Advertisement
E-Paper

এনডিএ-তে থেকেই মহারাষ্ট্রের পুরনির্বাচনে কাকা শরদের সঙ্গে জোট বাঁধলেন অজিত! কেন ‘দুই নৌকায়’ পা, ব্যাখ্যাও করলেন তা

এনডিএ শিবিরে থেকেও পিম্পরি-চিঞ্চওয়াড় পুরনিগমের ভোটে কাকা শরদ পওয়ারের দলের সঙ্গে জোট চূড়ান্ত করার কথা ঘোষণা করলেন ভাইপো অজিত পওয়ার। কী কারণে ওই পুরনিগমের ভোটে এনসিপি (এসসিপি) এবং তাঁর এনসিপি জোট বাঁধার সিদ্ধান্ত নিল, তা-ও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:৩০
(বাঁ দিকে) অজিত পওয়ার এবং শরদ পওয়ার (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) অজিত পওয়ার এবং শরদ পওয়ার (ডান দিকে)।

বিবাদ ভুলে ঠাকরে ভাইয়েরা জোট বাঁধার কথা ঘোষণা করেছেন কিছু দিন আগেই। মহারাষ্ট্রের পুরনির্বাচন এ বার মিলিয়ে দিল পওয়ার পরিবারকেও। এনডিএ শিবিরে থেকেও পিম্পরি-চিঞ্চওয়াড় পুরনিগমের ভোটে কাকা শরদ পওয়ারের দলের সঙ্গে জোট চূড়ান্ত করার কথা ঘোষণা করলেন ভাইপো অজিত পওয়ার। কী কারণে ওই পুরনিগমের ভোটে এনসিপি (এসসিপি) এবং তাঁর এনসিপি জোট বাঁধার সিদ্ধান্ত নিল, তা-ও ব্যাখ্যা করেছেন মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত।

রবিবার পিম্পরি-চিঞ্চওয়াড়ের একটি জনসভা থেকে অজিত বলেন, “পুরনির্বাচনের প্রার্থিতালিকা চূড়ান্ত করার সময় দুই শিবির একসঙ্গে ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে পরিবার ফের জোড়া লেগেছে। এর ফল কী হবে, তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠছে। কিন্তু অনেক সময় মহারাষ্ট্রের উন্নয়নের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।” দুই দলের আসন সমঝোতার বিষয়টিও শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে বলে জানান অজিত।

আগামী ১৫ জানুয়ারি বৃহন্মুম্বই, পিম্পরি-চিঞ্চওয়াড়-সহ মহারাষ্ট্রের মোট ২৯টি পুরনিগমে নির্বাচন হবে। ভোটগণনা হবে পরের দিন, ১৬ জানুয়ারি। পুণে পুরনিগমের নির্বাচনে আসন সমঝোতার বিষয়ে দুই এনসিপির মধ্যে একপ্রস্ত কথা হয়েছিল। কিন্তু শেষমেশ সেই আলোচনা ভেস্তে গিয়েছে বলেই খবর। তার পর থেকে মহারাষ্ট্রের এনডিএ বিরোধী জোট মহাবিকাশ অঘাড়ী (এমভিএ)-র সঙ্গেই আসন সমঝোতা চূড়ান্ত করতে চাইছে শরদের দল। বিষয়টি নিয়ে অসন্তুষ্ট এমভিএ-র অন্য দুই বড় শরিক কংগ্রেস এবং শিবসেনা (ইউবিটি)। যদিও রবিবার পুরনির্বাচনে আসনরফা নিয়ে এমভিএ-র আলোচনায় যোগ দেয়নি শরদের এনসিপি। তাই তাদের অবস্থান নিয়ে জল্পনা আরও জোরালো হয়েছে।

ইতিমধ্যেই বৃহন্মুম্বই পুরনিগমে পুরনো বিবাদ ভুলে জোট বেঁধে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা এবং রাজ ঠাকরের মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস)। প্রচারে মরাঠি অস্মিতার উপর জোর দিচ্ছেন দুই ভাই। এই পরিস্থিতিতে ওই পুরনিগমে মরাঠি ভোটব্যাঙ্কে ভাঙন রুখতে একনাথ শিন্দের শিবসেনার সঙ্গে জোট বজায় রেখেই লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। আর এখানেই গুরুত্ব কমেছে এনডিএ-র আর এক শরিক দল, অজিতের এনসিপির। ইতিমধ্যেই পুণেতে একলা লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। অন্য পুরনিগমগুলিতেও এনডিএ-র শরিক দলগুলির মধ্যে জোট মসৃণ হবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। এই পরিস্থিতিতে ‘চাপে পড়া’ অজিত বিকল্প রাস্তা খুলে রাস্তা খুলে রাখলেন বলে মনে করছেন অনেকে।

পুরনির্বাচনের সঙ্গে অনেক স্থানীয় বিষয় জড়িয়ে থাকে। তাই জাতীয় কিংবা রাজ্য রাজনীতির চেনা সমীকরণ বহু সময়েই স্থানীয় এই নির্বাচনে কাজ করে না। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে দুই পওয়ারের কাছাকাছি আসা খুব চমকপ্রদ কোনও ঘটনা নয়। কিন্তু রবিবার অজিত ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে বলেছেন, “(পওয়ার) পরিবারের পুনর্মিলন শুরু হয়েছে।” তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে জল্পনা শুরু হয়েছে।

২০২৩ সালের ২ জুলাই এনসিপি-তে বিদ্রোহ ঘটিয়ে শরদের অমতেই বিজেপির হাত ধরেন অজিত। মহারাষ্ট্রে একনাথ শিন্দের শিবসেনা এবং বিজেপির জোট সরকারের শরিক হয়ে উপমুখ্যমন্ত্রী হন। অজিতের বিদ্রোহের পরেই এনসিপির অন্দরের সমীকরণ বদলে গিয়েছিল। অজিত-সহ ন’জন বিদ্রোহী এনসিপি বিধায়কের মন্ত্রিত্ব এবং ভাল দফতর লাভের পরে পরিষদীয় দলের অন্দরে ক্রমশ তাঁর শিবিরের পাল্লা ভারী হতে থাকে। সাংসদদের একাংশও তাঁর দিকে যান।

শেষ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে এনসিপির নিয়ন্ত্রণ যায় অজিতের হাতেই। দলের নাম নির্বাচনী প্রতীক ঘড়ির তাঁর গোষ্ঠীর জন্যই বরাদ্দ করা হয়। শরদের নেতৃত্বাধীন এনসিপি পরিচিত হয় এনসিপি (শরদচন্দ্র পওয়ার) নামে। নির্বাচনী প্রতীক হয় ‘তুতারি’ (পশ্চিমি বাদ্যযন্ত্র ট্রাম্পেটের মরাঠি সংস্করণ)। নাম ও প্রতীক হারিয়েও ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে বাজিমাত করেছিলেন শরদ। জিতেছিলেন আটটি আসনে। অন্য দিকে, চারটিতে লড়ে অজিতের দল জিতেছিল মাত্র একটি আসনে। বারামতী কেন্দ্রে অজিতের স্ত্রী সুনেত্রা পওয়ার হেরে যান শরদ-কন্যা সুপ্রিয়ার কাছে।

এর পর সঙ্ঘ পরিবার এবং বিজেপির অন্দরে অজিতকে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু লোকসভা ভোটের ছ’মাসের মাথাতেই মরাঠা রাজনীতিতে চমকপ্রদ প্রত্যাবর্তন ঘটে অজিতের। তাঁর নেতৃত্বাধীন এনসিপি ৫৯টিতে লড়ে জেতে ৪১টিতে। অন্য দিকে, ৮৬টি বিধানসভা আসনে প্রার্থী দিয়ে এনসিপি (শরদ)-র ঝুলিতে গিয়েছিল মাত্র ১০টি আসন!

NCP Ajit Pawar Sharad Pawar Maharashtra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy