Advertisement
০১ মে ২০২৪
Electoral Bonds

দুর্নীতির অভিযোগ করেন মোদী, দলীয় তহবিলে ১৭০ কোটি মিলতেই অনিয়ম পেল না বিজেপির সরকার!

২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ডিএলএফ-সহ কয়েকটি সংস্থার বিরুদ্ধে গুরুগ্রামে জমি দুর্নীতি ও প্রতারণার মামলা করেছিল হরিয়ানা পুলিশ। ঠিক পাঁচ বছর পরেই উলটপুরাণ!

২০১৯-এর অক্টোবর থেকে ২০২২-এর নভেম্বর পর্যন্ত দফায় দফায় বিজেপিকে বন্ডের মাধ্যমে অনুদান দিয়েছিল ডিএলএফ গ্রুপ।

২০১৯-এর অক্টোবর থেকে ২০২২-এর নভেম্বর পর্যন্ত দফায় দফায় বিজেপিকে বন্ডের মাধ্যমে অনুদান দিয়েছিল ডিএলএফ গ্রুপ। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৪ ০৯:২৩
Share: Save:

২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের প্রচারে কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধীর জামাই রবার্ট বঢরা ও নির্মাণ সংস্থা ডিএলএফ-এর বিরুদ্ধে জমি দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সুর চড়িয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তবে বন্ডের মাধ্যমে ১৭০ কোটি টাকা দলীয় তহবিলে মিলতেই হাই কোর্টে হরিয়ানার বিজেপি সরকার জানায়, কোনও অনিয়ম সামনে আসেনি।

২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ডিএলএফ-সহ কয়েকটি সংস্থার বিরুদ্ধে গুরুগ্রামে জমি দুর্নীতি ও প্রতারণার মামলা করেছিল হরিয়ানা পুলিশ। ঠিক পাঁচ বছর পরেই উলটপুরাণ! হাই কোর্টে রাজ্যের ওই অবস্থান সামনে আসতেই বঢরা সমাজমাধ্যমে অভিযোগ করেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ওই মামলা করা হয়েছিল। বিপাকে পড়ে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, এখনও কোনও অভিযুক্তকেই ছাড় দেওয়া হয়নি।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে নির্বাচনী বন্ডের তথ্য সামনে আসতে দেখা গিয়েছে, ২০১৯-এর অক্টোবর থেকে ২০২২-এর নভেম্বর পর্যন্ত দফায় দফায় বিজেপিকে বন্ডের মাধ্যমে অনুদান দিয়েছিল ডিএলএফ গ্রুপ। তিনটি ফার্ম ওই বন্ড কিনেছিল। ডিএলএফ কমার্শিয়াল ডেভেলপার্স লিমিটেড, ডিএলএফ গার্ডেন সিটি ইন্দোর প্রাইভেট লিমিটেড এবং ডিএলএফ লাক্সারি হোমস লিমিটেড। সমস্ত বন্ডই পেয়েছিল বিজেপি। যার মোট আর্থিক মূল্য ১৭০ কোটি টাকা।

মূলত হরিয়ানা, দিল্লি এবং উত্তরপ্রদেশে নির্মাণ ব্যবসায় যুক্ত ডিএলএফ। ২০১২ সালে এই সংস্থার বিরুদ্ধে জমি দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এর পরেই হরিয়ানা সরকার পদক্ষেপ করে। বিজেপির তরফে বলা হয়েছিল, হরিয়ানার ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা (কংগ্রেস) মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ওই দুর্নীতি হয়েছে। বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে বঢরা, হুডা, ডিএলএফ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, প্রতারণা-সহ দুর্নীতিরোধী আইনে একাধিক মামলা করা হয়।

২০১৯-এর জানুয়ারিতে ডিএলএফ অফিস তল্লাশি করে সিবিআই।

নির্বাচনী বন্ডের তথ্য সামনে আসতে দেখা যাচ্ছে, ওই তল্লাশি অভিযানের পরেই বন্ডের মাধ্যমে ডিএলএফ-এর অনুদান পেয়েছে বিজেপি। এর পরেই পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টে হরিয়ানার বিজেপি সরকার জানায়, ২০১২ সালে বঢরা ও ডিএলএফ সংস্থার মধ্যে জমি লেনদেনে কোনও অনিয়ম হয়নি।

বঢরা সমাজমাধ্যমে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মামলা করার অভিযোগ তোলেন। সেই অভিযোগ খারিজ করে শাসক শিবির জানায়, কাউকেই ক্লিন চিট দেওয়া হচ্ছে না। ফের তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়। ২০২৩ সালে হাই কোর্ট তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে দ্রুত তদন্ত শেষের নির্দেশ দেয়।

প্রসঙ্গত নির্বাচনী বন্ডের তথ্য সামনে আসতেই দেখা গিয়েছিল, দিল্লি আবগারি মামলায় প্রথম গ্রেফতার হওয়া পি শরৎচন্দ্র রেড্ডির সংস্থা শাসক শিবিরকে বন্ডের মাধ্যমে অনুদান দেওয়ার পরেই জামিন আর্জিতে কোনও আপত্তি করেনি ইডি। রাতারাতি রাজসাক্ষী করে দেওয়া হয় তাঁকে। এ বার সামনে এল আরও এক চমকপ্রদ তথ্য!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE