Advertisement
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বন্‌ধে জবাব ক্ষুব্ধ কাছাড়ের

রেল প্রতিমন্ত্রী রাজেন গোঁহাইয়ের মন্তব্যের প্রতিবাদে কাছাড় বনধ শান্তিপূর্ণ ভাবে শেষ হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, শতাধিক অবরোধকারীকে আটক করা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলচর শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:৫৫
Share: Save:

রেল প্রতিমন্ত্রী রাজেন গোঁহাইয়ের মন্তব্যের প্রতিবাদে কাছাড় বনধ শান্তিপূর্ণ ভাবে শেষ হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, শতাধিক অবরোধকারীকে আটক করা হয়।

কংগ্রেস ও এসইউসিআই পৃথক ভাবে এই বনধের ডাক দিয়েছিল। উভয় সংগঠনের পক্ষ থেকে বনধ ১০০ শতাংশ সফল বলে দাবি করা হয়েছে। এসইউসিআই নেতা সুব্রত নাথের অভিযোগ, বাংলা ভাষা নিয়ে কংগ্রেসের বনধ ডাকার অধিকার নেই। তাঁদের আমলেই বার বার ভাষাসেনানীদের গুলি করে মারা হয়েছে। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পার্থরঞ্জন চক্রবর্তী তাঁদের স্থানীয় ইতিহাস পড়ে দেখতে পরামর্শ দেন। তাঁর দাবি, সরকারে যাঁরাই থাকুক, কংগ্রেসের তরফ থেকে সেই সময় কাছাড়ে প্রতিবাদ করা হয়েছে।

বনধে যে ব্যাপক সাড়া মিলেছে, তা স্বীকার করেছেন বিজেপি-র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক রাজদীপ রায়ও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘স্পর্শকাতর বিষয় বলে আমরা সক্রিয় বিরোধিতায় যাইনি।’’ রাজদীপবাবু বরাকবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘‘বরাকে অসমিয়া ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার কোনও অভিপ্রায় সর্বানন্দ সরকারের নেই। আর তা সম্ভবও নয়।’’ রাজেন গোঁহাই যে অহেতুক এই মন্তব্য করেছেন, সে কথা জানিয়ে রাজদীপবাবু বলেন, ‘‘১৯ ডিসেম্বর দলের কোর কমিটির সভা ডাকা হয়েছে। তাতে দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রামলালও উপস্থিত থাকবেন। রাজেনবাবুর মন্তব্য নিয়ে গুরুত্বের সেখানে চর্চা হবে। এর পরই দলের পক্ষ থেকে বিবৃতি প্রচারিত হবে।’’ রাজদীপবাবু ইঙ্গিত করেন, বৈঠকের পর রাজেন গোঁহাই তাঁর মন্তব্য প্রত্যাহার করে নিতে পারেন। তাঁর কথায়, ভাষাবিবাদের জেরে অসম বারবার টুকরো হয়েছে। বিজেপি নেতারা এ ব্যাপারে অবগত রয়েছেন। তাই ভাষা ইস্যুতে তাঁর দলের অবস্থান স্পষ্ট। রাজেনবাবু ব্যক্তিগত ভাবে যাই বলুন না কেন, তাঁকেও দলের অনুশাসন মেনে চলতে হবে বলে তিনি সতর্ক করে দেন।

রাজদীপবাবুর কথায় সন্তুষ্ট হতে পারেননি কংগ্রেস নেতারা। প্রাক্তন মন্ত্রী অজিত সিংহ জানতে চান, পূর্তমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য বা ডেপুটি স্পিকার দিলীপকুমার পাল নীরব কেন। যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি পাপন দেব জানিয়ে রেখেছেন, রাজেন গোঁহাই এখানে এলেই কালো পতাকা দেখাবেন তাঁকে। এসইউসিআই-র জেলা সম্পাদক শ্যামদেও কুর্মির দাবি, ভাষার আবেগে সাধারণ মানুষ আজকের বনধকে সর্বাত্মক করে তুলেছেন।

অফিসপাড়ায় বিক্ষোভ দেখানোর সময় আজ দুই সংগঠনকে মিলেমিশে একাকার দেখা যায়। পুলিশ সেখান থেকে কংগ্রেসের ৮০ জনকে গ্রেফতার করে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি কর্ণেন্দু ভট্টাচার্য, প্রাক্তন মন্ত্রী অজিত সিংহ, কিশোর ভট্টাচার্য, সঞ্চিতা আচার্য, রুমি নাথখ। আটক করা হয়েছিল এসইউসিআই-র ২০ জনকেও। রেল আগেভাগেই এই অঞ্চলে চলাচলকারী সমস্ত ট্রেন বাতিল করে দিয়েছিল। বনধ ডাকায় আজ চলেনি গাড়ি, রিকশাও। শহর-গ্রাম সর্বত্র দোকানপাট বন্ধ ছিল।

তবে আজ প্রচুর বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। বিয়েবাড়ির লোকেদের বিভিন্ন জায়গায় মুশকিলে পড়তে হয়। জেলা কংগ্রেসের কাছ থেকে অনেকে পাস নিয়েছিলেন। কিন্তু রাস্তাঘাটে সে সব পাস মানতে চায়নি অনেক অবরোধকারী। অভিযোগ, কেউ কেউ পাস ছিড়ে ফেলেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE