কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।
আন্তর্জাতিক মাদক পাচার পথে অবস্থিত হওয়ায় এবং একই সঙ্গে ধরপাকড় বাড়ায় গুজরাতে বেশি মাত্রায় মাদক উদ্ধার হচ্ছে বলে জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর দাবি, নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মাদক উদ্ধারের প্রশ্নে সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। সেই কারণে মোদী সরকার আসার আগের আট বছরে যেখানে ৭৬৮ কোটি টাকার মাদক উদ্ধার হয়েছিল সেখানে গত আট বছরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার মাদক উদ্ধার হয়েছে এ দেশে।
গত জুলাই মাসে গুজরাতের মুন্দ্রা বন্দরে প্রায় তিন হাজার কিলোগ্রাম হেরোইন উদ্ধার হয়েছিল, যার দাম ছিল ৩৫০ কোটি টাকা। ভারতের ইতিহাসে অন্যতম বৃহত্তম মাদক উদ্ধার বলে একে দাবি করে থাকে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)। সেখানেই শেষ নয়। তার পরেও একাধিকবার গুজরাতের মুন্দ্রা বন্দর-সহ একাধিক স্থান থেকে মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। তার পর থেকেই কেন প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর রাজ্য থেকেই বার বার মাদক উদ্ধার হচ্ছে— তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। সামনেই গুজরাতের বিধানসভা নির্বাচন। ভোটে মাদক উদ্ধারের বিষয়টি বিরোধীদের রাজনৈতিক প্রচারের হাতিয়ার করতে পারে সেই আশঙ্কায় আজ গুজরাতের গান্ধীনগরে এনসিবি-র একটি অনুষ্ঠানে সাফাই দেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, “মাদক পাচারের ক্ষেত্রে যে আন্তর্জাতিক ‘রুট’ রয়েছে তাতে গুজরাত রয়েছে। যে হেতু রাজ্যে মাদক উদ্ধারের প্রশ্নে সরকার তথা এনসিবি তৎপর, তাই একাধিক স্থানে তা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।” রাজ্য প্রশাসনের মদতে নারকোটিক্স কন্ট্রোলের কর্মীরা যে ভাবে মাঝ সমুদ্রে ধাওয়া করে পাচারকারীদের আটক করেছেন, তাতে গুজরাতের বিজয় রূপাণী সরকারের ভূমিকারও প্রশংসা করেন শাহ। তিনি বলেন, “মাদকের নেশা ঘুণ পোকার মতো। দেশের তরুণ সমাজকে ভিতর থেকে নষ্ট করে দেয়। তেমনি মাদক থেকে আসা বেআইনি অর্থ সন্ত্রাসবাদী কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে। এ হল দ্বিমুখী অস্ত্র, যা এক দিকে তরুণ প্রজন্মকে সর্বনাশের পথে ঠেলে দেয় তেমনি সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপকে মদত দেয়। সরকার তাই ওই সমস্যাকে নিকেশ করতে বদ্ধপরিকর।”
জাতীয় ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী ২০১৭-২০১৯ সালের মধ্যে এ দেশে অতিরিক্ত মাত্রায় মাদক সেবনে ২,৩০০ জন মারা গিয়েছেন। আজ মাদক সমস্যা নির্মূল করতে দেশের সমস্ত রাজ্য প্রশাসনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে শাহ বলেন, “মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই এখন সন্ধিক্ষণে পৌঁছেছে। মাদক সমস্যাকে সামান্য অপরাধ হিসাবে যদি গণ্য করে গা-ছাড়া মনোভাব নেওয়া হয়, তা হলে এই লড়াইয়ে জেতা সম্ভব নয়। তাই প্রত্যেক রাজ্য প্রশাসনের একজোট হয়ে এই সমস্যা নির্মূল করতে এগিয়ে আসতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy