Advertisement
E-Paper

‘দালালি’ নিয়ে দিনভর যুদ্ধে কংগ্রেস-বিজেপি

মহাষষ্ঠীর দিনে ‘রক্তের দালালি’ নিয়ে সরগরম রইল রাজধানী। কুস্তি শুধু উত্তরপ্রদেশকে নজরে রেখে নয়, সেনা অভিযান নিয়ে লোকসভা ভোটের ঘুঁটিও সাজাচ্ছে সব পক্ষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা,

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৪৪

মহাষষ্ঠীর দিনে ‘রক্তের দালালি’ নিয়ে সরগরম রইল রাজধানী। কুস্তি শুধু উত্তরপ্রদেশকে নজরে রেখে নয়, সেনা অভিযান নিয়ে লোকসভা ভোটের ঘুঁটিও সাজাচ্ছে সব পক্ষ।

তাই কাল যেই না রাহুল গাঁধীর মুখ থেকে ‘জওয়ানদের রক্তের দালালি’ শব্দ বেরিয়েছে, সেটি লুফে নিতে ঝাঁপালেন অমিত শাহ। কারণ একটাই। এর আগে সনিয়া গাঁধীর ‘মউত কা সওদাগর’ মন্তব্যের পর নরেন্দ্র মোদী গুজরাতে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট নিয়ে জিতে এসেছিলেন। লোকসভার আগে সনিয়া গাঁধীরই ‘জহর কি খেতি’ মন্তব্যের পর বিপুল সংখ্যা নিয়ে দিল্লির কুর্সিতে বসেছেন মোদী। আর এ বারে রাহুলের ‘রক্তের দালালি’ হুঙ্কারকে লোকসভা পর্যন্ত জিইয়ে রেখে ফের ক্ষমতায় ফিরে আসার সুযোগ দেখছে মোদী-শাহ জুটি। রাহুলের পক্ষে সাফাই দিয়ে কপিল সিব্বল আজ যতই বোঝানোর চেষ্টা করুন, ‘‘শব্দ নয়, রাহুলের ভাবনা বুঝুন।’’ নাছোড়বান্দা বিজেপি আরও বেশি আঁকড়ে রাখতে চাইছে ‘রক্তের দালালি’ মন্তব্য। আর একে অপরের বিরুদ্ধে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ শানাতে গিয়ে হারিয়ে গেল সেনার কৃতিত্বটাই।

অমিত শাহ সাংবাদিক সম্মেলনে রাহুলকে তুলোধোনা করে বললেন, ‘‘দালালি শব্দটি ওঁর প্রিয় হতে পারে। বফর্স থেকে কয়লা, টুজি-র দালালি উনি কাছ থেকে দেখেছেন।’’ ক’দিন আগে উত্তরপ্রদেশের সফরে রাহুল ‘আলুর কারখানা’র কথা বলে বিপক্ষের হাসির খোরাক হয়েছিলেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে বিজেপি সভাপতি এ দিন বলেন, ‘‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের মতো বড়সড় বিষয়ে মাথা না-ঘামিয়ে রাহুল বরং আলুর কারখানায় নজর দিন।’’ সনিয়া গাঁধীকেও কটাক্ষ করে অমিত শাহ বললেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর স্বাস্থ্য বেশ ভালোই আছে, তিনি দশমীতেই লখনউ যেতে পারেন।’’ অমিতের পাল্টা জবাব দিতে কংগ্রেসের কপিল সিব্বল বললেন, ‘‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক সেনারা আগেও করেছে। তাদের কাজ নিয়ে শাসক দলের বুখ বাজানোর কারণ থাকতে পারে না। সেনাদের বরং তাদের কাজটা ঠিক ঠিক ভাবে করতে দেওয়া হোক।’’ তিনি বলেন, ‘‘জেল খাটা, খুনি, নির্বাসনে যাওয়া ব্যক্তিদের থেকে দেশপ্রেম শিখতে হবে? জইশ-ই-মহম্মদ তো বিজেপির তৈরি!’’ এই কথার জবাবে আরও একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘‘অমিত শাহের বিরুদ্ধে একটিও মামলা নেই। চার্জ গঠনই হয়নি। কংগ্রেস কি ভুলে গেল, প্রতারণার মামলায় সনিয়া-রাহুল এখন জামিনে রয়েছেন?’’

তাঁর ‘দালালি’ শব্দ ব্যুমেরাং হচ্ছে দেখে আজ অসুস্থ জয়ললিতাকে দেখতে যাওয়ার আগে রাহুল টুইট করে স্পষ্ট করেন— তিনি সেনার পাশেই রয়েছেন। কিন্তু সেনার কৃতিত্ব নিয়ে রাজনীতি করা, পোস্টার দিয়ে প্রচারের পক্ষে নন।

বিজেপির তাতে অবশ্য কিছু এসে গেল না। কাল প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিজেপির মঞ্চে যে ভাবে সেনা অভিযানের উদযাপন করেছেন, তাতেই স্পষ্ট হয়েছে— বিজেপি এ নিয়ে রাজনীতি করবেই। আজ সেটাই বুক ঠুকে অমিত শাহ জানিয়ে দিলেন, ‘‘সেনার সাফল্য ও প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তি নিচুতলা পর্যন্ত প্রচার করা হবে। সেনা অভিযান নিয়ে সকলেই গর্বিত। কংগ্রেসের গর্ব হচ্ছে না কেন?’’ অমিতের পাল্টা প্রশ্ন, ৭১-এর যুদ্ধের পর কংগ্রেস নেতারা বুক চাপড়াতে পারলে, এখন নরেন্দ্র মোদীকে কৃতিত্ব দিতে আপত্তি কোথায়?

সিব্বল আজ বোঝানোর চেষ্টা করেন, ২০১৩ সালে কোনও সেনার ছবি, নাম নিয়ে রাজনৈতিক প্রচার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তাতেও শেখেনি বিজেপি। আর বিজেপি নেতা রবিশঙ্করের বক্তব্য, লোকসভায় ৪৪টি আসনে নেমে এসেও কংগ্রেসের শিক্ষা হয়নি। এ বারে ২৪-এ নেমে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন রাহুল গাঁধী। a

Amit Shah dalali
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy