Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কোষাগারে টান, বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তা, পরামর্শের সন্ধানে প্রধানমন্ত্রী নিজেই

নোট বাতিল এবং সরকারের আর্থিক নীতির সমালোচনা করায় এই মোদী এবং তাঁর দলের নেতা-মন্ত্রীরাই কয়েক মাস আগেও অর্থনীতিবিদদের একাংশকে তীব্র আক্রমণ করেছেন। এখন অর্থনীতিবিদ-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ চাইছেন মোদী নিজেই! বুধবারই এঁদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:২৭
Share: Save:

‘অচ্ছে দিন’-এর স্বপ্নপূরণ দূরের কথা, নরেন্দ্র মোদীর জমানায় কমতে শুরু করেছে আর্থিক বৃদ্ধি। অথচ লোকসভা ভোটের বেশি দেরি নেই। এই অবস্থায় এখন অর্থনীতিবিদদের উপদেশ চাইছেন মোদী।

অথচ নোট বাতিল এবং সরকারের আর্থিক নীতির সমালোচনা করায় এই মোদী এবং তাঁর দলের নেতা-মন্ত্রীরাই কয়েক মাস আগেও অর্থনীতিবিদদের একাংশকে তীব্র আক্রমণ করেছেন। এখন অর্থনীতিবিদ-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ চাইছেন মোদী নিজেই! বুধবারই এঁদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন তিনি। লক্ষ্য, অর্থনীতির হাল শোধরানোর উপায় সন্ধান। সরকারি ভাষায়, ‘আর্থিক নীতির ভবিষ্যতের রূপরেখা’।

বাজেটের আর এক মাসও বাকি নেই। তার ঠিক আগে প্রধানমন্ত্রী নিজেই অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন দেখে আরেকটি প্রশ্নও উঠেছে। তা হল, মোদীর কি তা হলে অরুণ জেটলির উপর আর আস্থা নেই? শুধু এই বৈঠক নয়, অর্থনীতির কথা তুলে ধরতে মোদী নিজেই জানুয়ারির শেষে দাভোসের ‘ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরাম’-এও যাচ্ছেন। যেখানে এত দিন জেটলি যেতেন। তা ছাড়া, বাজেটের আগে অর্থমন্ত্রীই প্রথামাফিক অর্থনীতিবিদ, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ বারও জেটলি তা করেছেন। তা হলে মোদীর এই বৈঠক কেন?

আরও পড়ুন: নজরে গ্রাম, আয়কর ছাড় নিয়ে ধন্দ

নীতি আয়োগ সূত্রের যুক্তি, এক বছর আগেও প্রধানমন্ত্রী এই ধরনের বৈঠক করেছেন। নভেম্বরে নোট বাতিলের পরে, ডিসেম্বরেই সেই বৈঠক হয়েছিল। সেটাই এই ধরনের প্রথম বৈঠক ছিল। কর্তারা বলছেন, বুধবারের বৈঠকে জেটলিও হাজির থাকবেন। মোদীর এই বৈঠক কোনও ভাবেই জেটলির প্রতি অনাস্থা নয়।

সরকারের তরফে বলা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের জন্য সারা দেশ থেকে বাছাই করা অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে নীতি আয়োগ। প্রধানমন্ত্রী দেশের ‘ইকনমিক পলিসি: দ্য রোড অ্যাহেড’ নিয়ে তাঁদের মতামত শুনবেন। সার্বিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য, কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন, নগরোন্নয়ন, পরিকাঠামো ও যোগাযোগ, কর্মসংস্থান এবং কারখানার উৎপাদন-রফতানি-শিক্ষা-স্বাস্থ্য। ২০২২-এ মোদীর ‘নতুন ভারত’-এর পরিকল্পনা নিয়েও মতামত চাওয়া হবে।

সরকারি পূর্বাভাস বলছে, চলতি অর্থ বছরে বৃদ্ধির হার ৬.৫ শতাংশে নামবে। অথচ সরকারের আশা ছিল, বৃদ্ধির হার ৭.৫ শতাংশ ছোঁবে। নোট বাতিল ও জিএসটি, মোদী সরকারের দুই সংস্কারেরই ধাক্কা লেগেছে বৃদ্ধিতে। বৃদ্ধির হার কমায় এক দিকে যেমন রাজকোষ ঘাটতির হিসেব গোলমাল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা, তেমনই রফতানির ঢিমে গতি চিন্তা বাড়াচ্ছে। গুজরাত ভোট বুঝিয়েছে কৃষির সঙ্কট এবং কৃষকের ক্ষোভ কতটা। কর্মসংস্থান নিয়ে প্রতিশ্রুতি পালনে চূড়ান্ত ব্যর্থতা তো আছেই। আছে মূল্যবৃদ্ধি-সহ একাধিক বিষয়। অর্থনীতির হাল ফেরাতে ঘাটতিতে লাগামের কথা ভুলে যাওয়া উচিত কি না, তা নিয়েও বিতর্ক তুঙ্গে। এমন অবস্থাতেই এই বৈঠক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE