পাকিস্তানের চরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন ইউটিউবার জ্যোতি মলহোত্রা। সেই আবহে ফের লোকসভায় কংগ্রেসের সহকারী দলনেতা গৌরব গগৈয়ের ‘পাক যোগ’ নিয়ে সুর চড়ালেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। রবিবার হিমন্ত ফের দাবি করেছেন, গগৈয়ের সঙ্গে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের যোগ রয়েছে। তাদের আমন্ত্রণে নাকি পাকিস্তানেও গিয়েছিলেন গগৈ।
এর আগে গগৈয়ের স্ত্রী এলিজ়াবেথ কলবোর্নকে ‘আইএসআইয়ের এজেন্ট’ বলে অভিযোগ তুলেছিলেন হিমন্ত। পহেলগাঁও কাণ্ডের পর থেকে নতুন করে সেই বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন বিজেপি নেতা। রবিবার অসমের মুখ্যমন্ত্রী সংবাদসংস্থা এএনআইকে বলেন, ‘‘আইএসআইয়ের আমন্ত্রণেই পাকিস্তানে গিয়েছিলেন গগৈ। আমাদের কাছে তার প্রমাণ রয়েছে। সেখানে উনি প্রশিক্ষণও পেয়েছেন। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে তাঁকে এ সংক্রান্ত চিঠিও পাঠানো হয়েছিল। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অবিলম্বে কড়া পদক্ষেপ করা উচিত।’’ উল্লেখ্য, শনিবারই পাক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থান ব্যাখ্যা করার জন্য তৈরি সরকারি প্রতিনিধি দলে কংগ্রেস কর্তৃক মনোনীত চার সদস্যের তালিকা থেকে গগৈয়ের নাম বাদ দেওয়ার জন্য লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীকে আহ্বান জানিয়েছেন হিমন্ত। তার পর দিনই গগৈয়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে সরব হলেন তিনি।
আরও পড়ুন:
পহেলগাঁও কাণ্ডের পর নিজের এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) নাম না উল্লেখ করে একজন কংগ্রেস সাংসদকে নিশানা করে হিমন্ত লিখেছিলেন, ‘‘আপনি কি টানা ১৫ দিন পাকিস্তানে ছিলেন? আপনার স্ত্রী কি প্রতিবেশী দেশের এনজিও থেকে বেতন পান?’’ সাংসদের স্ত্রী এবং তাঁর সন্তানদের নাগরিকত্বের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন হিমন্ত। গত বেশ কয়েক মাস ধরেই লোকসভায় কংগ্রেসের সহকারী দলনেতার স্ত্রীর ‘পাক যোগ’ নিয়ে একটানা আক্রমণ শানিয়ে আসছে বিজেপি। ফলে পোস্টে কংগ্রেস নেতার নামপরিচয় উল্লেখ না-করা থাকলেও এটা স্পষ্ট ছিল যে, গগৈকে নিশানা করেই পোস্টটি করেছিলেন হিমন্ত।
প্রসঙ্গত, হিমন্ত গত ফেব্রুয়ারি মাসে গগৈয়ের স্ত্রী এলিজ়াবেথকে পাক এজেন্ট বলে অভিযোগ তোলার পর বিজেপিও একযোগে দাবি করে, এলিজ়াবেথ পাকিস্তানের পরিকল্পনা কমিশনের প্রধান উপদেষ্টা তৌকির শেখের অধীনে ইসলামাবাদে কাজ করেছেন। মার্কিন ধনকুবের জর্জ সোরসের একটি সংস্থার সঙ্গেও তাঁর যোগ রয়েছে। পাশাপাশি, এলিজ়াবেথ ভারতীয় নাগরিক নন বলেও অভিযোগ করে বিজেপি। যদিও সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে গৌরব বলেন, ‘‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’ সে সময় গগৈয়ের স্ত্রীকে ‘পরিকল্পিত’ আক্রমণের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন কংগ্রেস নেতারাও। এ বার পাক-চরবৃত্তির অভিযোগে হরিয়ানার ইউটিউবার জ্যোতির গ্রেফতারির পর ফের গগৈ-বিতর্ক নতুন করে উস্কে দিলেন হিমন্ত।