জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, প্রাক্তন বিচারপতি অরুণ মিশ্র। ফাইল ছবি
নিজের খিদে মেটাতে গিয়ে অন্যের রুটি ছিনিয়ে নেওয়ার অধিকার যেমন কারও নেই, তেমনই কাউকে খুন করার অধিকারও কারও নেই বলে আজ মন্তব্য করলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, প্রাক্তন বিচারপতি অরুণ মিশ্র। উদয়পুরের হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গেই আজ বিচারপতি মিশ্র ওই মন্তব্য করেছেন বলে অনেকে মনে করছেন। এ দিকে উদয়পুর-সহ দেশ জুড়ে একের পর এক বিদ্বেষ-হত্যার ঘটনা ঘটা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী নীরব কেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
আজ থেকে দিল্লিতে দু’দিন ধরে মানবাধিকার সংক্রান্ত এক আলোচনাচক্রের আয়োজন করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। ভারতীয় দর্শন ও সংস্কৃতিতে মানবাধিকারের উপস্থিতির কথা বলতে গিয়ে আজ বিচারপতি মিশ্র বলেন, ‘‘বৌদ্ধধর্ম আমাদের অহিংসা শিখিয়েছে। বেদ, পুরাণ, মহাভারত কিংবা মনীষীদের বাণীতে বার বার অহিংসার বিষয়টি উঠে এসেছে। ভারত থেকে ৪৭টি দেশে বৌদ্ধধর্ম ছড়িয়ে পড়েছে।’’ এর পরে অধিকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘অধিকার মানে সহাবস্থান। কারও অন্য কাউকে খুন করার অধিকার নেই বা অন্য কারও রুটি কেড়ে নিয়ে খাওয়ার অধিকার নেই।’’ স্পষ্ট উল্লেখ না করলেও যে ভাবে গত পরশু উদয়পুরের এক দর্জিকে দুই যুবক পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হত্যা করেছে, বিচারপতি মিশ্র এ দিন তারই সমালোচনা করেছেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
এ দিকে, উদয়পুরের হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের ভূমিকার সমালোচনা করেছে কংগ্রেস। আজ দলের মুখপাত্র অলকা লাম্বা একটি বিবৃতিতে বলেন, ২০২০ সালে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের ৮৫৭টি ঘটনা ঘটেছে। কেবল দিল্লিতেই ওই ধরনের ঘটনা ঘটেছে ৫২০টি। যে প্রধানমন্ত্রী সব বিষয়ে সরব থাকেন, তিনি কিন্তু এ ক্ষেত্রে নীরব। এই ধরনের সংঘর্ষের প্রবণতা বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে ১৩টি বিরোধী দল প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখা সত্ত্বেও তিনি মুখ খোলেননি। অলকার কথায়, ‘‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বা অন্য কোনও কারণে প্রধানমন্ত্রীর এ ভাবে নীরব থাকাটা বিভাজনকারী শক্তির হাত শক্ত করছে, যা ক্রমশ দেশের সামাজিক ঐক্যকে দুর্বল করে দিচ্ছে।’’ ভোটে জিততে বিজেপি সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করছে বলেও সরব হয়েছে কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, দেশে চাকরি নেই। উন্নয়ন স্তব্ধ। অর্থনীতির বেহাল দশার মধ্যে নির্বাচন জিততে এখন বিজেপির ভরসা হল এই ধরনের সাম্প্রদায়িক অশান্তির মডেল। তার ফলে আন্তর্জাতিক স্তরেও ভারতের ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy