অবৈধ মাটি খনন বন্ধ করতে গিয়ে মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ারের রোষের মুখে পড়লেন এক মহিলা আইপিএস অফিসার। কার্যত হুমকির সুরে ওই অফিসারকে অজিত বলেন, ‘‘আপনার এত স্পর্ধা?’’ এখানেই থামেননি তিনি। মহিলা অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন। গোটা ঘটনার ভিডিয়ো (যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম) সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে হইচই পড়ে গিয়েছে। সমালোচনা শুরু হয়েছে বিরোধী মহলে। তবে এনসিপির (অজিত পওয়ার গোষ্ঠী) বক্তব্য, মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রীর কথার ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।
ঘটনাটি গত ৩১ অগস্টের। সোলাপুরের করমালা এলাকার কুর্দু গ্রামের রাস্তা নির্মাণকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সূত্রপাত। সেই রাস্তা নির্মাণের জন্য অবৈধ ভাবে মাটি খনন করা হচ্ছে, এমন অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোন ওই মহকুমার মহিলা আইপিএস আধিকারিক অঞ্জনা কৃষ্ণা। বিষয়টি খতিয়ে দেখে অবিলম্বে খনন বন্ধ করার নির্দেশ দেন তিনি। তাঁর নির্দেশে স্থানীয় পুলিশ হস্তক্ষেপ করতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। স্থানীয় এনসিপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়ায় পুলিশ।
দুই পক্ষের বাগ্বিতণ্ডার মধ্যে স্থানীয় এনসিপি নেতা জগতাপ যাদব ফোন করেন অজিতকে। পুরো বিষয়টি জানান তাঁকে। তার পরেই অজিত কথা বলতে চান অঞ্জনার সঙ্গে। ঘটনাটির ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। ফোনের ও পার থেকে নিজেকে অজিত পওয়ারের পরিচয় দিয়ে ওই ব্যক্তি পুলিশকে পদক্ষেপ করতে নিষেধ করেন। তবে কথোপকথন সেখানেই শেষ নয়। অঞ্জনা জানান, তিনি অজিতের কথা স্পষ্ট বুঝতে পারছেন না। অঞ্জনা ফোনে বলেন, ‘‘আমি বুঝতে পারছি না যে আমি উপমুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছি কি না! দয়া করে আমার মোবাইল নম্বরে ফোন বা হোয়াট্সঅ্যাপ করুন।’’
অঞ্জনার কথায় রেগে যান ফোনের ও পারে থাকা ওই ব্যক্তি। পাল্টা হুঁশিয়ারির সুরে ওই মহিলা আইপিএস আধিকারিককে বলেন, ‘‘আমি আপনার সঙ্গে কথা বলছি, আর আপনি আমাকে সরাসরি ফোন করার কথা বলছেন? আমি তোমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। তুমি আমাকে দেখতে চাও? আশা করি তুমি আমার মুখ চেনো।’’ অঞ্জনার ‘স্পর্ধা’ নিয়ে প্রশ্নও তোলা হয়। পরে ভিডিয়ো কলে ওই মহিলা আইপিএস আধিকারিকের সঙ্গে কথা হয় অজিতের।
আরও পড়ুন:
অজিত এবং অঞ্জনার ফোনের কথোপকথন ভাইরাল হতেই আসরে নেমেছে বিরোধীরা। তাদের প্রশ্ন, রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী হয়ে কী ভাবে অজিত এক জন মহিলা পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে এমন ব্যবহার করতে পারেন? তবে এনসিপির মতে, বিষয়টি নিয়ে ইচ্ছাকৃত ভাবে বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে। অজিত কখনই পুলিশ আধিকারিকের পদক্ষেপ বন্ধ করতে বলেননি। এনসিপির মুখপাত্র আনন্দ পরাঞ্জপে দাবি করেছেন, ভিডিয়োটি ভাইরাল করে রং চড়ানোর ষড়যন্ত্র চলছে।
অঞ্জনা আদতে কেরলের বাসিন্দা। তবে দিন কয়েক আগে তাঁর পোস্টিং হয় মহারাষ্ট্রে। ভাইরাল এই ভিডিয়ো নিয়ে যদিও কোনও মন্তব্য করতে চাননি অঞ্জনা বা জেলার অন্য পুলিশ আধিকারিকেরা।