উত্তরপ্রদেশের পড়ুয়ার গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টায় এ বার সরাসরি অভিযোগ উঠল কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। ফি দিতে না-পারায় অধ্যক্ষ ওই পড়ুয়াকে অপমান করেছিলেন বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, পড়ুয়ার চুলের মুঠি ধরে টানা এবং তাঁকে মারধর করারও অভিযোগ উঠেছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। গায়ে আগুন দেওয়ার দু’দিন আগে রেকর্ড করা এক ভিডিয়োয় এমনটাই দাবি করেছেন ওই প়ড়ুয়া। ভিডিয়োয় পড়ুয়ার দাবি, অধ্যক্ষ তাঁকে বলেছিলেন, “এই কলেজটা কোনও ধর্মশালা নয়।”
উত্তরপ্রদেশের মুজফ্ফরনগর জেলার বুধানার ওই কলেজছাত্র গত শনিবার দুপুরে কলেজেরই ক্যাম্পাসে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। অভিযোগ, তাঁকে তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষায় বসতে দিচ্ছিলেন না কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেই কারণেই তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বর্তমানে ৭০ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় দিল্লির এক হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে ওই পড়ুয়ার। উজ্জ্বল রানা নামে ২০ বছর বয়সি ওই পড়ুয়া আত্মহত্যার চেষ্টার দু’দিন আগেই একটি ভিডিয়ো রেকর্ড করেছিলেন। ওই ভিডিয়োয় তিনি দাবি করেছেন, কোনও ভাবে তিনি ১৭০০ টাকা জোগাড় করেছিলেন কলেজ ফি দেওয়ার জন্য। কিন্তু আরও ৭০০০ টাকা দেওয়া বাকি ছিল।
প্রকাশ্যে আসা ওই ভিডিয়োয় উজ্জ্বল বলেন, “তাঁরা (কলেজ কর্তৃপক্ষ) আমার পরীক্ষার ফর্ম জমা নিচ্ছিলেন না। অধ্যক্ষ সকলের সামনে আমাকে অপমান করে বলেন, ‘এই কলেজ কোনও ধর্মশালা নয়।’ তিনি আমার চুলের মুঠি ধরে টানেন। আমাকে মারধর করেন। যখন আমি ফি দিতে না-পারা পড়ুয়াদের হয়ে কথা বলি, তখন তিনি কলেজে পুলিশ ডাকেন। পুলিশকর্মীরাও আমাকে কুকথা বলেন এবং কলেজ থেকে ধাক্কা দিয়ে বার করে দেওয়া হয়।” তাঁর কিছু হয়ে গেলে কলেজের অধ্যক্ষ এবং ওই পুলিশকর্মীরাই দায়ী থাকবেন বলে ভিডিয়োবার্তায় বলেছিলেন উজ্জ্বল।
আরও পড়ুন:
শনিবারের ওই ঘটনার পরে সন্ধ্যায় মুজফ্ফরনগরের জেলাশাসক উমেশ মিশ্র এবং সিনিয়র পুলিশ সুপার সঞ্জয়কুমার বর্মা কলেজ পরিদর্শনে যান। আধিকারিকদের তদন্তেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দগ্ধ ওই পড়ুয়ার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে কলেজের অধ্যক্ষ এবং অন্যদের বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু করেছে পুলিশ। পড়ুয়াকে পুলিশি হেনস্থার অভিযোগ প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’কে জানান, বিষয়টি তাঁদের নজরে এসেছে। যদিও কোনও পুলিশকর্মীর কোনও যোগ পাওয়া যায়, তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।