Advertisement
E-Paper

শংসাপত্র নষ্ট, জীবনও শেষ

বন্যার তাণ্ডবে তছনছ বাড়ির অবস্থা দেখে ভেঙে পড়ছে বহু পরিবার। দ্বাদশ শ্রেণির শংসাপত্র জলে ভিজে নষ্ট হয়ে গিয়েছে দেখে উদ্বেগে কোঝিকোড়ে আত্মঘাতী হয়েছেন এক যুবক। তাই বৃষ্টি খানিক রেহাই দিলেও কেরল জুড়ে এখন শুধু হারানোর যন্ত্রণা।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৮ ০৪:২৮
ত্রাণের বেলা... খাবারের থালা হাতে খুদে। কোচির এক অস্থায়ী ত্রাণ শিবিরে। সোমবার। ছবি: রয়টার্স।

ত্রাণের বেলা... খাবারের থালা হাতে খুদে। কোচির এক অস্থায়ী ত্রাণ শিবিরে। সোমবার। ছবি: রয়টার্স।

দিকে দিকে জল সরছে। ধ্বংসস্তূপে মিলছে আরও দেহ। কোথাও আবার জলে ভাসছে মরা পশু। বন্যা-বিধ্বস্ত কেরলের চেঙ্গান্নুরের আশপাশে পাঁচটি গ্রামে এখনও আটকে অন্তত এক হাজার মানুষ। কোদাগু জেলার ১৩টি গ্রাম পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। সোমবার জলের তোড় সরে যাওয়ার পরে উঠে আসছে একের পর এক ধ্বংসের ছবি।

বন্যার তাণ্ডবে তছনছ বাড়ির অবস্থা দেখে ভেঙে পড়ছে বহু পরিবার। দ্বাদশ শ্রেণির শংসাপত্র জলে ভিজে নষ্ট হয়ে গিয়েছে দেখে উদ্বেগে কোঝিকোড়ে আত্মঘাতী হয়েছেন এক যুবক। তাই বৃষ্টি খানিক রেহাই দিলেও কেরল জুড়ে এখন শুধু হারানোর যন্ত্রণা।

ত্রাণ শিবির থেকে সোমবার বাড়ি ফিরে বাগ্‌রুদ্ধ সুরেশ জনের পরিবার। ত্রিশূরের চালাকুডিতে দোতলা বাড়ি তাঁদের। কয়েক দিন আগে হুড়হুড় করে জল ঢুকছে দেখে দ্রুত দোতলায় উঠে গিয়েছিল গোটা পরিবার। কিন্তু জল যখন প্রায় ১০ ফুট উচ্চতা ছুঁয়েছে, তখন আর উপায় ছিল না। বাড়ি ছেড়ে বেড়িয়ে পড়েন সকলে। বাড়ি তখন ডুবুডুবু। পোষ্য কুকুরটিকে তাঁরা নিয়ে যেতে পারেননি। ফিরে এসে জন পরিবারের একমাত্র আনন্দ বলতে, সেই পোষ্যকে জীবন্ত দেখতে পাওয়া। বাড়ির মেঝে-সিঁড়ি-দেওয়াল এখন ভর্তি কাদাজলে। ধুয়েমুছে গিয়েছে বইপত্র, ফাইল, জরুরি কাগজ। আসবাব সব ওলোটপালট। জনের কথায়, ‘‘সব কিছু নতুন করে গড়তে অনেক সময় লাগবে। আমার কাছে এত টাকাও নেই।’’ তাঁর মেয়ে কিশোরী এলসা বলছে, ‘‘নতুন-পুরনো, সব বই হারিয়ে গিয়েছে। আমার আর আমার দিদির। যদি অন্তত সার্টিফিকেটগুলো বাঁচাতে পারতাম!’’

এলসার মতো ধৈর্য দেখাতে পারেননি কোঝিকোড়ের ১৯-এর তরুণ কৈলাস। সদ্যই একটি আইটিআই-এ ভর্তি হয়েছিলেন। দিন তিনেক আগে বাবা-মায়ের সঙ্গে ত্রাণশিবিরে চলে যেতে বাধ্য হন। বাবা পেশায় শ্রমিক। বৃষ্টি কমার পরে ওই তরুণ ঘরে ফিরে দেখেন, তাঁর উচ্চমাধ্যমিকের শংসাপত্র জলে ভিজে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তার পরে ছেলের সঙ্গে আর কথা হয়নি বাবা-মায়ের। কিছু ক্ষণ পরে ঘর পরিষ্কার করতে ঢুকে বাবা-মা দেখেন, গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে ছেলে! পুলিশ জানিয়েছে, কৈলাসের বাবা-মাকে সামলানো যাচ্ছে না। বন্যায় সব হারিয়ে ছেলেকে আঁকড়েই বাঁচবেন ভেবেছিলেন। সে-ও রইল না।

চেঙ্গান্নুরের এক মহিলার আফশোস, ‘‘আধার, রেশন কার্ড, অন্য পরিচয়পত্র— কিছুই আর নেই। শুধু নিজে বেঁচে আছি। আত্মীয়দের এখনও সে খবরটাও দিতে পারিনি।’’

Flood Kerala Death Certificate
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy