দিল্লিতে মেঘের ‘বীজ’ বুনেও কৃত্রিম বৃষ্টি নামানো যায়নি। দূষণের মাত্রা ঊর্ধ্বমুখী। তবে শুক্রবারের পরিসংখ্যান একটু হলেও স্বস্তি দিল। ‘অত্যন্ত খারাপ’ থেকে দিল্লির বাতাসের সামগ্রিক গুণমানের সূচক বা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ‘খারাপ’ হয়েছে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রক বোর্ড (সিপিসিবি)-এর তথ্য বলছে, শুক্রবার সকাল ৯টায় দিল্লিতে গড় একিউআই ছিল ২৬৮। বৃহস্পতিবার তা ছিল ৩৭৩। তবে দিল্লির কিছু এলাকায় শুক্রবারও বাতাসের মান সেই ‘অত্যন্ত খারাপ’-ই রয়ে গেল।
শুক্রবারও দিল্লির ১২টি জায়গায় একিউআই ছিল খুব বেশি। ওই এলাকাগুলিকে ‘লাল অঞ্চল’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে ওয়াজ়িরপুর, যেখানে শুক্রবার একিউআই ছিল ৩৫৫। বাওয়ানায় একিউআই ছিল শুক্রবার সকালে ৩৪৯।
সিপিসিবি-র তথ্য অনুযায়ী, একিউআই যদি ০-৫০ থাকে, তা হলে সেটি ভাল। ৫১-১০০ হলে সন্তোষজনক। ১০১-২০০ হলে মাঝারি। ২০১-৩০০ হলে খারাপ। ৩০১-৪০০ হলে অত্যন্ত খারাপ। ৪০১-৫০০ হলে ভয়ানক। সুতরাং দিল্লির কিছু এলাকায় শুক্রবারও বাতাসের গুণমান ‘অত্যন্ত খারাপ’-ই থাকল।
দিল্লিতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে মেঘের ‘বীজ’ বোনা হয়েছিল। যদিও কৃত্রিম বৃষ্টি নামেনি। বিমান থেকে রাজধানীর উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে খেকরা, বুরারি, ময়ূরবিহার এবং করোলবাগে মেঘের উপর ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল সিলভার আয়োডাইড জাতীয় রাসায়নিক এবং ভোজ্য লবণ। কৃত্রিম ভাবে বাড়ানো হয় শুষ্ক মেঘের আর্দ্রতা। সাধারণত, এই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে যে কোনও সময় বৃষ্টি হয়। তবে দিল্লিতে বৃষ্টি নামেনি।
এই অবস্থায় স্বাভাবিক ভাবেই সেই দূষণের প্রভাব পড়ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যে। সম্প্রতি এই নিয়ে সমীক্ষা করেছে ‘লোকালসার্কলস’ নামে একটি সংস্থা। তাদের সমীক্ষা বলছে, দিল্লি এবং এনসিআরে প্রতি চারটি বাড়ির মধ্যে তিনটিতেই অন্তত এক জন করে অসুস্থ। সেই অসুস্থতার নেপথ্যে রয়েছে দিল্লি এবং এনসিআরের দূষিত বাতাস। এই দূষিত বাতাসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে মরসুমি ভাইরাস। আর তাতেই রোগের বাড়বাড়ন্ত।
দিল্লি, গুরুগ্রাম, নয়ডা, ফরিদাবাদ, গাজ়িয়াবাদের ১৫ হাজার জনের সঙ্গে কথা বলেছেন সমীক্ষাকারী দলের সদস্যেরা। তাঁরা দেখেছেন, গত কয়েক মাসে দেশের রাজধানী এবং এনসিআরের ঘরে ঘরে অসুখ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে দিল্লি এবং এনসিআরের ৫৬ শতাংশ পরিবারে অন্তত এক জন করে অসুস্থ ছিলেন। সম্প্রতি সেই হার বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭৫ শতাংশ। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এইচ৩এন২ ইনফ্লুয়েঞ্জা, অন্য ভাইরাসজনিত রোগের প্রকোপ সম্প্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে।