Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
সুনন্দার ময়না-তদন্ত

রিপোর্ট পাল্টাতে চাপের অভিযোগ ওড়াল এইমস

প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শশী তারুরের স্ত্রী সুনন্দা পুষ্করের মৃত্যুর ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাল্টাতে চাপ দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন এইমসের ফরেন্সিক বিভাগের প্রধান সুধীর গুপ্ত। একটি দৈনিকে সেই খবর আজ প্রকাশিত হওয়ার পরে সুনন্দা মৃত্যু-রহস্য নিয়ে ফের শুরু হয়েছে বিতর্ক। এইমস সুধীরের দাবি খারিজ করে জানিয়েছে, ওই চিকিৎসককে চাপ দেওয়া হয়েছিল, এমন তথ্য তাদের কাছে নেই।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৪ ০৩:২৩
Share: Save:

প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শশী তারুরের স্ত্রী সুনন্দা পুষ্করের মৃত্যুর ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাল্টাতে চাপ দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন এইমসের ফরেন্সিক বিভাগের প্রধান সুধীর গুপ্ত। একটি দৈনিকে সেই খবর আজ প্রকাশিত হওয়ার পরে সুনন্দা মৃত্যু-রহস্য নিয়ে ফের শুরু হয়েছে বিতর্ক। এইমস সুধীরের দাবি খারিজ করে জানিয়েছে, ওই চিকিৎসককে চাপ দেওয়া হয়েছিল, এমন তথ্য তাদের কাছে নেই।

কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের (ক্যাট) কাছে সুধীর চিঠি দিয়ে দাবি করেন, সুনন্দার ময়না-তদন্তের রিপোর্ট বদলে ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’ লেখার জন্য তাঁকে চাপ দেওয়া হয়েছিল। আজ সাংবাদিকরা এইমসে প্রশ্ন তোলেন, সুধীরকে কি বাইরে থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল? যার জবাবে এইমসের মুখপাত্র অমিত গুপ্ত বলেন, এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ কিছুই জানেন না। এইমসের জনসংযোগ অফিসার নীরজা ভাটিয়া বলেন, “বাইরে থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল, এমন প্রমাণ আমাদের হাতে নেই। সেই চাপের মুখে সুধীর কী করেছিলেন, তা-ও আমরা জানি না।”

এইমস সুধীরের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করবে কি? সে সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না কর্তৃপক্ষ। “যদি আমাদের মনে হয় বা আমরা কোনও নির্দেশ পাই, তা হলে ওই চিকিৎসককে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে”, দাবি মুখপাত্রের। তবে একটি সূত্রে দাবি, নিজের পদ আঁকড়ে থাকতে চান বলেই সুধীর এই সব অভিযোগ আনছেন।

ক্যাটের কাছে চিঠিতে সুধীর জানিয়েছেন, তিনি ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাল্টাতে রাজি ছিলেন না। তাই তাঁকে সরিয়ে অন্য এক ফ্যাকাল্টি সদস্যকে পদোন্নতি দিয়ে এইমসের ফরেন্সিক বিভাগের প্রধানের পদে বসানোর প্রক্রিয়া শুরু হয় ইউপিএ জমানাতেই। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সুধীর বলেন, “আমি কোনও মন্তব্য করব না। এটা আইনি বিষয়। আমি সরকারি কর্মচারী। যা বলার ঠিক জায়গাতেই বলেছি।” তবে তিনি এ-ও উল্লেখ করেছেন, “আমাকে বলা হয়েছিল, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের লোকজনের সঙ্গে আলোচনা না করে ময়না-তদন্তের বিষয়ে কিছুই বলা যাবে না। এক জন চিকিৎসক হিসেবে আমার মনে হয়েছিল, কোনও ময়না-তদন্তের রিপোর্টই পরিবর্তন করা অনৈতিক। তাই তখন সংবাদমাধ্যমে সঠিক বিবৃতি দিই। তাতে পক্ষপাত ছিল না।”

চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি দক্ষিণ দিল্লির এক পাঁচতারা হোটেলে মেলে সুনন্দা পুষ্করের মৃতদেহ। তার আগের দিনই পাক সাংবাদিক মেহর তারারের সঙ্গে স্বামী শশীর সম্পর্ক নিয়ে টুইটারে জোর বাগবিতণ্ডা হয়েছিল সুনন্দার।

কী ভাবে সুনন্দার মৃত্যু হয়েছিল, তা স্পষ্ট হয়নি। প্রাথমিক ভাবে সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির রিপোর্টে ইঙ্গিত ছিল, দু’টি ওষুধ মাত্রাতিরিক্ত খাওয়াতেই সম্ভবত মারা গিয়েছেন সুনন্দা। পরে এইমসের ময়না-তদন্তের রিপোর্ট দাবি করে, সুনন্দার দু’হাতে আঘাতের চিহ্ন ছিল। বাঁ হাতের তালুতে গভীর কামড়ের দাগ ছিল। গালেও বড় ক্ষত ছিল। যা ভারী কিছুর আঘাতে হওয়া সম্ভব।

বিষয়টি জানতে চেয়ে এইমসের কাছে কেন্দ্র আজ বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছে। হর্ষবর্ধন বলেছেন, “আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে সুধীর গুপ্ত আমাদের দফতরে তাঁর পদোন্নতি নিয়ে চিঠি লিখেছিলেন। কিন্তু কাল জানলাম তিনি বিশেষ অভিযোগ এনেছেন।”

দিল্লি পুলিশ কমিশনার বি এস বাসি জানান, তাঁরা সুধীরকে প্রশ্ন করতে পারেন। ফের জেরা করা হতে পারে শশীকেও। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে বিষয়টি জানিয়েছেন সিপি। এ দিন এক বিবৃতিতে শশী বলেছেন, “আমি এখনও চাই, দ্রুত তদন্ত শেষ করে সব রকম জল্পনা বন্ধ করা হোক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sunanda's forensic report aiims
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE