Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Central Governement

তামিলনাড়ুর ভোট নিয়ে বৈঠক শাহের

২৩৪ আসনের তামিলনাড়ুতে এই মুহূর্তে এক জনও বিধায়ক নেই বিজেপির। ফলে একলা চলতে গিয়ে রাজ্যে দলের অস্তিত্ব মুছে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও মনে করছেন অনেকে।

এমজিআর এবং জয়ললিতার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শাহের। চেন্নাইয়ে। পিটিআই

এমজিআর এবং জয়ললিতার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শাহের। চেন্নাইয়ে। পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২০ ০৬:৫২
Share: Save:

বছর ঘুরলে পশ্চিমবঙ্গের মতোই বিধানসভা ভোট তামিলনাড়ুতে। বাংলা জয়ের লক্ষ্যে ঝাঁপানোর পাশাপাশি দ্রাবিড় ভূমিতেও পদ্ম ফোটানোর চেষ্টায় নেমে পড়লেন অমিত শাহ। রাজ্যে ভোটের কৌশল কী হবে তা ঠিক করতে আজ সারা দিন চেন্নাইয়ে দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন তিনি।

মেট্রো প্রকল্পের উদ্বোধন উপলক্ষে এ দিন চেন্নাই গিয়েছিলেন শাহ। প্রথা ভেঙে বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা এনডিএ-র শরিক দল এডিএমকের নেতা কে পলানিস্বামী। ছিলেন উপমুখ্যমন্ত্রী ও পনীরসেলভম এবং রাজ্য বিজেপি সভাপতি এল মুরুগন। বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে রাস্তার দু'ধারে উপস্থিত বিজেপি ও এডিএমকে সমর্থকদের দেখে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন শাহ। বেশ কিছুটা রাস্তা হাঁটেন তিনি। হাত নাড়েন জনতার উদ্দেশে।

এর পর হোটেলে পৌঁছে তামিলনাড়ুর বিধানসভা নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা সি টি রবি ও রাজ্য সভাপতি মুরুগনের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন শাহ। মূলত ব্রাহ্মণ ও উচ্চবর্ণের দল হিসেবে পরিচিত বিজেপি কী ভাবে দ্রাবিড় ভূমিতে প্রভাব বৃদ্ধি করতে পারবে তা নিয়ে আলোচনা হয়।

এনডিএ শরিক হিসেবে ২০১৪ সাল থেকে নরেন্দ্র-মোদী-অমিত শাহদের প্রায় সব সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে এসেছে এডিএমকে। কিন্তু দ্বিতীয় মোদী সরকারের আমলে জাতীয় শিক্ষানীতির মাধ্যমে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া, তামিল ভাষায় সর্বভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা না দিতে পারার অভিযোগ উঠলে, তামিল জাত্যাভিমানকে মাথায় রেখে মোদী সরকারের নীতির বিরোধিতায় সরব হন পলানিস্বামীরা। সেই বিরোধ সম্প্রতি প্রবল আকার নেয় বিজেপির ভেট্রিভেল যাত্রায় রাজ্য সরকারের সায় না মেলায়। হিন্দু ভোটকে একজোট করার লক্ষ্যে এই যাত্রা করতে চেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু করোনা সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় অনুমতি দেয়নি প্রশাসন।

আজ শাহের উপস্থিতিতে পলানিস্বামী যতই আগামী নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে লড়ার আশ্বাস দিন না কেন, রাজ্য বিজেপির বড় অংশ কিন্তু একলা চলার পক্ষে। বিশেষ করে গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-এডিএমকে জোটের পরাজয়ের পর থেকেই ওই দাবি ক্রমশ বেড়েছে দলের অভ্যন্তরে। সি টি রবির মতো নেতাদের যুক্তি, তামিলনাড়ুতে যদি ভবিষ্যতে বিজেপিকে ক্ষমতায় আসতে হয়, তা হলে এখনই শাসক দলের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করা উচিত। এডিএমকের ছায়ায় থেকে বিজেপির পক্ষে রাজ্যে কোনও দিন প্রভাব বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে না। উল্টে বিজেপির সঙ্গে জোট করে ফায়দা কুড়িয়ে নেবে এডিএমকে-ই। তাই হয় একলা চলা, না হলে অভিনেতা রজনীকান্ত বা বিজয়কান্তের ডিএমডিকে-র মতো ছোট দলের সঙ্গে জোট করার পক্ষপাতী তাঁরা।

বিজেপির সঙ্গে জোট করার কথা বলে ডিএমকে থেকে বিতাড়িত হয়েছেন করুণানিধি-পুত্র আলাগিরি। সূত্রের খবর, রাতে আলাগিরির ঘনিষ্ঠ কে পি রামলিঙ্গমের সঙ্গেও বৈঠক করেন শাহ।

২৩৪ আসনের তামিলনাড়ুতে এই মুহূর্তে এক জনও বিধায়ক নেই বিজেপির। ফলে একলা চলতে গিয়ে রাজ্যে দলের অস্তিত্ব মুছে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও মনে করছেন অনেকে। বিজেপি সূত্রের মতে, সেই কারণেই মেপে পা ফেলার পক্ষপাতী শাহ। বিশেষ করে যখন রাজ্যসভায় বিল পাশ করাতে এডিএমকের সমর্থন প্রয়োজন, তখন তড়িঘড়ি জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে দ্বিধায় রয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE