Advertisement
E-Paper

‘নমস্তে ট্রাম্প’! বস্তিতে উচ্ছেদ নোটিস

সূত্রের খবর, নোটিসটি ১১ ফেব্রুয়ারির। তাতে সাত দিন সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বস্তিবাসীরা গত কালই এই নোটিস হাতে পেয়েছেন।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:১১
উচ্ছেদ-নোটিস হাতে আমদাবাদের বস্তিবাসীরা। ছবি: পিটিআই।

উচ্ছেদ-নোটিস হাতে আমদাবাদের বস্তিবাসীরা। ছবি: পিটিআই।

শহরে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাই আমদাবাদের বিভিন্ন এলাকার বস্তি আড়াল করতে দেওয়াল তোলার কাজ শুরু হয়েছিল আগেই। সেই বিতর্কের রেশ কাটতে না-কাটতেই এ বার মোতেরা স্টেডিয়ামের কাছে একটি বস্তির ৪৫টি পরিবারকে রাতারাতি উচ্ছেদের নোটিস ধরাল আমদাবাদ পুরসভার নগরোন্নয়ন বিভাগ।

সূত্রের খবর, নোটিসটি ১১ ফেব্রুয়ারির। তাতে সাত দিন সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বস্তিবাসীরা গত কালই এই নোটিস হাতে পেয়েছেন। তাই এক দিনের মধ্যে এলাকা খালি করার নির্দেশে ফাঁপরে পড়েছেন ৪৫টি পরিবারের প্রায় ২০০ জন সদস্য। পুরসভার যদিও দাবি, এই নোটিস জবরদখল রুখতে। বস্তিবাসীদের মধ্যে কারও কোনও পাল্টা আর্জি থাকলে বুধবারের মধ্যে পুরসভায় যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

এখন যাবেন কোথায়? প্রশ্ন করতেই ঝাঁঝিয়ে উঠলেন বছর চব্বিশের পঙ্কজ দামোর— ‘‘পুরসভার লোকেরাই তো বলে গেল, ‘যেখানে খুশি যাও। এলাকা খালি করতেই হবে।’ জানি না, কী করব।’’ পঙ্কজ আমদাবাদ পুরসভারই চুক্তিভিত্তিক গাড়িচালক। তাঁর মতোই অথৈ জলে পড়েছেন বস্তিবাদীদের একটা বড় অংশ, যাঁরা ‘মজুর অধিকার মঞ্চের’ নথিভুক্ত শ্রমিক হিসেবে রোজ ৩০০ টাকার হিসেবে কাজ করেন। ২২ বছর ধরে এই বস্তিতেই আছেন বছর পঁয়ত্রিশের তেজা মেদা। তাঁর কথায়, ‘‘নোটিস দিতে এসে ওরাই তো বলে গেল ট্রাম্প আসছেন, তাই বস্তি খালি করতে হবে। এখন আমরা যাব কোথায়?’’ দাহোদ জেলার গারবাদা তালুক থেকে এসে এখানেই ঝুপড়িতে সংসার পেতেছিলেন বছর
তেত্রিশের মুকেশ বামবানিয়া। চারটি সন্তান তাঁর। দু’টি স্থানীয় একটি ট্রাস্টের স্কুলে পড়ে। উচ্ছেদের নোটিস হাতে নিয়েই মুকেশ বললেন, ‘‘ভাল ভাবে বাঁচতে চেয়েই আমদাবাদে এসেছিলাম। এখন বলছে, উঠে যাও। এখন আমার ছেলেমেয়েগুলোর
কী হবে?’’

মোতেরা স্টেডিয়াম থেকে দেড় কিলোমিটার দূরের এই বস্তিতে প্রায় ৬৫টি পরিবারের বাস। এখনও নোটিস না-পেলেও আতঙ্কে বাকি কুড়িটি পরিবার। ট্রাম্প-সফরের যে আর এক সপ্তাহও বাকি নেই! সূত্রের খবর, ২৪ ফেব্রুয়ারি আমদাবাদে আসছেন ট্রাম্প। থাকবেন ঘণ্টা তিনেক। বস্তি-আড়াল, দেওয়াল রং ইত্যাদি সব মিলিয়ে আমদাবাদের সৌন্দর্যায়নে খরচ হচ্ছে প্রায় ১০০ কোটি।

আমদাবাদ পুরসভার অবশ্য দাবি, বস্তি উচ্ছেদের সঙ্গে ট্রাম্প-সফরের কোনও সম্পর্ক নেই। নোটিসে যাঁর সই রয়েছে, সেই পুর-কর্তা কিশোর বর্ণার কথায়, ‘‘এ নিয়ে অহেতুক রাজনীতি করা হচ্ছে। নগরোন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে থাকা এই জমি বস্তিবাসীরা জবরদখল করে রেখেছিল বলেই উচ্ছেদের নোটিস ধরানো হয়েছে।’’ কিন্তু ১১ ফেব্রুয়ারির নোটিস বস্তিবাসীদের ১৭ ফেব্রুয়ারি ধরানো হল কেন? এর উত্তরে তাঁর ব্যাখ্যা— ‘‘দিনের দিন নোটিস পাঠানো সব সময় সম্ভব হয়ে ওঠে না।’’ মজুর অধিকার মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক মিনা যাদব যদিও প্রশাসনিক ষড়যন্ত্রের দিকেই আঙুল তুললেন।

Ahmedabad Motera Stadium
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy