড়া তাঁরা আফজলের ফাঁসিকে ‘আইনি পথে হত্যা’ মনে করেন। অতিরিক্ত দায়রা বিচারক রীতেশ সিংহ জানান, কানহাইয়া, উমর ও অনির্বাণের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ রয়েছে। তাই উমর-অনির্বাণকেও জামিন দেওয়া যেতে পারে। এর পরে দু’জনকে মোট পঞ্চাশ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে ছ’মাসের অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। জামিনে থাকার সময়ে আদালতের অনুমতি না নিয়ে দিল্লি ছেড়ে যেতে পারবেন না দুই পড়ুয়া।
আদালতের নির্দেশ আসার পরেই জেএনইউয়ে আবির খেলা শুরু হয়ে যায়। সন্ধ্যা সা়ড়ে আটটা নাগাদ তিহাড় জেল থেকে বেরিয়ে আসেন উমর ও অনির্বাণ। জেলের বাইরে তাঁদের স্বাগত জানাতে হাজির ছিলেন এক দল সতীর্থ। রাতে পড়ুয়াদের মিছিলও বেরোয়।
কিন্তু এই আনন্দের সুর কিছুটা কেটে দিয়েছেন অনুপম খের। বেশ কিছু দিন ধরেই জেএনইউ নিয়ে বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদীর পক্ষে জোরালো সওয়াল করছেন অনুপম। আজ নিজের একটি ছবির স্ক্রিনিং-এর জন্য জেএনইউয়ে যান তিনি। অনেক টালবাহানার পরে অনুপমের ছবি প্রদর্শনের অনুমতি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
অনুপম প্রত্যাশিত সুরেই কানহাইয়া ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান। কানহাইয়ার নাম না করে তাঁর দাবি, ‘‘তুমি রাজনীতি করছো। আমিও ছাত্র আন্দোলন করেছি। কিন্তু দেশের সঙ্গে রাজনীতি করা ঠিক নয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘জামিন পাওয়া ব্যক্তিকে অভিনন্দন জানানো হবে কেন? যারা দেশের বিরুদ্ধে সরব হয় তারা কখনও দেশের নায়ক হতে পারে না।’’ জেল থেকে ছাড়া পেয়ে দারিদ্র, সামাজিক অসাম্য থেকে ‘আজাদি’ পাওয়ার ডাক দিয়েছিলেন কানহাইয়া। আজ সেই বক্তব্যকে কটাক্ষ করে অনুপম বলেন, ‘‘কথা তো অনেকেই বলতে পারে। কিন্তু দারিদ্র, অসাম্য ঘোচাতে বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে কাজ করাটা খুব কঠিন।’’
কানহাইয়া ঠেকাতে
ভবিষ্যতে যাতে আর কেউ ‘কানহাইয়া কুমার’-এর মতো না হয়, তা সুনিশ্চিত করতে রাজস্থানের স্কুলগুলির পাঠ্যক্রমে বদল আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী বাসুদেব দেবনানি। স্কুলের পাঠ্যবইগুলিতে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জীবনীও অন্তর্ভুক্ত করার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানান তিনি। বৃহস্পতিবার দেবনানি বিধানসভায় জানান, ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে দেশভক্তির ভাব জাগিয়ে তুলতেই পাঠ্যক্রমে বদল আনা হবে। গত রবিবার দেবনানি জানান, পড়ুয়ারা যাতে হেমু কালানি, মহারাজা ধরসেনের মতো ভারতীয় সন্তদের জীবনী জানতে পারে, তার জন্য পাঠ্যক্রমে বদল আনা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy