Advertisement
E-Paper

ভারত-সহ দক্ষিণ এশিয়ায় ৭% চাকরি খেয়ে নেবে এআই! বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্টে উদ্বেগ, কারা কাজ হারাবেন, কারা নিরাপদ

সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাঙ্ক একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। রিপোর্টের নাম— ‘সাউথ এশিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট, জবস, এআই অ্যান্ড ট্রেড’। ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, মলদ্বীপ এবং শ্রীলঙ্কা— এই ছ’টি দেশের তথ্য সংগ্রহ করে এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৫ ১৬:০৫
কৃত্রিম মেধার কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে ‘হোয়াইট কলার জব’।

কৃত্রিম মেধার কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে ‘হোয়াইট কলার জব’। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

কৃত্রিম মেধা (এআই) আগামী দিনে বিশ্ব জুড়েই বিপুল ভাবে চাকরির বাজারে প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে বিভিন্ন মহল। এ বার সেই আশঙ্কার কথা শোনাল বিশ্ব ব্যাঙ্কও। তাদের রিপোর্ট বলছে, ভারত-সহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্তত ছ’টি দেশে সাত শতাংশ চাকরি খেয়ে নেবে এআই!

দৈনন্দিন জীবনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ঢুকে পড়ার পর থেকেই চাকরির বাজারে গেল-গেল রব। কারণ, এই প্রযুক্তি যন্ত্রের মতো কাজ তো করছেই, পাশাপাশি মানুষের মতো মাথা খাটানোরও প্রয়াস সর্ব ক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে সে। মুহূর্তের মধ্যে যে কোনও প্রশ্নের উত্তর দেওয়া তো বটেই, জরুরি মেল বা পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজ়েন্টেশনও অনায়াসে করে ফেলছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই প্রবণতায় শ্রমবাজারে বড় প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাঙ্ক একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। রিপোর্টের নাম— ‘সাউথ এশিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট, জবস, এআই অ্যান্ড ট্রেড’। ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, মলদ্বীপ এবং শ্রীলঙ্কা— এই ছ’টি দেশের তথ্য সংগ্রহ করে এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এআই প্রযুক্তির কারণে মূলত ব্যবসায়িক সংস্থা এবং তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের ‘মাঝারি শিক্ষিত’ এবং তরুণ কর্মীরাই ঝুঁকির মুখে পড়বেন। স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি ব্যবস্থার কারণে বিশ্বের উন্নয়নশীল অর্থনীতির ১৫ শতাংশ চাকরিই উবে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্টে।

বহুকাল ধরেই শ্রমবাজারকে সঙ্কুচিত করে এসেছে স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি। ‘জেনারেটিভ এআই’ সেই স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থারই উন্নততর মাধ্যম। ওপেনএআই-এর ‘চ্যাটজিপিটি’ই হল এক ধরনের জেনারেটিভ এআই। ধরা যাক, নিবন্ধ লেখা হবে। তার জন্য এত দিন কোনও বিষয়ে গুগল সার্চ করলে সার্চ ইঞ্জিন সে বিষয়ক তথ্য এক জায়গায় জড়ো করে দিত। সেগুলির কোনটা কাজের, কোনটা কাজের নয়— মানুষ নিজেই তা ঝেড়েবেছে নিয়েছে। সেইমতো নিজের প্রয়োজনে ওই তথ্য ব্যবহার করেছে। কিন্তু নয়া প্রযুক্তিতে নিজের প্রয়োজনটুকু জানালেই হল। সিস্টেমই তথ্য জোগাড় করে, তা সংশ্লেষ করে গোটা নিবন্ধটাই তৈরি করে দিচ্ছে। সে ছবি আঁকছে, কবিতা লিখছে। লেখা-আঁকা পছন্দ না-হলে, কোনও সংশোধন থাকলে, বিকল্পও হাজির করে দিচ্ছে মুহূর্তের মধ্যে। এই গোটা প্রক্রিয়ায় সে নিজেকেও ক্রমাগত শিক্ষিত করে তুলছে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্টে দাবি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রবণতাই অফিসের কাজ (হোয়াইট কলার জব) অনেকাংশে কমিয়ে দেবে। যাঁরা হিসাবের কাজকর্ম করেন বা গ্রাহক সহায়তা পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত, তাঁদেরই ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।

রিপোর্টে দাবি, উচ্চ আয়ের এবং অধিক-দক্ষতার চাকরি যাঁরা করেন, তাঁদের কাজ হারানোর সম্ভাবনা বেশি। বরং, নিম্ন আয়ের চাকরিজীবীরা কিছুটা নিরাপদে রয়েছেন। তবে এ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার দাম রয়েছে। যাঁরা অভিজ্ঞ, তাঁদের চাকরি হারানোর সম্ভাবনা কম। চাকরি যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি নবীনদের।

গণিতবিদ অ্যালান ট্যুরিং-এর ‘কম্পিউটিং মেশিনারি অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স’ (১৯৫০) গবেষণাপত্রের সূত্র ধরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তথা এআই-এর সম্ভাবনার বীজ বোনা হয় বলে মনে করা হয় বিজ্ঞানবিশ্বে। ওই গবেষণাপত্রের শুরুতে একটি প্রশ্ন ছিল, ‘ক্যান মেশিন থিঙ্ক?’ অর্থাৎ, সে কি চিন্তা করতে পারে? বিশেষজ্ঞদের মত, এখনও পর্যন্ত এই প্রশ্নের উত্তর ‘না’। এআই-এর দুর্দান্ত দক্ষতা থাকলেও, মানুষের নিউরাল নেটওয়ার্কের অকল্পনীয় ক্ষমতার অধিকারী সে হতে পারবে না। ফলে চাকরির বাজারকে এই প্রযুক্তি পুরোপুরি সঙ্কুচিত করে দেবে, এমন আশঙ্কা অমূলক বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।

AI world bank
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy