E-Paper

মমতাকে ফের আক্রমণে হিমন্ত, পাল্টা তৃণমূলের

অল বিটিসি মাইনরিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের নেতা মইনুদ্দিন আলি সম্প্রতি হুমকি দিয়েছিলেন, সমস্ত বাংলাভাষী মুসলমান জনগণনায় তাঁদের মাতৃভাষা হিসেবে ‘অসমিয়া’র বদলে ‘বাংলা’ লিখলেই অসমিয়াভাষীরা সংখ্যালঘু হয়ে পড়বেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৫ ০৯:০২
হিমন্তবিশ্ব শর্মা।

হিমন্তবিশ্ব শর্মা। —ফাইল চিত্র।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অসম বিজেপির ভাষাভিত্তিক রাজনীতি নিয়ে সমালোচনা করার পরে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানালেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। সমাজমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে শর্মা লেখেন, “দিদি মনে রাখবেন, আমরা কিন্তু অসমে নিজেদের লোকেদের সঙ্গে লড়ছি না। সীমান্ত পেরিয়ে নিয়ন্ত্রণহীন মুসলিম অনুপ্রবেশ রুখতেই অসম সরকার কড়া পদক্ষেপ করছে। ওই অনুপ্রবেশ ইতিমধ্যেই জনসংখ্যার ভারসাম্যে আতঙ্কজনক পরিবর্তন ঘটিয়েছে। বেশ কিছু জেলায় হিন্দুরা এখন নিজেদের ভূমিতেই সংখ্যালঘু হয়ে পড়ার পথে। বরং আপনি ক্ষমতায় টিকে থাকার স্বার্থে বাংলার ভবিষ্যৎ ও জাতীয় অখণ্ডতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছেন।”

অল বিটিসি মাইনরিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের নেতা মইনুদ্দিন আলি সম্প্রতি হুমকি দিয়েছিলেন, সমস্ত বাংলাভাষী মুসলমান জনগণনায় তাঁদের মাতৃভাষা হিসেবে ‘অসমিয়া’র বদলে ‘বাংলা’ লিখলেই অসমিয়াভাষীরা সংখ্যালঘু হয়ে পড়বেন। তার জবাবে হিমন্ত বলেন, "ভাষাকে ব্ল্যাকমেলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। জনগণনার নথিতে বাংলাকে মাতৃভাষা হিসেবে লেখা হলে রাজ্যে বসবাসকারী বিদেশিদের সংখ্যা নির্ণয় করতেসুবিধে হবে।"

এই মন্তব্যকে ঘিরেই হিমন্তকে তৃণমূলের আক্রমণ শুরু হয়েছে।হিমন্ত মমতার উদ্দেশে লেখেন, “এ কোনও রাজনৈতিক পদক্ষেপ নয়, কঠিন বাস্তব। সুপ্রিম কোর্টও এই অনুপ্রবেশকে বাহ্যিক আগ্রাসন বলে স্বীকৃতি দিয়েছে। আমরা ভাষা বা ধর্মের ভিত্তিতে মানুষকে ভাগ করি না। অসমিয়া, বাঙালি, বড়ো, হিন্দিভাষী—সকলেই এখানে শান্তিপূর্ণ ভাবে সহাবস্থান করছেন। কিন্তু কোনও সভ্যতা টিকে থাকতে পারে না যদি সে নিজের সীমান্ত ও সাংস্কৃতিক ভিত্তি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়। অথচ আমরা যখন আমাদের ভূমি, সংস্কৃতি ও পরিচয় রক্ষায় সচেষ্ট তখন আপনি বাংলার ভবিষ্যৎকে বিপন্ন করে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের অবৈধ দখলদারিকে উৎসাহিত করছেন, ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে ধর্মীয়তুষ্টিকরণ করছেন এবং অনুপ্রবেশ নিয়ে নীরব আছেন।”

হিমন্ত যখন দাবি করছেন, তাঁর সরকারের পদক্ষেপ মূলত ওপার থেকে আসা বাংলাভাষী মুসলিমদের বিরুদ্ধে, তখনই আজ তৃণমূল ধুবুড়িতে সড়ক চওড়া করার নামে শতাব্দীপ্রাচীন কালী মন্দিরকে ভেঙে ফেলার পরিকল্পনা ঘিরে চলতে থাকা উত্তেজনার ভিডিয়ো তুলে ধরেছে। তাদের দাবি, অসমে স্থানীয় হিন্দু বাঙালিদেরও মন্দির রক্ষার দাবিতে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাতে হচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে, বিজেপির এই দমননীতি বাঙালি সমাজের কণ্ঠস্বর দমনের বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ।

তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব এক্সে হিমন্তকে ট্যাগ করে চ্যালেঞ্জ ছোড়েন, “২০০১ সাল থেকে জালুকবাড়ির বাঙালিদের ভোটে বিধায়ক নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন আপনি। আর এখন বাংলা শুনলেই আপনার মনে হয়, এরা বাংলাদেশি! তাহলে ফের 'বাংলাদেশি'দের ভোটে নির্বাচিত হতে যাবেন কেন? এ বার যোরহাটবা শিবসাগর থেকে লড়ে বিধানসভায় আসুন।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Himanta Biswa Sarma Mamata Banerjee Migrant Workers

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy