Advertisement
E-Paper

সংখ্যাই প্রমাণ,মিথ্যে নয় কাজ খোয়ানোর কথা

আদৌ ঠিক বলছিলেন না নরেন্দ্র মোদী সরকারের মন্ত্রী ও হর্তাকর্তারা। দেখিয়ে দিল শ্রম মন্ত্রকের হিসেব!

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৭ ০৩:৫৩

আদৌ ঠিক বলছিলেন না নরেন্দ্র মোদী সরকারের মন্ত্রী ও হর্তাকর্তারা। দেখিয়ে দিল শ্রম মন্ত্রকের হিসেব!

দিনমজুরি করে যাঁদের পেট চলে, নোট বাতিলের ধাক্কায় তাঁদের রুটিরুজিতে টান পড়েছিল। কারণ মজুরি মেলে নগদে। কিন্তু নভেম্বরের পর থেকে বাজারে নগদই ছিল না। ফলে কাজকর্মই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। রোজগারের আশায় গ্রাম থেকে যাঁরা শহরে গিয়েছিলেন, নোট-বাতিলের ধাক্কায় কাজ হারিয়ে তাঁরাই আবার গ্রামে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। মোদী সরকার এ কথা মানতে চায়নি এত দিন। মন্ত্রীরা দাবি করে এসেছেন, এ সব নেহাতই শোনা গল্প। কোনও পরিসংখ্যান নেই। এ বারে কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের পরিসংখ্যানই জানিয়ে দিল, নোট-বাতিল পর্বে দেড় লক্ষের বেশি দিনমজুর কাজ হারিয়েছিলেন। কাজ গিয়েছে আরও প্রায় ৪০ হাজার আংশিক সময়ের কর্মীর ।

অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, যে সব কল-কারখানা নগদে বেতন দেয়, নগদের অভাবে তারা ৮ নভেম্বরের পরে শ্রমিকদের মজুরি মেটাতে পারেনি। বাধ্য হয়েই ওই সব শ্রমিকদের বিদায় করতে বাধ্য হয়েছিলেন কারখানা মালিকেরা।

শ্রম মন্ত্রকের অধীন শ্রমিক ব্যুরো গত বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর-এই তিন মাসের শ্রমিক সমীক্ষা প্রকাশ করেছে। এই সময়কালেই নোট-বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। কৃষি বাদে অর্থনীতির ৮টি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রের সমীক্ষা বলছে, ওই তিন মাসে ১ লক্ষ ৫২ হাজার অস্থায়ী শ্রমিক বা দিনমজুরের কাজ চলে গিয়েছিল। তার সঙ্গে আরও ৪৬ হাজার আংশিক সময়ের কর্মী কাজ খোয়ান ওই তিন মাসে।

কাজ গিয়েছে কত

আরও পড়ুন: গোয়েন্দা বিক্ষোভের মুখে রাজনাথ

শ্রম মন্ত্রকের কর্তারাও মানছেন, মূলত নোট-বাতিলের ধাক্কাই স্পষ্ট এই পরিসংখ্যানে। কারণ, স্থায়ী কর্মীদের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, মোটের উপর নিয়োগ বেড়েছে। যা থেকে স্পষ্ট, প্রয়োজন থাকলেও হাতে নগদ টাকায় রোজকার কর্মী নিয়োগ
করতে পারেনি কারখানাগুলি। মন্ত্রকের সমীক্ষা বলছে, কারখানা, নির্মাণ, বাণিজ্য, পরিবহণ, হোটেল-রেস্তোরাঁ, আইটি-বিপিও ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্র— কমবেশি ধাক্কা লেগেছে সব ক্ষেত্রেই। অস্থায়ী কর্মী সব থেকে বেশি ছাঁটাই হয়েছে কারখানাগুলিতে, ১ লক্ষ ১৩ হাজার। তথ্য-প্রযুক্তি এবং বিপিও ক্ষেত্রেও ২০ হাজার অস্থায়ী কর্মী কাজ হারিয়েছেন। নোট বাতিলের সব থেকে বেশি ধাক্কা লেগেছিল নির্মাণ শিল্পে। সেখানে স্থায়ী-অস্থায়ী, সব ধরনের কর্মীরাই কাজ হারিয়েছেন।

সরকারি তরফে অবশ্য যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, এই পরিসংখ্যান ডিসেম্বর পর্যন্ত। নভেম্বর-ডিসেম্বরে সমস্যা দেখা দিলেও পরে নতুন নোটের জোগান বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতিও স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। মানুষ আবার কাজে যোগ দিয়েছেন। গ্রাম থেকে আবার শ্রমিকেরা শহরমুখী হয়েছেন। কিন্তু লাভ যেটা হয়েছে, তা হল আগে যেখানে
নগদে মজুরি দেওয়া হতো, এখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা চেক বা ডিজিটাল মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির যুক্তি,
‘‘এই গোটা প্রক্রিয়ায় লাভ হল, বৈদ্যুতিন পদ্ধতিতে বেতন দেওয়া বেড়েছে। কিন্তু অর্থনীতিতে কোনও চাহিদা কমেনি। কোনও সঙ্কটও
তৈরি হয়নি।’’

Demonetisation Workers Unemployment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy