Advertisement
২৫ মার্চ ২০২৩
নোট-ধাক্কা

মমতার সেই জৌলুস নেই, কটাক্ষ অমিতের

উত্তরপ্রদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে তিনি মায়াবতীর সমালোচনা করবেন সেটা প্রত্যাশিত। কিন্তু আজ শাহজাহানপুরের জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও নিশানা করলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:০৬
Share: Save:

উত্তরপ্রদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে তিনি মায়াবতীর সমালোচনা করবেন সেটা প্রত্যাশিত। কিন্তু আজ শাহজাহানপুরের জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও নিশানা করলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। মায়া-মমতাকে এক বন্ধনীতে রেখে অমিতের কটাক্ষ,‘‘যারা টাকা লুকিয়ে রেখেছে, তারাই শুধু নোট বাতিলের ঘটনায় উদ্বিগ্ন। আপনারা কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মায়াবতীকে হালফিলে দেখেছেন? ওঁদের চেহারার জৌলুসই হারিয়ে গেছে। এক রাতেই ওঁদের বয়স বেড়ে গিয়েছে দশ বছর।’’

Advertisement

রাজনৈতিক আক্রমণে বিজেপি সভাপতি বরাবরই চাঁচাছোলা। কিন্তু দুই নেত্রীর ‘চেহারার জৌলুস’ নিয়ে অমিতের মন্তব্যে স্বাভাবিক ভাবেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে জাতীয় রাজনীতিতে। প্রতিক্রিয়ায় খোদ মায়াবতী পাল্টা বলেন,‘‘নোট যন্ত্রণায় মানুষের চেহারার রং উড়ে যাচ্ছে। ৯০ শতাংশ গরিব ও মধ্যবিত্ত এর ফলে ভুগছেন। নিজের দলের সাংসদদের থেকেই খবর নিন না প্রধানমন্ত্রী।’’ অমিতের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্বও। দলের মহা সচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন,‘‘গোটা দেশে গুজরাতের গুণ্ডারাজ কায়েম করতে চাইছেন অমিত শাহ। রাজনৈতিক শালীনতা বোধটুকুও হারিয়ে ফেলেছেন উনি। নেত্রী অনুমতি দিলে সোমবার রাজ্য বিজেপি-র সদর অফিসের সামনে ওঁর কুশপুতুল পোড়াবে তৃণমূলের ছাত্র যুব সংগঠনের সদস্যরা।’’

তবে রাজনীতির কারবারিদের মতে, এ সব চাপানউতোরের উর্ধ্বে বৃহৎ রাজনীতিটাই এখানে তাৎপর্যপূর্ণ। প্রশ্ন হল, উত্তরপ্রদেশে ভোট প্রচারে বেরিয়ে বেছে বেছে কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনায় আক্রমণাত্মক হলেন বিজেপি সভাপতি? অনেকে মনে করছেন, কারণটা সহজ। কদিন আগে এই উত্তরপ্রদেশে গিয়ে নোট সঙ্কট নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন মমতা। বলেছিলেন,‘‘মানুষকে যিনি নোট বন্দি করেছেন, উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে তাঁকে ভোট বন্দি করুন।’’ দ্বিতীয়ত, মানুষের নোট দুর্ভোগের প্রতিবাদে জাতীয় রাজনীতিতে সমস্ত বিরোধী দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে মমতা যে রকম অনুঘটকের ভূমিকা নিয়েছেন তাতেও গাত্রদাহ হচ্ছে মোদী-অমিত শাহদের। ফলে তাঁরা কৌশল নিয়েছেন, যাঁরা নোট বাতিলের বিরোধিতা করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হবে। ঠিক যে কথাটা প্রধানমন্ত্রী গতকাল বলেছেন,-বিজেপি টুজি দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংসদ অচল করেছিল। আর এখন বিরোধীরা কালো টাকার বিরুদ্ধে অভিযানে আপত্তি জানিয়ে সংসদ অচল করছেন।

কেউ কেউ আবার মনে করছেন, মমতাকে নিশানা করার নেপথ্যে অমিত শাহদের আরও একটি কৌশল থাকতে পারে। তা হল বিরোধী ঐক্যে ফাটল ধরানো। আর সেই কারণেই মমতা-মায়াবতীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে। যাতে নীতীশ কুমারের মতো বিরোধী শিবিরের অন্য দলগুলি তাদের থেকে মৌলিক ফারাক রাখে।

Advertisement

তবে তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, মোদী-অমিত শাহদের এ সব কথাতে আর মানুষ বেকুব বনবে না। মানুষ ওঁদের চিনে গিয়েছে। নরেন্দ্র মোদী যে দুর্নীতিপরায়ণ সেটাও ধরতে পারছে জনতা। ফলে অমিত শাহ এ সব কুকথা বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রুখতে পারবেন না। বরং মোদী সরকারের বিরুদ্ধে প্রচার করতে এ মাসের শেষেই পঞ্জাবে যেতে পারেন তৃণমূল নেত্রী। আর উত্তরপ্রদেশ ভোটে বিজেপি-র বিরুদ্ধে শুধু প্রচার করা নয়, বিরোধী জোটে সামিল হয়ে প্রার্থীও দেবে তৃণমূল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.