অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র।
দিল্লির বস্তিবাসীদের জমি বিজেপির নজরে পড়েছে বলে আজ দাবি করলেন আম আদমি পার্টির (আপ) আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরীওয়াল। তাঁর কথায়, ক্ষমতায় এলে বস্তিবাসীদের জায়গা কেড়ে নিয়ে সেখানে উচ্চবিত্তদের জন্য আবাসন বানাবে বিজেপি। পাল্টা অভিযোগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় আবাসন প্রকল্প যাতে দিল্লিতে না হতে পারে সে জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন কেজরীওয়াল ও তাঁর দল। সমস্ত বাধা সত্ত্বেও কেন্দ্র বস্তিবাসীদের জন্য আবাসন তৈরি করে দিয়েছে।’’
দিল্লির বস্তিবাসীদের ভোটের দিতে নজর রয়েছে আপ ও বিজেপি-উভয়েরই। তাই সম্প্রতি দিল্লির অশোক বিহার এলাকায় বস্তিবাসীদের হাতে ফ্ল্যাটের চাবি তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রতিশ্রুতি দেন ক্ষমতায় এলে ‘যেখানে ঝুপড়ি সেখানেই ঘর’ প্রকল্পের মাধ্যমে দিল্লির সমস্ত বস্তিবাসীর জন্য আবাসন গড়ে দেওয়া হবে। গত দু’টি বিধানসভা নির্বাচনে দিল্লির বিভিন্ন বস্তি এলাকার নিঃশর্ত সমর্থন পেয়েছিলেন কেজরীওয়াল। কিন্তু ভোটের আগে মোদী বস্তিবাসীদের হাতে ফ্ল্যাটের চাবি তুলে দেওয়ায় স্বভাবতই রাজনৈতিক ভাবে অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে আপ। এতে বস্তিবাসীদের ভোট বিজেপির দিকে ঝুঁকে পড়ার যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তা ঘরোয়া ভাবে মেনে নিচ্ছেন আপ নেতৃত্ব।
চাকা ঘোরাতে আজ পাল্টা আক্রমণের রাস্তা নিয়েছেন কেজরীওয়াল। আজ শুকুরবস্তি এলাকা পরিদর্শনের পরে তিনি সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‘বস্তিবাসীদের উন্নয়ন নয়, বিজেপির আসল নজর হল বস্তিবাসীদের জমির উপরে। বিজেপি প্রথমে ভোট নেবে, তারপরে জমি। বিজেপির লক্ষ্যই হল দিল্লি থেকে বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ করে দেওয়া। ’’ গত কাল দিল্লিতে ঝুপড়ি ও বস্তিবাসীদের নিয়ে একটি সম্মেলনের আয়োজন করেছিল বিজেপি। তাতে বক্তব্য রেখেছিলেন অমিত শাহ। সেই অনুষ্ঠানেও দিল্লির ঝুপড়িবাসীদের মাথায় পাকা ছাদ গড়ে দিতে মোদী সরকার বদ্ধপরিকর সেই দাবি করেন শাহ। আজ নিজের বক্তব্যে অমিত শাহের সেই বক্তব্যকেও আক্রমণ শানাতে ছাড়েননি কেজরীওয়াল। তিনি বলেন, ‘‘এত দিন ঝুপড়িবাসীদের নামে যে সব অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তা তুলে নেওয়া হলে এবং অমিত শাহ যদি আদালতে হলফনামা দিয়ে বলেন, বস্তির জমিতে যাঁরা থাকেন তাঁরা সকলেই বাড়ি পাবেন তাহলে আমি নির্বাচনেই লড়ব না। নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেব। আমি আশা করছি বিজেপি ওই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করবে।’’
কেজরীওয়ালের মতে, গত পাঁচ বছরে কেন্দ্র বস্তিবাসীদের জন্য মাত্র ৪,৭০০ ঘর তৈরি করেছে। অথচ, রাজধানীতে ৪০ লক্ষ বস্তিবাসী বাস করেন। কেন্দ্র যদি ওই গতিতে ঘর তৈরি করে, তাহলে সমস্ত বস্তিবাসীদের ঘর গিতে হাজার বছর সময় লেগে যাবে। পাল্টা জবাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ পুরি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় আবাস প্রকল্প যাতে দিল্লিতে রূপায়িত না হয় সে জন্য সব ধরনের চেষ্টা কেজরী করেছেন। ২০১৭ সালে বস্তির স্থানে আবাসন তৈরির প্রকল্প হাতে নেওয়ার জন্য দিল্লি সরকারকে সব ধরনের সাহায্য করতে কেন্দ্র চিঠি দেয়। কিন্তু আসল কাজ করার পরিবর্তে আপ নেতারা সমীক্ষা করা শুরু করে কালক্ষেপ করার কৌশল নেয়।’’ পুরির অভিযোগ, আপ বস্তিবাসীদের উন্নয়নের চেয়ে তাঁদের জমি অধিগ্রহণ করে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারে বেশি উদ্গ্রীব।
পাশাপাশি আপের বিরুদ্ধে আজ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরি করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠা নিয়ে সরব হয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। সম্প্রতি একাধিক বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী দিল্লি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। তাদের কাছে ভুয়ো আধার কার্ডও পাওয়া যায়। দিল্লি পুলিশ সেই ভুয়ো আধার কার্ড বানিয়ে দেওয়ার পিছনে আপ বিধায়ক জয় ভগবান উপকার ও মহিন্দর গয়ালের হাত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিস পাঠিয়েছে। আজ সেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়ে বিজেপি নেত্রী স্মৃতি ইরানি বলেন, ‘‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের আধার কার্ড তৈরি করে দিচ্ছেন আপের বিধায়কেরা। এই ঘটনা জাতীয় সুরক্ষার জন্য বিপদের। কেজরীওয়ালের উচিত বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করা। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য জাতীয় সুরক্ষা নিয়ে ছিনিমিনি করা মেনে নেওয়া যায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy