E-Paper

চিনিয়ে দিলেন হিমন্ত, বিপাকে পড়েছেন অসমের পাক বধূ

প্রেমের টানে ভারতের মহম্মদ আবেশকে ২০১৩ সালে বিয়ে করেছিলেন পাকিস্তানের রাবেয়া। ২০১৬ সালে ভারতে চলে আসেন তিনি। স্থানীয় সূত্রে খবর, আবেশ আদতে তেজপুরের বাসিন্দা হলেও তাঁর মা ছিলেন পাক নাগরিক।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৫ ১০:০৫
হিমন্তবিশ্ব শর্মা।

হিমন্তবিশ্ব শর্মা। —ফাইল চিত্র।

এত দিন সকলের চোখের আড়ালে ভারতীয় স্বামীর সঙ্গে সুখে সংসার করছিলেন পাকিস্তানি স্ত্রী। কিন্তু খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জনসভা করে সেই কথা চাউর করে দেওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছে ওই পরিবার। দেশছাড়া হওয়ার জুজু তো ছিলই, এখন ভয়, প্রতিবেশীরা তাঁদের কী চোখে দেখবেন!

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশ ছিল, দীর্ঘদিনের ভিসা থাকলেও ভারতে থাকা পাক নাগরিকদের খুঁজে বার করে ২৭ এপ্রিলের মধ্যে ফেরত পাঠাতে হবে। যে ১২টি ভিসাকে দেশত্যাগের নির্দেশের আওতায় আনা হয়েছিল তার মধ্যে রয়েছে— আগমনের সময়ে দেওয়া ভিসা, ব্যবসা ও চলচ্চিত্র সংক্রান্ত ভিসা, সাংবাদিকদের ভিসা, ট্রানজ়িট ভিসা, সম্মেলন সংক্রান্ত ভিসা, পর্বতারোহী, পড়ুয়া, দর্শনার্থী, পর্যটক, তীর্থযাত্রী এবং দলবদ্ধ তীর্থযাত্রীদের ভিসা। তবে, দীর্ঘমেয়াদি এবং কূটনৈতিক বা ‘অফিশিয়াল’ ভিসাধারীদের আপাতত অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রাথমিক ভাবে স্বস্তি পেয়েছিলেন করাচি-কন্যা রাবেয়া আয়ুষ। কিন্তু চারপাশের পরিস্থিতি নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন তিনি।

প্রেমের টানে ভারতের মহম্মদ আবেশকে ২০১৩ সালে বিয়ে করেছিলেন পাকিস্তানের রাবেয়া। ২০১৬ সালে ভারতে চলে আসেন তিনি। স্থানীয় সূত্রে খবর, আবেশ আদতে তেজপুরের বাসিন্দা হলেও তাঁর মা ছিলেন পাক নাগরিক। সেই সূত্রেই রাবেয়ার পরিবারের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ ও বিয়ে। ২০২২ থেকে ওই দম্পতি অসমের তিনসুকিয়ায় থাকছেন। সেখানকার একটি ভাড়াবাড়িতে স্বামী-স্ত্রী ও ছোট্ট সন্তানের সংসার। দীর্ঘমেয়াদি ভিসা নিয়েই রাবেয়া সংসার করছেন। ২০২১ সালে ভারতে আসার সময়েই তিনি বিবাহসূত্রে নাগরিকত্বের আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু এখনও সেই আবেদন বিবেচনাধীনই রয়ে গিয়েছে।

এর মধ্যেই ডিব্রুগড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচার চালাতে এসে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা ঘোষণা করে দেন, অসমে এক জনই মাত্র পাক নাগরিক দীর্ঘকালীন ভিসায় রয়েছেন। তাঁর আবাস তিনসুকিয়ায়। সেই সূত্র ধরেই সংবাদমাধ্যমে খবর রটে যায়। বাড়িতে হাজির হন সাংবাদিকেরা। ফলে জানাজানি হয়ে যায় পাড়াতেও। আবেশরা জানান, পহেলগাম-পরবর্তী ঘটনাক্রমে ত্রস্ত পরিবার নিজে থেকেই পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। হিমন্ত বলেছেন, ‘‘তিনসুকিয়া জেলার ওই পাক মহিলা স্থানীয় এক ব্যক্তির সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কের জেরে এখানে রয়েছেন। তিনি দীর্ঘমেয়াদি ভিসার জন্য আবেদন করেছেন এবং আমরা ভারত সরকারকে অনুরোধ করেছি, তাঁকে ফেরত পাঠানো উচিত কি না, তা যাচাই করা হোক। রাজ্য সরকার বিষয়টি নিয়ে সক্রিয় ভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।’’

এ দিকে পহেলগাম কাণ্ডের পরে ভারত-বিরোধী মন্তব্য করার অভিযোগে অসম পুলিশ এখনও পর্যন্ত দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্র-সহ ২৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। সকলেই বিচার বিভাগীয় হেফাজতে আছেন। হিমন্তের কথায়, ‘‘ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে কোনও মিল নেই। দু’টি দেশ শত্রু দেশ, এবং আমাদের সে ভাবেই থাকতে হবে। ভারতের বিপক্ষে ও পাকিস্তানের পক্ষে মন্তব্যকারীদের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইন প্রয়োগ করা হতে পারে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Pahalgam Incident Himanta Biswa Sarma Assam

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy