Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

জিএসটি নিয়ে বিকল্প পথের চিন্তা জেটলির

জিএসটি বিল পাশ করানোর চাপ রয়েছে শিল্পমহল, বণিকসভা এবং ব্যবসায়ীদের সংগঠনের তরফে। কিন্তু সংসদের চলতি অধিবেশনের মেয়াদ আর মাত্র পাঁচ দিন। জিএসটি-সহ অন্যান্য বিল পাশের সম্ভাবনাও প্রায় নেই বললেই চলে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৪:৩৩
Share: Save:

জিএসটি বিল পাশ করানোর চাপ রয়েছে শিল্পমহল, বণিকসভা এবং ব্যবসায়ীদের সংগঠনের তরফে। কিন্তু সংসদের চলতি অধিবেশনের মেয়াদ আর মাত্র পাঁচ দিন। জিএসটি-সহ অন্যান্য বিল পাশের সম্ভাবনাও প্রায় নেই বললেই চলে। এই অবস্থার জন্য আজ কংগ্রেসকে একহাত নিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। নাম না করে আঙুল তুললেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বা উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির দিকেও। সঙ্গে জেটলির হুঁশিয়ারি, ‘‘এই পরিস্থিতি চললে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে বা অর্থবিলের মাধ্যমে কাজ করতে হবে।’’

অর্থমন্ত্রী হয়ে জিএসটি চালুর জন্য ২০১৬-র ১ জানুয়ারির সময়সীমা স্থির করেছিলেন জেটলি। সেই সময়সীমার মধ্যে জিএসটি চালুর সম্ভাবনা প্রায় শূন্যে পৌঁছনোয় আজ বণিকসভা এবং ব্যবসায়ী সংগঠনের সভায় জেটলি বলেন, ‘‘গলার জোরে বিল পাশ আটকে দিয়ে কংগ্রেস শুধু সংসদে নয়, রাজ্যের বিধানসভাগুলির জন্যও খারাপ দৃষ্টান্ত তৈরি করছেন। ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না। রাজ্যসভার সভাপতির ‘চেয়ার’ থেকেও অধিবেশন চালানোর জন্য কোনও চেষ্টা করা হচ্ছে না।’’

এর আগে জমি বিলের ক্ষেত্রে অর্ডিন্যান্সের পথে হেঁটেছিল মোদী সরকার। তাতে আখেরে কোনও লাভ হয়নি। এখন রাজ্যসভায় সব বিল আটকে যাওয়ায় যত বেশি সম্ভব বিলকে অর্থবিলে পরিণত করার কথাও ভাবা হচ্ছে। সাধারণত কর বা সরকারি ব্যয় সংক্রান্ত এবং যে সব বিলে সরকারি কোষাগার থেকে ব্যয়ের প্রশ্ন রয়েছে, সেগুলি অর্থবিলের তালিকায় পড়ে। এই সব বিল শুধু লোকসভাতেই পেশ হয়। লোকসভায় পাশের পরে রাজ্যসভা তাতে সংশোধন করতে পারে না।
যে হেতু লোকসভায় মোদী সরকারের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে, তাই এই সম্ভাবনা উস্কে দিয়েছেন জেটলি।

ঘরোয়া আলোচনায় শিল্পমহল কিন্তু বলছে, মোদী সরকারের উচিত দোষারোপ না করে বিরোধী দলের সঙ্গে ঐকমত্য তৈরি করা। এবং এমন কিছু না করা যাতে বিরোধী দল চটে যায় বা হাতে অস্ত্র পেয়ে যায়। বিরোধীদের বিপাকে ফেলা না কি সরকারের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তা সরকারকেই ঠিক করতে হবে।

বণিকসভার অনুষ্ঠানে জেটলি অবশ্য বলেন, জিএসটি নিয়ে কংগ্রেস যে তিনটি দাবি তুলেছে, সেগুলির সমাধান করা যেতে পারে। শিল্পোন্নত রাজ্যগুলির জন্য ১ শতাংশ কর তুলে দিয়ে তাদের বোঝানো যায়, যা রাজস্ব ক্ষতি হবে, তা কেন্দ্র মিটিয়ে দেবে। সংবিধান সংশোধনে জিএসটি-র হার ১৮ শতাংশে বেঁধে রাখা সম্ভব না হলেও সাধারণ মানুষের ব্যবহৃত অধিকাংশ পণ্যে করের হার তার অনেক কম হবে। কেন্দ্র-রাজ্য বিবাদ মেটানোর জন্য পৃথক ব্যবস্থা জিএসটি পরিষদই তৈরি করতে পারে।

শিল্পমহলের মতে, জেটলির উচিত কংগ্রেসকে এই কথাগুলি বুঝিয়ে তাদের রাজি করানো। কারণ জিএসটি আটকে যাওয়ায় কংগ্রেসের কোনও ক্ষতি হচ্ছে না। মুখ পুড়ছে মোদী সরকারেরই। প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত বা অর্থবিলের সম্ভাবনাও বাস্তবে রূপায়ণ করা কঠিন বলেই শিল্পমহলের মত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE