ঋণদাতাদের হাত থেকে বাঁচতে গুজরাতের আমদাবাদে সংসারের মায়া ত্যাগ করে ‘সন্ন্যাসী’ হয়ে গেলেন এক ব্যক্তি। পার্থ চুরাসামা, পেশায় এক জন ঠিকাদার। মাসখানেক আগে হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, পার্থর এই নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পিছনে ছিল অন্য গল্প।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে ভোটের আগে ঠিকাদার হিসাবে বেশ কয়েকটি কাজ ধরেছিলেন পার্থ। যা টাকা তাঁর হাতে ছিল তা দিয়ে পুরো কাজ শেষ করা সম্ভব হত না। শ্রমিকদের মাইনে দেওয়াও অসম্ভব ছিল। কাজ যখন ধরেছেন, শেষ তো করতেই হবে। তাই এক সুদের ব্যবসায়ী রাজু দেশাইয়ের কাছ থেকে মাসিক ২ শতাংশ হারে ২ লক্ষ টাকা ধার নেন তিনি। চার মাস পর সুদ সমেত ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা মেটাতে গেলে রাজু তা নিতে অস্বীকার করেন। উল্টে ৭ লক্ষ টাকা দাবি করেন এবং মাসিক ১০ শতাংশ হারে। টাকা না দিলে ফল ভুগতে হবে বলেও পার্থকে শাসান রাজু। এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ।
রাজুর টাকা মেটাতে পার্থ নিজের জমানো সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা তুলে নেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। আরও ২ লক্ষ টাকার জন্য ফের আর এক সুদের ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মাসিক ১০ শতাংশ হারে টাকা ধার নেন তিনি। রাজুকে ফের টাকা মেটাতে গেলে তিনি দাবি করেন, সুদসমেত সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা দিতে হবে। এক দিকে দ্বিতীয় সুদ ব্যবসায়ীর সুদসমেত ৩ লক্ষ টাকা এবং রাজুর সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা— আরও ফাঁপড়ে পড়েন পার্থ। এ বার সেই টাকা মেটাতে তৃতীয় সুদ ব্যবসায়ীর দ্বারস্থ হন পার্থ। চারটে ব্ল্যাঙ্ক চেকের বিনিময়ে তাঁর কাছ থেকে ৪ লক্ষ টাকা ধার করেন। ওই চার জনের টাকা মেটাতে আরও দুই ব্যক্তির এক জনের থেকে সাড়ে ৪ লক্ষ এবং অন্য জনের কাছ থেকে সাড়ে ১৩ লক্ষ টাকা ধার নেন। পরে আরও এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা নেন। এক জনের থেকে ধার নেওয়া টাকা অন্য জনকে মেটাতে গিয়ে ক্রমেই ঋণের জালে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়েন পার্থ। সব হিসেব করে দেখেন মাত্র ২০ লক্ষ টাকা শোধ করতে পেরেছেন। তখনও ৭০ লক্ষ টাকা ধার রয়েছে গিয়েছে। তার উপর আবার সুদ। ২ লক্ষ টাকা থেকে মাত্র তিন বছরে ৭০ লক্ষ টাকা দেনায় ডুবে যান পার্থ।