—ফাইল চিত্র।
করমণ্ডল দুর্ঘটনার পর ন’দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও ভুবনেশ্বরের মর্গে বহু দেহ অশনাক্ত অবস্থাতেই পড়ে আছে। তার মধ্যে বেশ কিছু দেহের অবস্থা খুবই খারাপ। ফলে সময় যত গড়াচ্ছে দেহগুলি শনাক্তকরণে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে প্রশাসনকে। দেহগুলি চিহ্নিতকরণের জন্য সম্প্রতি প্রতিবেশী রাজ্যগুলির সঙ্গেও আলোচনা করেছে ওড়িশা সরকার। কিন্তু তার পরেও ওই দেহগুলি এখনও কেউ দাবি করেননি?
এমন পরিস্থিতিতে ওড়িশা সরকারকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক। সম্প্রতি মন্ত্রকের আধিকারিকেরা, রেলের শীর্ষ আধিকারিক, সাইবার সেল, সরকারি কর্তা এবং ইউআইডিএআই (আধার)-এর আধিকারিকরা একসঙ্গে বসে একটা সমাধানের রাস্তা খুঁজে বার চেষ্টা করেছেন। দেহগুলিকে শনাক্ত করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। সেই কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে।
কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হল? কী ভাবেই বা কাজে লাগানো হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে? প্রশাসন সূত্রে খবর, আধার কার্ড বিশেষজ্ঞদের মর্গে নিয়ে আসা হয়। তাঁরা মৃতদের বাঁ হাতের আঙুলের ছাপ নেন। ৬৫টি মৃতদেহের হাতের আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়।
তবে এখানেও আবার সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে আধার বিশেষজ্ঞদের। কারণ, এমন অনেক দেহ রয়েছে যেগুলির হাতের চামড়া নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ফলে আঙুলের ছাপ নেওয়া সম্ভব হয়নি। সে ক্ষেত্রে ‘সিম কার্ড ট্রায়াঙ্গুলেশন’ পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। এই পদ্ধতিকে রেলের ‘সঞ্চার সাথী’ পদ্ধতির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনিক আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, বেশ কিছু মৃতদেহের আঙুলের ছাপ নেওয়া যায়নি চামড়া নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে। ফলে আধার কার্ডের মাধ্যমে তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যাচ্ছে না। দুর্ঘটনার আগে যে সব যাত্রীর ফোন সক্রিয় ছিল এবং দুর্ঘটনার পরে যেগুলি নিষ্ক্রিয় বা বন্ধ হয়ে যায়, সেগুলি চিহ্নিত করবে ‘সিম কার্ড ট্রায়াঙ্গুলেশন’ পদ্ধতি। আর তার পর সংশ্লিষ্ট যাত্রীর মোবাইল কানেকশনের মাধ্যমে দেহ চিহ্নিতকরণের কাজ করা হবে।
কয়েক দিন আগেই রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ‘সঞ্চার সাথী’ পদ্ধতি চালু করেছেন। সেখানে দুর্ঘটনায় মৃতদের ছবির মাধ্যমে ফোন নম্বর চিহ্নিত করা হচ্ছে। এ ছাড়াও হাতের আঙুলের যে ছাপ নেওয়া হয়েছে, আধারের মাধ্যমে সেই সব দেহগুলিও চিহ্নিতকরণের কাজ চলছে। মোট ৪৪টি দেহ শনাক্ত করা গিয়েছে এই পদ্ধতিতে। এমনকি মৃত ব্যক্তিদের ঠিকানা এবং পরিবারের ফোন নম্বরও উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
সাইবার বিশেষজ্ঞ প্রশান্ত সাহু এক সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘সঞ্চার সাথী’ পদ্ধতি ব্যবহার করে ৬৫টি দেহ শনাক্তকরণের কাজ করা হয়। কিন্তু ৪৫টি দেহের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি সফল হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy