E-Paper

বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া স্টেশন, লাইনে হামলার আশঙ্কা রেলের

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পরে, দু’দেশের সম্পর্কে টানাপড়েন রয়েছে। পহেলগামে জঙ্গি-হানার পরে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় অশান্তির সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলি।

শান্তশ্রী মজুমদার

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:৫৬
পহেলগামে জঙ্গি হামলার পরে সতর্কবার্তা জারি হল উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলে।

পহেলগামে জঙ্গি হামলার পরে সতর্কবার্তা জারি হল উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলে। —ফাইল চিত্র।

পহেলগামে জঙ্গি হামলার পরে সতর্কবার্তা জারি হল উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলে। বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া স্টেশন, লাইনে নাশকতার আশঙ্কায় সোমবার উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের প্রধান নিরাপত্তা কমিশনার লিখিত নির্দেশিকা দিয়েছেন।

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পরে, দু’দেশের সম্পর্কে টানাপড়েন রয়েছে। পহেলগামে জঙ্গি-হানার পরে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় অশান্তির সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলি। রেল সূত্রের দাবি, এই পরিস্থিতিতে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল এলাকায় সীমান্ত লাগোয়া ট্রেন, স্টেশন এবং লাইনে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে রেল বোর্ড। এই প্রথম রেলের সমস্ত কর্মীদের উপরে পড়েছে নজরদারির দায়িত্ব। ট্রলি দিয়ে নিয়মিত লাইন যাচাইয়ের নির্দেশও এসেছে।

উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের প্রধান নিরাপত্তা কমিশনার কে আরুল যোথি বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে যা বলার, জনসংযোগ আধিকারিক বলবেন।’’ মুখ্য জনসংযোগআধিকারিক কপিঞ্জল কিশোর শর্মা বলেন, ‘‘বাংলাদেশ নিয়ে চিন্তা রয়েছে। পহেলগামের পরে রেল বোর্ডও চাইছে, নিরাপত্তা বাড়াতে। আমরা সে মতো পদক্ষেপ করছি।’’

উত্তরবঙ্গে এর আগেও রেলে নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। ২০০৬ সালে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ির মাঝে বেলাকোবা স্টেশনে বিস্ফোরণে মারা যান সাত জন। সন্দেহের তির ছিল আলফা জঙ্গিদের দিকে। ২০১৩ সালেও ক্যারন এবং বানারহাট স্টেশনের মাঝে ডায়না নদীর সেতুর উপরে রেললাইনের ২২ ফুটের একটি ‘টাই অ্যাঙ্গেল রড’ উধাও হয়ে যায়। সেনাবাহিনীকে নিশানা করে নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) স্টেশনে বোমা বিস্ফোরণও হয়েছে।

উত্তরবঙ্গে একাধিক স্টেশন বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে। এনজেপি থেকে বেলাকোবা, রাঙাপানি স্টেশনগুলি তিন-দশ কিলোমিটারের মধ্যে হলেও হলদিবাড়ি, রাধিকাপুর, মালদহের সিঙ্গাবাদ (এখন বন্ধ) একদম সীমান্তে অবস্থিত। আলুয়াবাড়ি রোড, দাসপাড়া পাঞ্জিপাড়া, বালুরঘাটের মতো স্টেশনগুলি পাঁচ-ছয় কিলোমিটারের মধ্যে। মাথাভাঙ্গা, তুফানগঞ্জ গঙ্গারামপুর ১০-১৫ কিলোমিটারের মধ্যে।

এ রকম এলাকায় রেলের গ্যাংম্যান থেকে শুরু করে চালক, বাণিজ্য বিভাগের বুকিং কর্মীদেরও সন্দেহজনক ব্যক্তি এবং ঘটনার উপরে নজর রাখা, নিরাপত্তাকর্মীদের ট্রলি দিয়ে লাইন পাহারা এবং নজরদারিতে সক্রিয় হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রেল রক্ষী বাহিনী সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদানে নানা ইঙ্গিত জোরাল হয়েছে। বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে অসমের বদরপুর স্টেশন দিয়ে নিয়মিত রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঘটছে বলে খবর। বাংলাদেশে অস্থিরতার পরে বহু বাংলাদেশি নাগরিক ভারতে অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন। উত্তরবঙ্গের ‘চিকেন’স নেক’ নিয়ে নিরাপত্তার ঝুঁকি সব সময় থাকে। এই প্রেক্ষিতে পহেলগামের হামলা আশঙ্কা বাড়িয়েছে রেলের।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Pahalgam Terror Attack Pahalgam Incident

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy