তখন: জুটিতে। ফাইল চিত্র
দু’জনেই দ্বারস্থ হাইকোর্টের। সশরীর নয়, নিজের নিজের আইনজীবীর মাধ্যমে। কারণ, জোড়া ধর্ষণের দায়ে সিবিআই বিশেষ আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়ে এক জন রয়েছে জেলে। আর তার জেলযাত্রার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন দ্বিতীয় জন।
ডেরা সচ্চা সৌদা প্রধান গুরমিত রাম রহিম সিংহ ইনসান ও প্রিয়াঙ্কা তানেজা ওরফে হানিপ্রীত। প্রথম জন পঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্টে চালেঞ্জ জানিয়েছে নিম্ন আদালতের রায়কে। আর দিল্লি হাইকোর্টে দ্বিতীয় জনের আর্জি, আগাম জামিন।
গুরমিতের আইনজীবী বিশাল গর্গ নারওয়ানার প্রশ্ন, দুই নির্যাতিতার বয়ান রেকর্ড করতে কেন ছ’বছর লেগে গেল সিবিআইয়ের? তাঁর দাবি, সিবিআই জানিয়েছিল, ১৯৯৯ সালে দুই ডেরা অনুগামীকে গুরমিত ধর্ষণ করলেও তারা ২০০৫ সালে ওই দুই নির্যাতিতার বয়ান রেকর্ড করে। বয়ানের অনেক কিছু আদালতের কাছে লুকিয়ে গিয়েছে সিবিআই।
তবে দিন যত এগোচ্ছে গুরমিতের সঙ্গে তার স্বঘোষিত ‘পালিত কন্যা’ হানিপ্রীতের সম্পর্ক নিয়ে জল্পনা ডালপালা মেলছে। সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি, গুরমিতের কাছএ একটি গোপন সন্তান চেয়েছিলেন হানিপ্রীত। যাকে পরবর্তী ডেরা-প্রধানের পদে বসানোর ইচ্ছে ছিল তাঁর। ডেরা অনুগামীদের অনেকেই জানিয়েছেন, গুরমিতের গোপন ডেরায় স্বামী-স্ত্রীর মতোই জীবন কাটাতেন দু’জনে। হানিপ্রীতের প্রাক্তন স্বামী বিশ্বাস গুপ্তও দিনকয়েক আগে সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটা দাবি করেছিলেন। গুরমিত ও হানিপ্রীতের ইচ্ছে ছিল, ওই সন্তান যেন ছেলেই হয়। সে ক্ষেত্রে ডেরার পরবর্তী প্রধান হতে আর কোনও বাধা থাকবে না সেই সন্তানের। তবে গুরমিতের ইচ্ছে ছিল, সরকারি ভাবে ওই সন্তানের বাবা হিসেবে বিশ্বাসের নাম রাখার। কিন্তু বিশ্বাসের সঙ্গে হানিপ্রীতের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ায় ওই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। বিশ্বাসের দাবি, হানিপ্রীতকে কোনও দিনই কন্যা হিসেবে দত্তক নেয়নি গুরমিত।
বিশ্বাসের বক্তব্যের সঙ্গে মিলে গিয়েছে গুরমিতের প্রাক্তন গাড়িচালক খাট্টা সিংহ ও তাঁর ছেলে গুরুদাস সিংহের বয়ানও। একটি টিভি চ্যানেলকে গুরুদাস জানিয়েছেন, বহু বছর আগে হানিপ্রীতকে নিয়মিত গুরমিতের ডেরায় ঢুকতে দেখতেন তিনি। হানিপ্রীত বেরিয়ে আসতেন কাঁদতে কাঁদতে। তা দেখেই তাঁর মনে হয়েছিল, প্রতি রাতেই ধর্ষিতা হতেন বিশ্বাসের তৎকালীন স্ত্রী হানিপ্রীত। গুরমিতের বিরুদ্ধে তখন অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। কারণ, হানিপ্রীতের দাদু ডেরার কোষাধ্যক্ষের কাজ করতেন। তিনি বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু করায় তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় গুরমিতের পোষা গুন্ডারা।
ডেরার দুই স্বাধ্বী গুরমিতের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। যার জেরে গুরমিত এখন জেলে। কিন্তু গুরুদাস সিংহ তুর নামে এক সাক্ষী জানিয়েছেন, হানিপ্রীত বেছেছিলেন অন্য পথ। তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া অত্যাচারের বদলা নিতে তিনি গুরমিতকে ব্ল্যাকমেল শুরু করেন। লক্ষ্য ছিল, গুরুমিত ও তাঁর গোপন ছেলেকে ডেরা-সাম্রাজ্যের সিংহাসনে বসিয়ে সব ক্ষমতার অধিশ্বরী হওয়া। এক সময়ে নিজের ছেলে জসমীত ইনসানকে পরবর্তী ডেরা-প্রধান ঘোষণা করে দিয়েও পরে সেই কারণেই বেঁকে বসেছিল গুরমিত।
রণজিৎ সিংহ হত্যা মামলায় গুরমিতের প্রাক্তন গাড়িচালক খাট্টা সিংহের নতুন বয়ান রেকর্ডের আর্জি আজ খারিজ করে দিয়েছে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। সাংবাদিক রামচন্দ্র ছত্রপতির মতোই ডেরার প্রাক্তন ম্যানেজার রণজিৎ সিংহ খুন হয়েছিলেন। এই জোড়া খুনে মূল অভিযুক্ত গুরমিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy