Advertisement
E-Paper

শিখ দাঙ্গার রায় অস্ত্র বিজেপির

নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পরে, ২০১৫ সালে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গড়ে শিখ দাঙ্গার ৬০টি মামলায় নতুন করে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত কাল সে রকম একটি মামলাতে এক অভিযুক্তকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে নিম্ন আদালত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:০১

পাঁচ রাজ্যে ভোটের মধ্যেই ১৯৮৪ সালের শিখ দাঙ্গা নিয়ে রায় আসতেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তেড়েফুঁড়ে নামল বিজেপি। আজ প্রথমে বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ সাংবাদিক বৈঠক করে ও পরে অরুণ জেটলি ব্লগের মাধ্যমে দাবি করলেন, কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতায় রয়েছে বলেই প্রায় ৩৫ বছরের মাথায় ন্যায়বিচার পেতে শুরু করলেন শিখরা। অথচ কয়েক দশক ধরে দোষীদের বাঁচাতেই ব্যস্ত ছিল কংগ্রেস। তা না হলে অনেক আগেই ন্যায়বিচার পেতেন ক্ষতিগ্রস্তরা। যা শুনে কংগ্রেসের পাল্টা প্রশ্ন, গুজরাত দাঙ্গায় জড়িতরা কবে শাস্তি পাবেন?

নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পরে, ২০১৫ সালে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গড়ে শিখ দাঙ্গার ৬০টি মামলায় নতুন করে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত কাল সে রকম একটি মামলাতে এক অভিযুক্তকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে নিম্ন আদালত। নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী নিহত হওয়ার পরে দেশ জুড়ে যে শিখ নিধন পর্ব শুরু হয়েছিল, সেই মামলাগুলিতে এই প্রথম কোনও অভিযুক্তকে ফাঁসির সাজা দিল আদালত।

স্বভাবতই ভোটের মরসুমে ওই রায়কে হাতিয়ার করার সুযোগ ছাড়তে চায়নি বিজেপি। দলের লক্ষ্যই হল, পাঁচ রাজ্যের শিখ ভোটারদের পাশে থাকার বার্তা দেওয়া। আজ তাই শিখ দাঙ্গার তদন্তে কংগ্রেসের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রবিশঙ্কর বলেন, ‘‘১৯৮৪ সালের পর থেকে কংগ্রেস দাঙ্গায় অভিযুক্তদের বাঁচানোর চেষ্টা করে গিয়েছে। একাধিক কমিশন গঠন করা হয়েছে। মারওয়া কমিশন কংগ্রেস নেতাদের ভূমিকার দিকে আঙুল তুলতেই তার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘প্রাক্তন বিচারপতি রঙ্গনাথ মিশ্রের নেতৃত্বাধীন কমিশনকে দিয়ে কংগ্রেসের পক্ষে রিপোর্ট দেওয়ানো হয়েছে। পুরস্কার হিসেবে রঙ্গনাথ মিশ্রকে প্রথমে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও পরে রাজ্যসভার পাঠায় কংগ্রেস।’’

শুরু থেকেই শিখ দাঙ্গায় যে ভাবে সজ্জন কুমার, কমলনাথের মতো নেতাদের নাম জড়িয়েছে, তাতে অস্বস্তিতে পড়ে কংগ্রেস। জেটলি ব্লগে লিখেছেন, ‘‘ইন্দিরা হত্যার পরে যারা ‘খুনের বদলা খুন’ চেয়ে পথে নেমেছিল, তাদের সাংসদ, মন্ত্রীও করেছিল কংগ্রেস। শিখ সমাজের মনে বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।’’ জেটলির দাবি, বাজপেয়ী সরকারের আমলে নানাবতী কমিশন ও পরে মোদী সরকার ‘সিট’ গড়ায় অভিযোগের দ্রুত ফয়সালা হচ্ছে। এরই মধ্যে অকালি দলের নেতা সুখবীর সিংহ বাদল অভিযোগ করেছেন, শিখ দাঙ্গার চক্রান্ত হয়েছিল রাজীব গাঁধীর বাসভবনে। সনিয়া গাঁধী ছিলেন তার সাক্ষী। বাদলের দাবি, তদন্তের জন্য সনিয়া ও রাহুল গাঁধীকে ডাকুক সিট। সনিয়ার নারকো টেস্ট করা হোক।

কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়ে মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেছেন, ‘‘এটি একটি আইনি প্রক্রিয়া। আদালতের রায়কে স্বাগত জানানো উচিত। কিন্তু আইনি প্রক্রিয়াকেও ভারসাম্য রেখে কাজ করতে হবে। বিচার ব্যবস্থার উপরে যাতে কোনও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ না হয়।’’ কংগ্রেস আজ প্রশ্ন তুলেছে, গুজরাতে দাঙ্গায় যে কয়েকশো মানুষ মারা গিয়েছিলেন, সেই ঘটনায় অপরাধীরা কবে শাস্তি পাবে? স্বভাবতই নিরুত্তর মোদীর দল।

Sikh Riot BJP Congress Assembly Elections
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy