‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময় পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ানো তুরস্কের সংস্থা নয়। আমদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার যে বোয়িং সংস্থার ড্রিমলাইনার বিমান ভেঙে পড়েছে, তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এআইইএসএল ওরফে এয়ার ইন্ডিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস লিমিটেড। ২০২২-এ এয়ার ইন্ডিয়ার বেসরকারিকরণ করে তা টাটা গোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এয়ার ইন্ডিয়ার রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামতির সঙ্গে যুক্ত এই সংস্থা কেন্দ্রীয় সরকারের বিমান মন্ত্রকের মালিকানাধীন রয়ে গিয়েছে। মোদী সরকার চলতি বছরে নতুন করে এই সংস্থার বেসরকারিকরণে উদ্যোগী হয়েছিল। কিন্তু আমদাবাদের বিমান দুর্ঘটনার পরে এইআইইএসএল-এর বেসরকারিকরণে কোনও বাধা আসবে কি না, তা নিয়ে বিমান মন্ত্রকের কর্তাদের মধ্যে সংশয় দেখা গিয়েছে।
গত মাসে পহেলগামের হামলার জবাবে ভারতীয় সেনা ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে পাকিস্তানে সামরিক প্রত্যাঘাত করে। সেই সময়ে তুরস্ক পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে এর বিরোধিতা করেছিল। জবাবে এ দেশে ব্যবসায় যুক্ত তুরস্কের সংস্থাগুলির উপরে মোদী সরকারের কোপ নেমে আসে। এর পরেই এয়ার ইন্ডিয়ার সিইও ক্যাম্পবেল উইলসন জানিয়েছিলেন, বিমানের রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতি বা ‘এমআরও’ (মেনটেন্যান্স, রিপেয়ার, ওভারহল) পরিষেবার জন্য তুরস্কের ‘টার্কিশ টেকনিক’ সংস্থার উপরে নির্ভরতা কমিয়ে বিকল্প ব্যবস্থার খোঁজ চলছে। এয়ার ইন্ডিয়া গত বছরই সিঙ্গাপুরের ‘এসআইএ ইঞ্জিনিয়ারিং’ সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে বেঙ্গালুরুতে নিজস্ব এমআরও পরিষেবা তৈরির কাজ শুরু করেছে।
এইআইইএসএল-এর ওয়েবসাইট অনুযায়ী, তারাই এখন টাটা গোষ্ঠীর এয়ার ইন্ডিয়ার জন্য বোয়িং ৭৮৭ বিমানের রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতির কাজ করছে। বিমান মন্ত্রক সূত্রের অবশ্য বক্তব্য, এই সংস্থাটি দেশের সব থেকে বড় বিমান রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতি সংস্থা। ফলে তার বিলগ্নিকরণে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। সরকারি সূত্রের খবর, এআইইএসএল-এর সঙ্গে এয়ার ইন্ডিয়া এয়ার ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসেস, এয়ারলাইন অ্যালায়েড সার্ভিসেস বা অ্যালায়েন্স এয়ার ও হোটেল কর্পোরেশন ইন্ডিয়া সংস্থারও বিলগ্নিকরণের চেষ্টা চলছে। চলতি অর্থ বছরের বিলগ্নিকরণের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে এই সংস্থাগুলির নির্দিষ্ট পরিমাণ মালিকানা বেসরকারি সংস্থাকে বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এয়ার ইন্ডিয়ার বেসরকারিকরণের জন্য এয়ার ইন্ডিয়া অ্যাসেটস হোল্ডিং লিমিটেড নামে নতুন সংস্থা তৈরি করে তার অধীনে এই শাখা সংস্থাগুলিকে নিয়ে আসা হয়। এই সংস্থাগুলির বিলগ্নিকরণ করে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা ঘরে তুলতে চাইছে মোদী সরকার।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)