গুয়াহাটিতে কেএলও-র শান্তি কমিটির বৈঠক। শুক্রবার রাতে। নিজস্ব চিত্র
পৃথক কামতাপুর রাজ্যের দাবি তোলেননি ‘কেএলও’ (কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজ়েশন)-র প্রধান জীবন সিংহ, শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে এমনই দাবি করলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। তাঁর কথায়, ‘‘কীসের কামতাপুর! কীসের পৃথক রাজ্য! পৃথক কামতাপুর নিয়ে আলোচনা দূরের কথা, তেমন কোনও প্রস্তাব কেএলও-র তরফে আসেনি। মুখ্যসচিবকেও জিজ্ঞাসা করেছি, তিনিও জানান, দূর-দূরান্তেও এমন আলোচনার প্রস্তাব জমা পড়েনি।”
মায়ানমার থেকে ভারতে ঢোকার আগে, ১১ জানুয়ারি পাঠানো বিবৃতিতে জীবন দাবি করেন, অসমের মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যস্থতায় পৃথক কামতাপুর গঠনের দাবি নিয়ে সমাধান-সূত্রে রাজি হয়েছে কেন্দ্র সরকার। তাই মুখোমুখি আলোচনায় বসতে আসছেন তিনি। হিমন্ত বলেন, “জীবন এখন অসম সরকারের হেফাজতে আছেন। দীর্ঘদিন বাইরে ছিলেন তিনি। বিশ্রাম করুন। অসম ঘুরে দেখুন। রাজনৈতিক বক্তব্য কিছু থাকলে, তা নিয়ে ধীরে-সুস্থে আলোচনা হবে।”
অসমের মুখ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্যে বিস্মিত জীবন সিংহের গড়ে দেওয়া শান্তি কমিটি। কমিটির সদস্য বিশ্বজিৎ রায় বলেন, “যে দাবি নিয়ে জীবন সিংহ এত দিন লড়ছেন, শান্তি আলোচনার জন্য জঙ্গল ছেড়ে ভারতে এসেছেন, সে দাবি ত্যাগ করার প্রশ্ন নেই।’’ যদিও হিমন্তর কথায়, “রাজ্য গঠন বা কেএলও-র সঙ্গে শান্তি আলোচনা নিয়ে কথা বলবে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু অসম ভাগ হলে, নিশ্চয়ই আমায় জানানো হবে। তেমন হলে আমিও বড়ো, রাভা নেতাদের ডাকতাম। কোচ-রাজবংশীদের জন্যে কামতাপুর স্বশাসিত পরিষদ ইতিমধ্যে গড়ে দেওয়া হয়েছে। জীবন সিংহের সঙ্গে কোনও চুক্তি হলে, তা গোপনে হবে না। সকলকে আমন্ত্রণ জানিয়েই তা করা হবে।” উত্তরবঙ্গের প্রাক্তন এক কেএলও সদস্য বলেন, “অসমের মুখ্যমন্ত্রী এমন বলেন কী করে! এর পিছনে রাজনৈতিক চাপ থাকতে পারে।’’ কেএলও প্রাক্তনী তথা শান্তি কমিটির সদস্য অন্তেশ্বর অধিকারী বলেন, “পৃথক রাজ্যের দাবিও ছেড়ে দিলে, আলোচনার আর থাকবে কী!’’
জীবনের দুই মেয়ে এখনও আলিপুরদুয়ারের উত্তর হলদিবাড়িতে তাদের মামাবাড়িতে রয়েছে। তাদের এক আত্মীয় বলেন, “কে, কী বলেছেন জানি না। জীবন এই মুহূর্তে কোথায় রয়েছেন, নিশ্চিত নই। রাজ্য সরকার অনুমতি না দিলে, জীবনের মেয়েদের তাঁর কাছে পাঠানোর প্রশ্ন নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy