Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ফের যোগীর রাজ্যে এক মাসে মৃত্যু ৪৯ শিশুর

এ বার ফারুখাবাদের রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে এক মাসে মৃত্যু হয়েছে ৪৯ জন শিশুর। ২০ জুলাই থেকে ২১ অগস্টের মধ্যে এই শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

উদ্বেগে মা। বিআরডি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। —ফাইল চিত্র।

উদ্বেগে মা। বিআরডি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
লখনউ শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৪০
Share: Save:

গোরক্ষপুরের পরে উত্তরপ্রদেশেরই ফারুখাবাদ।

এ বার ফারুখাবাদের রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে এক মাসে মৃত্যু হয়েছে ৪৯ জন শিশুর। ২০ জুলাই থেকে ২১ অগস্টের মধ্যে এই শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ ক্ষেত্রেও অভিযোগ উঠেছে অক্সিজেনের অভাবেই শিশুরা মারা গিয়েছে। গত মাসে গোরক্ষপুরের বাবা রাঘব দাস (বিআরডি) হাসপাতালে ৪৮ ঘণ্টায় অক্সিজেনের অভাবে ৩৩ জনের শিশুমৃত্যুর অভিযোগ ওঠার পর থেকেই চাপে রয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এর মধ্যে ফারুখাবাদের সরকারি হাসপাতালে শিশুমৃত্যুর ঘটনা সামনে আসার পরে যোগীর চাপ আরও বাড়ল।

রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালের পরিসংখ্যান বলছে, ৪৯টি শিশুর মধ্যে নিওনেটাল আইসিইউ (নিকু)-র ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি ১৯ জন সদ্যোজাত। মৃত শিশুর অভিভাবকদের অভিযোগ, শিশুদের শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ার পরেও অনেক ক্ষণ তাদের অক্সিজেন দেওয়া হয়নি। দেওয়া হয়নি প্রয়োজনীয় ওষুধও। এই ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজ্যের প্রশাসনিক মহলে। রবিবার রাতে ফারুখাবাদে এফআইআর দায়ের করা হয় চিফ মেডিক্যাল অফিসার (সিএমও) উমাকান্ত পাণ্ডে এবং চিফ মেডিক্যাল সুপারিন্টেডেন্ট (সিএমএস) অখিলেশ অগ্রবালের বিরুদ্ধে। সোমবার সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ফারুখাবাদের জেলাশাসক রবীন্দ্র কুমার, উমাকান্ত পাণ্ডে এবং অখিলেশ অগ্রবালকে। তবে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে উমাকান্ত জানিয়েছেন, হাসপাতালের তরফে কোনও গাফিলতি হয়নি। সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্তকারী দল ফারুখাবাদে পাঠানো হয়েছে।’’

আরও পড়ুন: প্রতিরক্ষার শীর্ষে আসলে কি মোদীই

গত ৩০ অগস্ট রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রবীন্দ্র কুমার। তখনই মৃত শিশুর অভিভাবকরা তাঁকে ৪৯ জন শিশুর মৃত্যুর কথা জানান। এর পরেই সিটি ম্যাজিস্ট্রেট জৈনেন্দ্র কুমার জৈনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্তকারী দল গঠন করেন রবীন্দ্র।

জৈনেন্দ্র এবং এসডিএম অজিতকুমার সিংহ জানান, তদন্তে উঠে এসেছে, অক্সিজেনের অভাবে প্রবল শ্বাসকষ্টের কারণেই ৩০ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু বাকি ১৯ জন সদ্যোজাতের মৃত্যু কী ভাবে হয়েছে, তা নিয়ে তদন্ত-রিপোর্টে কিছু বলা হয়নি। তদন্তে উমাকান্ত পাণ্ডে এবং অখিলেশ অগ্রবাল কোনও রকম সাহায্য করেননি বলেও অভিযোগ করা হয়েছে রিপোর্টে।

তবে এই তদন্ত-রিপোর্ট মানতে চায়নি উত্তরপ্রদেশ সরকার। এ দিন উত্তরপ্রদেশের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি (স্বাস্থ্য) প্রশান্ত ত্রিবেদী সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করেন, ‘‘অক্সিজেন সরবরাহের সঙ্গে ওই ৪৯ জন শিশুর মৃত্যুর কোনও সম্পর্ক নেই।’’ প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি (তথ্য) অনীশ অবস্থীর দাবি, ‘‘বিভিন্ন কারণে ওই ৪৯ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। নাড়ি গলায় পেঁচিয়ে গিয়ে শ্বাসরোধের কারণেও কয়েক জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে।’’ উমাকান্ত এবং অখিলেশের বিরুদ্ধেও এখনই ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE