পুণেতে নিহত ইনফোসিস-কর্মী রসিলা রাজুর অন্ত্যেষ্টিতে শয়ে শয়ে মানুষের ভিড় সোমবার বুঝিয়ে দিল, তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলিতে নিরাপত্তার প্রশ্নটি এ বার ক্রমশই বড় হয়ে উঠছে।
ক’দিন আগে পুণেয় খুন হন বাঙালি তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী অন্তরা দাস। অফিস থেকে বেরিয়ে বাড়ি ফেরার পথে খুন হন তিনি। কেরলের রসিলা রাজু খুন হন অফিস ভবনেই। ফলে সে ক্ষেত্রে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার প্রশ্নটি আরও বেশি করে সামনে আসছে। এর আগে চেন্নাই, বেঙ্গালুরুতে একাধিক বার আক্রান্ত হয়েছেন তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীরা। রসিলার মৃত্যু সেই তালিকায় নয়া সংযোজন।
পুণের হিনজাওয়াড়ি এলাকায় রবিবার রাতে ইনফোসিস অফিসের ন’তলার কনফারেন্স রুমে উদ্ধার হয় কোঝিকোড়ের বাসিন্দা রসিলার দেহ। সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস থেকে সোমবার গ্রেফতার হয় সংস্থার নিরাপত্তা রক্ষী ভবেন শইকিয়া। কেন রবিবার ছুটির দিনে অফিসের ন’তলায় একা কাজ করছিলেন রসিলা? আপৎকালীন ঘণ্টা ঠিকমতো কাজ করছিল? জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে চিঠি দেবেন পুণের পুলিশ কমিশনার রশ্মি শুক্ল। তবে সংস্থার দাবি নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট মজবুতই ছিল। মহিলাদের জন্য একটি হেল্পলাইন আছে। আছে আপৎকালীন অ্যাপও। কিন্তু কোনওটাই বিশেষ ফলপ্রসূ হয়নি, রসিলার খুনই তার প্রমাণ, বলছেন কর্মীদের একাংশ।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, কম্পিউটারের কেব্ল তার গলায় পেঁচিয়ে খুন করা হয়েছে রসিলাকে। তার মুখেও ক্ষতচিহ্নের দাগ মিলেছে। অফিসে সে দিন দুপুর থেকেই একা কাজ করছিলেন রসিলা। অনলাইনে যোগাযোগ ছিল তাঁর বেঙ্গালুরুর সহকর্মীদের সঙ্গে। তবে সন্ধে সাতটার পর থেকে ফোনের উত্তর না দেওয়ায় সন্দেহ হয় সহকর্মীদের। তাঁরাই তখন আর এক সহকর্মী যিনি বাড়ি থেকে কাজ করছিলেন, তাঁকে জানান। তিনি পুণের অফিসে খোঁজ করেন। তখনই ঘটনাটি জানাজানি হয়।
কেন খুন? পুলিশের মতে, ভবেনের চাহনি আপত্তিকর মনে হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ জানাবেন বলেছিলেন রসিলা। তা নিয়ে কথা কাটাকাটি। রাগের মাথায় রসিলাকে খুন করে ভবেন।
পুলিশের দাবি, জেরায় ভবেন দাবি করেছে, রসিলাকে খুনের পর সে নিজেও ভয় পেয়ে আত্মহত্যা করতে অফিসের ছাদে উঠেছিল। তখন আর এক নিরাপত্তী রক্ষী তাকে বাধা দেয়। তখন অসমে মাকে ফোন করে ভবেন পুরো ঘটনা জানায়। মা তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলেছিলেন। কিন্তু সে পালাবে বলে স্থির করে। যদিও পুলিশের সন্দেহ, নিজেকে বাঁচানোর জন্যই ভবেন এই ‘মনগড়া’ কথাগুলি পুলিশকে বলেছে। কারণ, রসিলাকে খুনের সঙ্গে সঙ্গেই সে পালায়নি। বরং যত ক্ষণ কাজ করার কথা, সে দিনও ঠিক তত ক্ষণই অফিসে থেকে কাজ করেছিল সে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy