Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Narendra Modi

ভোটের বিহারে ভোজপুরি মোদী

বিহারি জাত্যভিমানকে কাজে লাগাতে মোদী এ দিন বক্তৃতার কিছু অংশ বলেছেন ভোজপুরিতে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:৪১
Share: Save:

ভোটের মুখে শিলান্যাসের বদলে তৈরি প্রকল্পের উদ্বোধন। পরিযায়ী শ্রমিকদের ক্ষতে প্রলেপ। উন্নয়নে পিছিয়ে থাকা রাজ্যের সামনে ঢালাও উন্নতির স্বপ্ন ফেরি। আর অবশ্যই বিহারি জাত্যভিমানকে জাগিয়ে তোলা। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে স্পষ্ট, মূলত এই ‘চার চাকায়’ সওয়ার হয়েই বিহারে মসনদ ধরে রাখার যুদ্ধে ঝাঁপাচ্ছে এনডিএ।

ভোটমুখী এই রাজ্যের জন্য একের পর এক প্রকল্প ঘোষণা করছেন প্রধানমন্ত্রী। ভোটের আগে পর্যন্ত এ ভাবে মোট ৪৫০০ কোটি টাকার প্রকল্প ঘোষণার পরিকল্পনা কেন্দ্রের। তারই অঙ্গ হিসেবে রবিবার ভিডিয়ো-অনুষ্ঠানে ৯০০ কোটি টাকার তিনটি প্রকল্প উদ্বোধন করলেন মোদী। পারাদীপ-হলদিয়া-দুর্গাপুর গ্যাস পাইপলাইনের দুর্গাপুর থেকে বিহারের বাঁকা পর্যন্ত অংশটি তার প্রথম। সেই সঙ্গে, দু’টি এলপিজি বটলিং কেন্দ্র। আগামী দিনে এই গ্যাস পাইপলাইনের পুরো কাজ শেষ হলে, তা বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ হবে বলেও তাঁর দাবি।

উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “বছর দেড়েক আগে এই প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলাম। আমি খুশি যে, এত তাড়াতাড়ি এত কঠিন প্রকল্পের এই অংশের কাজ শেষ করা গিয়েছে। ২০১৮ সালে বিহারের জন্য যে সওয়া লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছিল, তাতে পেট্রোলিয়াম ও গ্যাস সংক্রান্ত প্রকল্প ছিল ১০টি। এ দিন তার সপ্তমটির উদ্বোধন হল।” সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, এক প্রজন্ম কাজ শুরু করবে, আর এক প্রজন্ম শেষ করবে— সেই দিন অতীত। পরিযায়ী শ্রমিকদের বড় অংশের ক্ষোভের কথা মনে রেখে বারবার বলেছেন, ঘরবন্দির দু’মাসে কী ভাবে দরিদ্রদের পাশে দাঁড়াতে চেষ্টা করেছে তাঁর সরকার। উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদী হিসেব দিয়ে দেখিয়েছেন, কী ভাবে কঠিন সময়ে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষের জন্য ২১,৯৯৩ কোটি টাকা উপুড় করেছে কেন্দ্র।

কিন্তু বিরোধীদের কটাক্ষ, নিখরচার রেশনের হিসেব ধরে ওই অঙ্ক কেন্দ্র ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখাচ্ছে। আসলে দেওয়া যেত আরও বেশি। কারণ, খাদ্যসামগ্রীতে উপচে পড়ছে সরকারি গুদাম। সুশীল এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের দাবি, গত ছ’বছরে দরিদ্রদের জন্য মোদী যা করেছেন, তার জন্য আশীর্বাদ করবেন তাঁরা। বিপুল প্রাকৃতিক এবং শ্রম সম্পদ থাকা সত্ত্বেও, রাজনৈতিক কারণে বিহার পিছিয়ে থেকেছে বলে লালু-জমানার প্রতি ক্ষোভ উস্কে দিয়েছেন মোদী। দেখিয়েছেন, তাঁর আমলে কতগুলি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, আইআইটি, আইআইএম হয়েছে এই রাজ্যে। শুধু রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবহারই ২৩.৫% থেকে বেড়ে হয়েছে ৭৬.৯%। জোট রাজনীতির সূত্রে এ সবের মূল কৃতিত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকেই। কেন্দ্রের সহায়তার কথা বলেছেন নীতীশও।

বিহারি জাত্যভিমানকে কাজে লাগাতে মোদী এ দিন বক্তৃতার কিছু অংশ বলেছেন ভোজপুরিতে। বিহারি শ্রমিক এবং কাঁচামালের বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, গুজরাত, মহারাষ্ট্র-সহ বহু রাজ্যের উন্নয়নে বিহারের অবদান রয়েছে। দেড় হাজার কিলোমিটার হেঁটে বাড়ি ফেরার ক্ষোভ এতে প্রশমিত হবে কি না, উত্তর মিলবে ভোটযন্ত্রেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi Bihar Assembly Election BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE