E-Paper

বিহারে ১৬০ পারের লক্ষ্য বাঁধলেন শাহ

বিহারে বিধানসভার মোট আসন ২৪৩টি। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য দরকার ১২৩ আসন। পাঁচ বছর আগে সেখানে এনডিএ জয়ী হয়েছিল ১২৫ আসনে।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৬:০৫
বিজেপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কৌশল-বৈঠকে অমিত শাহ। বিহারের সমস্তিপুরে।

বিজেপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কৌশল-বৈঠকে অমিত শাহ। বিহারের সমস্তিপুরে। নিজস্ব চিত্র।

বাংলায় এর আগে বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির জন্য প্রকাশ্যেই আসনের লক্ষ্য ঘোষণা করে দিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। কোনও বারই লক্ষ্যপূরণ হয়নি! এ বার বিহারের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এনডিএ-র জন্য ১৬০ আসন পার করার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দিলেন অমিত শাহ।

বঙ্গে বিধানসভা ভোট ২০২৬ সালে। তার আগেই বিহার দখলে রাখার লক্ষ্যে এ বার কোমর বেঁধে নেমেছে বিজেপি শিবির। এক দিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিহারের জনতার জন্য একের পর এক প্রকল্প ঘোষণা করছেন, অন্য দিকে সংগঠনের হেঁশেল সামলানোর ভার নিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ। কলকাতায় পুজো উদ্বোধন সেরে তিনি গিয়েছিলেন বিহারে। এই যাত্রায় দু’দিনে বেতিয়া ও চম্পারনে ১০টি, সমস্তিপুরে ৮টি এবং অররিয়ায় ১০টি সাংগঠনিক জেলার বিজেপি নেতা-কর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী কৌশল ঠিক করার বৈঠক করেছেন শাহ। সেখানেই তাঁর বার্তা, বিহারে ১৬০-এর বেশি বিধানসভা আসন জয়ের লক্ষ্যে ঝাঁপাতে হবে এনডিএ-কে। প্রধানমন্ত্রী মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের ‘দুর্নীতিমুক্ত, উন্নয়নমুখী কাজে’র বার্তা নিয়ে প্রতি মহল্লায়, বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছতে হবে বিজেপি-সহ এনডিএ-র শরিক দলের নেতা-কর্মীদের।

বিহারে বিধানসভার মোট আসন ২৪৩টি। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য দরকার ১২৩ আসন। পাঁচ বছর আগে সেখানে এনডিএ জয়ী হয়েছিল ১২৫ আসনে। তবে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হয়েছিল তেজস্বী যাদবের আরজেডি। গত বছর লোকসভা নির্বাচনে অবশ্য রাজ্যের মোট ৪০টি আসনের মধ্যে বিজেপি এবং জেডি(ইউ) ১২টি করে আসন জিতেছে। এ বার ভোটার তালিকার বিশেষ আমূল সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে বিতর্ক এবং রাহুল গান্ধীর তোলা ‘ভোট চুরি’র অভিযোগের আবহে এনডিএ-কে নির্বাচনে বিরোধীদের চেয়ে অনেকটা এগিয়ে রাখতে চেয়ে লক্ষ্যমাত্রা বাঁধছেন শাহ। যে কারণে তিনি গত বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনে পিছিয়ে থাকা এলাকায় দলের নেতাদের ৫ থেকে ১০% (অঞ্চল ভিত্তিতে) ভোট বাড়ানোর নির্দেশ দিচ্ছেন।

শাহের এই উদ্য‌োগের পাশাপাশিই বিহারের জন্য ৪৫ জনের প্রচার কমিটি তৈরি করেছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পটনায় গিয়ে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সেখানে ছিলেন বিহারে বিজেপির নির্বাচনী পর্যবেক্ষক, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষও। পরে ধর্মেন্দ্র গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশের কাছে। সঙ্গে ছিলেন জেডি(ইউ)-এর জাতীয় কার্যনির্বাহী সভাপতি সঞ্জয় কুমার ঝা এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধরিও। সূত্রের খবর, ধর্মেন্দ্র দিল্লি ফিরে শাহের সঙ্গেই আলোচনার প্রেক্ষিতে বিহারে এনডিএ-র আসন-রফা চূড়ান্ত করে ফেলতে পারেন।

এ বারের বিহার সফরে বিজেপি তথা এনডিএ-র জন্য নির্বাচনী প্রচারের রূপরেখাও ঠিক করে দিয়েছেন শাহ। কর্মিসভায় তিনি বলেছেন, কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা এসআইআর নিয়ে হইচই করছে। অথচ ওই প্রক্রিয়ায় বৈধ কোনও ভোটারের নাম বাদ যায়নি। শাহ ফের দাবি করেছেন, এক জনও অনুপ্রবেশকারীকে তাঁরা রাজ্যে এবং দেশে থাকতে দেবেন না। এসআইআর নিয়ে পাল্টা বক্তব্যের পাশাপাশিই সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প, মহিলাদের জন্য প্রকল্প, পরিকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে প্রচার ধারালো করতে পরামর্শ দিয়েছেন শাহ। কর্মিসভায় তাঁর দাবি, অতীতে কংগ্রেস দুর্নীতিতে জড়িয়েছে, আর লালুপ্রসাদ তো বিহার ‘লুট’ করেছেন! লালুর সময়ে বিহারে মাথাপিছু রোজগার ছিল ৮ হাজার টাকা, তা এখন ৬৫ হাজার হয়েছে। শাহের দাবি, কেন্দ্রে মোদী ও বিহারে নীতীশ ‘দুর্নীতিহীন শাসন’ উপহার দিয়েছেন।

বিজেপির বিহার রাজ্য সভাপতি দিলীপ জায়সওয়ালের মতে, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে কৌশল ঠিক করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কর্মীরাই বিজেপির ‘মালিক’, তাঁরাই নির্বাচনে জয় আনেন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bihar Amit Shah

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy