Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Assam flood

Silchar: বন্যার জল দোতলা ছুঁইছুঁই, শিলচরে ভাঙা বাঁধের ফাঁক গলে নদী ঢুকছে শহরে

অসমের দক্ষিণ প্রান্তের সবচেয়ে বড় শহর শিলচর। সেই শিলচরে গত ২৪ ঘণ্টায় গলাজলে ডুবেছে। বাসিন্দাদের দাবি, তাঁরা এমন বন্যা আগে দেখেননি।

শিলচরে এ ভাবেই বাসিন্দাদের উদ্ধার করছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।

শিলচরে এ ভাবেই বাসিন্দাদের উদ্ধার করছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২২ ১৫:৩২
Share: Save:

বৃষ্টি থেমেছে কিন্তু বিপদ কাটেনি অসমের। বরং গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্যের দক্ষিণে এক নতুন বিপদ ঘনিয়েছে।

অসমের দক্ষিণের বড় শহর শিলচর। সেই শিলচরে বরাক নদীর জল ঢুকতে শুরু করেছে হুড়মুড়িয়ে। শহরের একতলা বাড়ির ছাদ ছুঁয়েছে জল। জল বাড়তে দেখে মঙ্গলবার রাতভর জেগেই কাটিয়েছে শিলচর।

রাস্তায় গলাজল দাঁড়িয়েছিল মঙ্গলবার সকালেই। তবে শেষ ২৪ ঘণ্টায় পরিস্থিতি কতটা খারাপ হয়েছে, তা জানিয়েছেন শহরের বাসিন্দারা। নিরুপম দত্ত শিলচরের বাঙালি। বলেছেন, ‘‘আমরা যাঁরা দোতলা বাড়ির বাসিন্দা, তাঁরা এতদিন নিজেদের সৌভাগ্যবান মনে করতাম। কিন্তু কাল রাতে যখন জল বাড়ির একতলা ছাড়িয়ে দোতলার সিঁড়িতে উঠতে শুরু করল তখন ভয় পেয়েছি।’’ মঙ্গলবার রাতে দু’চোখের পাতা এক করতে পারেননি নিরুপমেরা। তাঁর স্ত্রী উদেষ্ণা দেবরায় ন’মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বাড়িতে বৃদ্ধা মা রয়েছেন। শেষে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর একটি দল উদ্ধার করে তাঁদের।

মঙ্গলবার সন্ধের পর থেকে বৃষ্টি আর হয়নি অসমে। তবে তার পরও জল নামেনি। অসমের একটি বাংলা সংবাদপত্রের সম্পাদক প্রণবানন্দ দাস শিলচরেই রয়েছেন। তার কথায়, ‘‘শহরটা কানায় কানায় টইটুম্বুর। একটি বাড়ি বা সরকারি ভবনকেও আর নিরাপদ বলা যাচ্ছে না।’’

কেন এই পরিস্থিতি অসমে! বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভৌগোলিক কারণেই শিলচর কিছুটা বন্যাপ্রবণ। বাটির মতো আকৃতি শিলচর শহরের। ফলে বৃষ্টি হলে জল জমে। তবে এ বার কারণ শুধু সেটিই নয়। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বরাক নদীর বাঁধ ভেঙেই এই দুর্দশা। ভাঙা বাঁধের ফাঁক গলেই বৃষ্টিতে ফুলেফেঁপে ওঠা নদীর জল ঢুকতে শুরু করেছে শহরে। রাতারাতি একতলা সমান জলে ডুবেছে অসমের দক্ষিণের বড় শহর শিলচর।

তবে এমন বন্যা আগে কখনও দেখেননি বলে দাবি করেছেন শিলচরের পুরনো বাসিন্দারাও। জয়দীপ বিশ্বাসের দাবি, ‘‘শিলচরে হঠাৎ হঠাৎ হড়পা বানও হয়। তবে শেষ বড় বন্যা দেখেছিলাম ১৯৮০ সালে। এই বন্যা তার চেয়েও ভয়ঙ্কর।’’

মঙ্গলবার রাত জেগে ঘরের আসবাবপত্র অন্যত্র সরিয়েছেন শিলচরেরই আরেক বাঙালি কুন্তল বণিক। পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে কুন্তল বলেছেন, ‘‘সন্ধের পর থেকেই ঘরের সমস্ত আসবাব আর গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র দোতলায় নিয়ে যেতে শুরু করেছিলাম। তবে আমি শহরের ২০ শতাংশ সৌভাগ্যবানদের একজন, যাদের একতলার মাথা ডোবা জল থেকে বাঁচতে দোতলায় ওঠার সুযোগ আছে অনেকেরই এই সুযোগ নেই।’’

পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে আপাতত উদ্ধার কাজে মন দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রের তরফে শিলচরে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর চারটি দল পাঠানো হয়েছে। ত্রাণশিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বন্যায় আটকে পড়া মানুষজনকে। তবে বাড়তে থাকা জলের পাশাপাশি আরও একটি সমস্যা মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই খাবার এবং পানীয় জল সঙ্কট তৈরি হতে শুরু করেছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন শহরে গত কয়েক দিনের পরিস্থিতির জেরে ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে মজুত রাখা দৈনন্দিন সামগ্রী। নেই মোবাইল নেটওয়ার্কও। অসম সরকার জানিয়েছে, তারা পুরো পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে তবে আপাতত উদ্ধার কাজেই গুরুত্ব দিচ্ছেন তাঁরা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

অন্য বিষয়গুলি:

Assam flood silchar Embankment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE