বেলগাভির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এনভি বরমানিকে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার চড় মারার চেষ্টার ঘটনা নিয়ে উত্তাল কর্নাটক। রাজ্য রাজনীতি সরগরম হচ্ছে ক্রমশ। মুখ্যমন্ত্রীর আচরণ নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। চড়কাণ্ড নিয়ে যখন উত্তাপ বাড়ছে রাজনীতিতে, সেই আইপিএস বরমানির ইস্তফা নিয়ে প্রশ্ন করতেই মেজাজ হারালেন মুখ্যমন্ত্রী।
নন্দী হিলসে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকের পর যখন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন সিদ্দারামাইয়া, তাঁকে এক সাংবাদিক আইপিএস আধিকারিকের ইস্তফা নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। তৎক্ষণাৎ মেজাজ হারিয়ে ফেলেন সিদ্দারামাইয়া। পাল্টা তিনি ওই সাংবাদিককে প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনি কি বিজেপির লোক? ওরা যখন চুপ করে রয়েছে, আপনি কেন এ সব প্রশ্ন তুলছেন?’’ ঘটনাচক্রে, আইপিএস আধিকারিককে চড় মারার চেষ্টার ঘটনায় যখন রাজ্য রাজনীতি উত্তাল, সেই সময় ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ করতে আসরে নামেন খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বর।
পরমেশ্বর যদিও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) বরমানির ইস্তফার বিষয়টি নিয়ে দাবি করেছেন, আইপিএস আধিকারিকের ইস্তফাপত্র গ্রহণ করা হবে না। পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, ‘‘এএসপি বরমানির সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা ওঁকে নতুন পদে বহাল করব।’’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, যে ঘটনা বরমানির সঙ্গে ঘটেছে, তা ইচ্ছাকৃত নয়। ঘটনাটি মুহূর্তেই ঘটে গিয়েছে। তাঁর সঙ্গে মন্ত্রী এইচকে পাটিলও কথা বলেছেন। তাঁর নতুন পদের বিষয়টিও আশ্বস্ত করা হয়েছে। আর এক মন্ত্রী এমবি পাটিল আবার দাবি করেছেন, ‘‘ঘটনাস্থলে আমি নিজেও ছিলাম। বলা হচ্ছে যে, পুলিশ আধিকারিককে চড় মারতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, এটা সম্পূর্ণ ভুল তথ্য। তিনি শুধুমাত্র সতর্ক করেছিলেন।’’
তবে রাজ্য কংগ্রেসের মন্ত্রী-নেতারা ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ করার চেষ্টা করলেও বিতর্ক কিন্তু থামছে না। বিজেপি ইতিমধ্যেই এই ঘটনার নিন্দা করে সিদ্দারামাইয়ার আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তাদের কটাক্ষ, মুখ্যমন্ত্রীর ঔদ্ধত্যের কারণেই এমন ঘটনা।
ঘটনার সূত্রপাত গত ২৮ এপ্রিল। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কংগ্রেসের একটি প্রতিবাদসভা ছিল বেলগাভিতে। সেখানে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। সভামঞ্চে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন বেলগাভির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বরমানি। মঞ্চের কাছেই বিজেপির কিছু মহিলা কর্মী বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। তাতে বিরক্ত হন মুখ্যমন্ত্রী। এমন পরিস্থিতির মুখে হঠাৎ মেজাজ হারিয়ে ফেলেন তিনি। মঞ্চে তখন দাঁড়িয়ে ছিলেন এএসপি বরমানি। তাঁর দাবি, মঞ্চ থেকেই তাঁর উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী চিৎকার করে জানতে চান, ‘‘এখানকার পুলিশ সুপার কে? বেরিয়ে যান এখান থেকে!’’ তার পরই তিনি চড় মারতে উদ্যত হন বলে অভিযোগ। এএসপি জানিয়েছেন, কোনও রকমে তাঁর চড় এড়িয়েছেন। কিন্তু যে ভাবে তাঁকে ভরা মঞ্চে অপমান করা হয়েছে, তা কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না।